“শৈলা পাতা” নামটা কি আপনার কাছে অপরিচিত বলে মনে হচ্ছে? আগে কখনো দেখেছেন কিংবা গ্রহণ করেছেন কি এর স্বাদ-গন্ধ?
শৈলা মূলত শীতকালীন একটি সুগন্ধযুক্ত পাতা। এর ব্যবহার ধনেপাতার ন্যায়। শৈলা বীজ দেখতে অনেকটা জিরার মতো। এর বীজের নাম শৈলা শজ। তবে ধনে শজের ন্যায় শৈলা শজ তরকারিতে ব্যবহার করা হয় না। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী জিরার সাথে শৈলা শজ ভেজাল মিশিয়ে বাজারে বিক্রি করে।
মজার ব্যাপার হলো এই শৈলা শজ বলতে পারেন সিরাজগঞ্জ জেলার বাসিন্দাদের একটা নিজস্ব প্যাটেন্ট করা সম্পত্তি। বৃহত্তর সিলেটের যেমন সাতকড়া, খুলনা-যশোর এর চুইঝাল, পাহাড়ীদের বাঁশের কোড়া, রংপুর-দিনাজপুরের মানুষের কাছে যেমন লাপাশাক ঠিক তেমনি সিরাজগঞ্জ বাসীর কাছে শৈলা শাক একটি অনন্য স্বাদের ও বৈশিষ্ট্যের একটা রান্নার উপাদান। সিরাজগঞ্জ জেলার পার্শ্ববর্তী জেলা সমূহ যেমন – পাবনা, বগুড়া, নাটোর, গাইবান্ধা এবং টাঙ্গাইলের কোনো কোনো এলাকায় সীমিত পরিসরে শৈলা পাতার চাষাবাদ হলেও দেশের অনেক জেলার মানুষ এর সাথে তেমন পরিচিত নন।
শৈলা পাতা ব্যবহার করা যায় বিভিন্ন তরকারি, নিরামিষ, ভর্তা ও ভাজিতে। শীতকালে মাষ কলাইয়ের ডাল শৈলা পাতা সহযোগে রাতে রান্না করে রেখে দিলে সকাল বেলা তা দই এর মতো জমে যায়। এই জমাট বেঁধে থাকা মাষ কলাইয়ের ডাল বাসি ভাতের সাথে খেতে কিযে মজা তা যারা কখনো খাননি তাদেরকে বলে বোঝানো যাবে না। শৈলা পাতা দিয়ে টাকি মাছের ভর্তা যেনো অমৃত। টক বরুই /কুল পাটায় আধা ছেঁচা করে লবণ-মরিচ আর কুচি করে কাটা শৈলা পাতা দিয়ে মাখিয়ে একবার খেলেই জীবনে কখনো ভুলতে পারবেন না তার স্বাদ। শৈলা পাতার গন্ধ সত্যিই অতুলনীয়।
ইতোমধ্যেই সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন হাট-বাজারে শৈলা পাতা পাওয়া যাচ্ছে। এখন দামটা বেশ চড়া। বর্তমানে ৩০০/টাকা কেজি। কিছু দিন পর দাম কমে যাবে। এই পাতা পাওয়া যাবে চৈত্র মাস পর্যন্ত।