কথায় আছে না- বৃক্ষ তোমার নাম কি? গাছ উত্তর দিয়েছিল-ফলেই পরিচয়। হ্যাঁ, কথাটি যতার্থই সত্য।
এখানে এই ছবির লম্বা গাছটিকে চেনে না এমন বাঙ্গালী কেউ আছে বলে মনে হয়না। এ গাছটির নাম তালগাছ। তাল গাছের বৈজ্ঞানিক নাম: Borassus flabellifer। ইংরেজি নামগুলি হলো doub palm, palmyra palm, tala palm, toddy palm, wine palm অথবা ice apple। এটি এশিয়া ও আফ্রিকার গ্রীষ্মকালীন একটি গাছ। এই গাছের ফলকেই তাল বলা হয়। আর ফলের নামেই গাছটির নাম ডাকা হয়। এরা এরিকাসি পরিবারের বরাসুস গণের একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ।এর আদিবাস মধ্য আফ্রিকা।
তাল গাছ পাম গোত্রের অন্যতম দীর্ঘ গাছ যা উচ্চতায় ৩০ মিটার বা ১০০ ফুট পর্যন্ত পৌছতে পারে। তালের পাতা পাখার মত ছড়ানো তাই বোরাসাস গণের পাম গোত্রীয় গাছগুলিকে একত্রে ফ্যান-পাম বলা হয়।
তাল ভারতীয় উপমহাদেশীয় অনেক অঞ্চলেরই জনপ্রিয় গাছ কারণ এর প্রায় সব অঙ্গ থেকেই কিছু না কিছু কাজের জিনিস তৈরী হয়, প্রায় কিছুই ফেলা যায় না।
তাল পাতা দিয়ে ঘর ছাওয়া, হাতপাখা, তালপাতার চাটাই, মাদুর, আঁকার পট, লেখার পুঁথি, কুণ্ডলী, পুতুল ইত্যাদি বহুবিধ সামগ্রী তৈরী হয়।
তালের কাণ্ড দিয়েও বাড়ি, নৌকা ইত্যাদি তৈরী হয়।
তালের ফল এবং বীজ দুইই বাঙালি খাদ্য। তালের ফলের ঘন নির্যাস থেকে তাল ফুলুরি তৈরী হয়। তালের বীজও খাওয়া হয় লেপা বা “তালশাঁস” নামে। তাল গাছের কাণ্ড থেকেও রস সংগ্রহ হয় এবং তা থেকে গুড়, পাটালি, মিছরি, তাড়ি (একপ্রকার চোলাই মদ) ইত্যাদি তৈরি হয়। তালে রয়েছে ভিটামিন এ, বি ও সি, জিংক, পটাসিয়াম, আয়রন ও ক্যালসিয়াম সহ আরো অনেক খনিজ উপাদান। এর সাথে আরো আছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও এ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান। তবে তাল কেনার সময় নরম তাল কেনা উচিত। কারণ বেশি পাকা তাল হজম করতে সমস্যা হয়।