সববন্ধ(লকডাউন):
দেশে দিন দিন সংক্রমণ ও মৃত্যুতে নতুন নতুন রের্কড সৃষ্টি করছে করোনা ভাইরাস। সরকারঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউনের প্রথম দিন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বেশ কড়াকড়ি ছিল। দ্বিতীয় দিন থেকে পাল্টে গেছে লকডাউনের চিত্র। লকডাউনে সরকারি নির্দেশনা মানা হচ্ছে কি না, দেখতে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনায় বের হলে দোকানপাট সব বন্ধ হয়ে যায়, ইউএনও চলে গেলে আবার বেশির ভাগ দোকানপাট খুলে ব্যবসা করেন দোকানিরা। কমলগঞ্জে চলমান লকডাউন এখন শুধুই কাগজে-কলমে। বাস্তবে এর কোন কার্যকরিতা দেখা যাচ্ছে না। কমলগঞ্জের বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে শারীরিক দুরত্ব, মুখে মাস্ক পরে বের হওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনাগুলো মানার ক্ষেত্রে সর্বত্র অবহেলা দেখা গেছে।
লকডাউনের ষষ্ঠ দিনে সোমবার কমলগঞ্জ উপজেলার ভানুগাছ বাজার, শমশেরনগর, মুন্সীবাজারসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মুখে মাস্ক পরার নির্দেশনা থাকলেও অনেক মানুষ এটিকে বাড়তি ঝামেলা মনে করেন। অপ্রয়োজনে বাইরে বের না হওয়ার নির্দেশনা থাকলেও স্বাভাবিক সময়ের মতোই লোকজন ঘোরাফেরা করছেন। রাস্তায় ইজিবাইক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলছে। এসব যানে স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই নানা অজুহাতে চালকেরা যাত্রী নিয়ে চলাচল করছেন।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত খোলা রাখার কথা থাকলেও কোথাও কোথাও রাত ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা থাকছে। অধিকাংশ লোকজন প্রশাসন ও পুলিশের গাড়ি দেখলে মাস্ক বের করে মুখে পরে নেন। পুলিশ চলে গেলে মুখোশটি খুলে আবার খুলে রাখেন।
আবার কিছু কিছু দোকানী ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে দোকানের দরজা অর্ধেক খোলা রেখে মধ্যরাত পর্যন্ত ব্যবসা পরিচালনার খবরও পাওয়া গেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রবাদির দোকানের পাশাপাশি কাপড়, কসমেটিক্স, সেলুনসহ অন্যান্য দোকানগুলো খোলা থাকতে দেখা গেছে। এছাড়া, অধিকাংশ লোক পুলিশের গাড়ি দেখলেই মাস্ক বের করে পড়ে নেয়, পুলিশ চলে গেলে মাস্কটি আবার খুলে রাখেন। একি অবস্থা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রবাদি ছাড়া অন্যান্য দোকানগুলোরও। পুলিশ বাজারে প্রবেশের পূর্বে গাড়ির সাইরেন বাজিয়ে বাজারে প্রবেশ করে সেই সাইরেনের শব্দ শুনে দোকানের দরজা বন্ধ করে দেয় আবার পুলিশ চলে গেলে দিব্যি দোকান পরিচালনা করে। বিশেষ করে মুন্সীবাজার, রাজদিঘীরপাড় বাজার, শহীদনগর বাজার, হেরেঙ্গা বাজারসহ গ্রামাঞ্চলের হাটবাজারগুলো মধ্যরাত পর্যন্ত খোলা থাকে বিভিন্ন অজুহাতে।
তবে সচেতনমহল মনে করছেন করোনার এই পরিস্থিতিতে কমলগঞ্জের জনসাধারণ ও ব্যবসায়ীরা স্বাস্থ্যবিধি না মানায় উপজেলায় করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখনই যদি প্রশাসন সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তাহলে পরিস্থিতি আরো ভয়ানক রূপ ধারণ করতে পারে।
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) ইয়ারদৌস হাসান বলেন, সববন্ধের(লকডাউন) সরকারি বিধিনিষেধ কার্যকর করতে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ তৎপর আছে। এ বিষয়ে কমলগঞ্জের ইউএনও আশেকুল হক বলেন, মানুষ ও ব্যবসায়ীরা যদি নিজেরা স্বাস্থ্যসচেতন না হন, তাহলে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে জরিমানা করে কোনো লাভ নেই। কারণ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার পর আবারও দোকানিরা দোকান খোলেন। মানুষ কেনাকাটা করেন।
|