লন্ডন, কেমডেন শহরের দু’টি ভিন্ন জায়গায় একই রাতে চাকুর আঘাতে দু’টি তরুণ প্রান ঝড়ে গেল। পুলিশের অনুমান মাত্র এক ঘন্টার ব্যবধানে অঘটন দু’টি ঘটে। খবর কেমডেন জার্নালের।
২০শে ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার, রাতের দিকে এমন অঘটনটি ঘটে। কেমডেন শহরের উত্তর-পশ্চিম এলাকায় অবস্থিত ‘পেক ওয়াটার এস্টেট’ নামে খ্যাত আবাসিক এলাকার কাছে রাত ৮.৩০ মিনিটের সময় চাকু দিয়ে আক্রমনের প্রথম ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার আধা ঘন্টার মধ্যে আহতকে মৃত ঘোষণা করা হয়। খুনের এ ঘটনাটি এমন একটি জায়গায় ঘটে যেখানে গেল রোববার ১৯ বছর বয়সের একটি সোমালী ছেলেকে চাকুর আক্রমনে হত্যা করা হয়।
পুলিশ ছেলেটিকে এখনও নিয়মমাফিক সনাক্ত করতে পারেনি তবে স্থানীয়ভাবে ছেলেটি আব্দি করিম হাসান নামে পরিচিত ছিল বলে কেমডেন জার্নাল লিখেছে।
এ ঘটনারই প্রায় দেড় ঘন্টা পর আধা মাইলের মধ্যে ‘মল্ডেন রোড’ নামক সড়কের কাছে রাত অনুমান ১০টার দিকে চাকু দিয়ে আক্রমনের ২য় ঘটনাটি ঘটে। সাদিক আদম নামের একটি ছেলে এই আক্রমনে মারা যায়।
জার্নাল থেকে জানা যায়, গত সেপ্টেম্বরে কেমডেনের হেম্পষ্টীড রোডে মোহামেদ আদম নামের ২০ বছর বয়সী একটি ছেলে খুন হয়। নিহত সাদিক আদম এই মোহাম্মেদ আদমেরই ভাই ছিল। তাদেরই চাচাতো ভাই মোহামেদ আব্দুল্লাহী বিগত ২০১৩ সালে ২০ বছর বয়সে নিহত হয়েছিল।
কেমডেন জার্ণাল একই সময়ে আরও একটি অঘটনের খবর দিয়েছে তবে ওই খবরটি একই তারিখের কি-না সুষ্পষ্টকরে লিখেনি। তৃতীয় ওই চাকুমারার ঘটনাটি একই সময় রাত সাড়ে ৮টায় ঘটেছে। এই অঘটনে ১৬বছর বয়সের একটি ছেলে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। ঘটনাটি ঘটেছে বাঙ্গালী সমৃদ্ধ ‘সোমারস টাউন’ এর অলডেনহাম স্ট্রিটে।
ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছে চাকু আক্রমনকারীরা মুখবন্ধ পড়ে একটি ভেনে করে এসেছিল।
বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে আসা খবরে দেখা গেছে ওই রাতে কয়েকঘন্টার মধ্যে কেমডেনের ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় প্রায় ৬টি আক্রমন সংঘটিত হয়েছে।
ঘটনার আকষ্মিকতা ও দূর্ধর্ষতায় পুলিশ কেমডেন শহরে টহল বাড়িয়েছে এবং পুলিশকে বাড়তি ক্ষমতা দেয়া হয়েছে কোন কারণ না দেখিয়েই মানুষকে আটকানো, জিজ্ঞাসাবাদ এমনকি গ্রেপ্তার করার জন্য। এই ক্ষমতা ধারা ৬০ বলেই বিশেষভাবে পরিচিত এবং যুববয়সীদের মধ্যে কোনরূপ মারাত্মক সংঘাতময় আশংকাজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে এই ক্ষমতার প্রয়োগ করা হয়। এ সময় পুলিশ যেকোন মানুষকে যেকোন অবস্থায় সরে যাওয়ার নির্দেশ দিতে পারে।
কেমডেনে চাকুদিয়ে আক্রমনের আরো বহু অঘটনের খবর পুলিশ খতিয়ে দেখছে।
স্থানীয় সাংসদ স্যার কেয়ার স্টারমার কেমডেন জার্ণালকে বলেছেন, গতরাতে দু’টি তরুণ প্রানের মৃত্যু সত্যিই দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক। দুঃখভারাক্রান্ত পরিবারগুলি এবং এ অঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত সকলের এ দুঃসময়ে তিনি তাদের পাশেই আছেন বলে জানান। তিনি আরো বলেছেন, কেমডেনের রাস্তায় কোন ধরনের সংঘর্ষ ক্ষমা করা যাবেনা এবং আমাদের সমাজকে নিরাপদ রাখতে যা যা প্রয়োজন সবকিছুই আমরা করবো। আর এজন্যই আমি কেমডেন কাউন্সিলের মেট্রোপলিটান পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থার সাথে আমি একাট্টা হয়ে কাজ করে যাচ্ছি এবং আলোচনা করছি আমাদের করণীয় নিয়ে যা দিয়ে আমাদের সমাজকে পূর্ণ নিরাপত্তা দেয়া যায়।