1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
একজন হিশেন হেব্রে - মুক্তকথা
বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২২ পূর্বাহ্ন

একজন হিশেন হেব্রে

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : বৃহস্পতিবার, ২ জুন, ২০১৬
  • ১১১৬ পড়া হয়েছে
Hissene_Habre

হিশেন হাব্রে

হারুনূর রশীদ:
২রা জুন ২০১৬ইং সময় ১১টা ১০মিনিট:

হিশেন হাব্রে আফ্রিকার দেশ চাদ এর প্রাক্তন একনায়ক। একজন ছুন্নি মুসলমান। আশি নব্বুই এর দশকে তিনি চাদের একনায়কতন্ত্রী শাসক ছিলেন। অবশ্য তাকে এই ক্ষমতায় বসিয়েছিল ফ্রান্স ও আমেরিকা। বিনিময়ে অর্থনৈতিক সহযোগীতা, প্রশিক্ষন আর অস্ত্র সাহায্যের নামে দেশটিকে লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছিল সেই সময়।
এই গেল মে মাসে(২০১৬) নারী ধর্ষণ, রমণদাসবৃত্তি ও ৪০হাজার মানুষ হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন হাজতবাস দেয়া হয়েছে।
হিশেন হাব্রে’র জন্ম উত্তর চাদের ফায়া লারগু গ্রামের এক পশুপালক পরিবারে ১৯৪২ইংরাজীতে। তখন চাদ ফ্রান্সের উপনিবেশ ছিল। দাজা নামক একটি পশুপালন সম্প্রদায়ের আনাকাজা গোত্রের লোক এই হিশেন।
প্রাথমিক শিক্ষার পর উপনিবেশিক চাদ সরকারের এক ছোট্ট কর্মচারী হিসেবে চাকুরে জীবন শুরু করেন হিশেন। এখান থেকেই তার উত্থানের শুরু। কর্মক্ষেত্রে উপনিবেশিক উপরওয়ালাদের খুব প্রিয়পাত্র হয়ে উঠেন এবং পেরিসে লিখা-পড়ার একটি বৃত্তি জোগাড় করে নেন। ওখান থেকেই রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক সনদসহ আরো অন্যান্য কিছু সনদ ও “ডক্টরেট” সনদ প্রাপ্ত হয়ে ১৯৭১ সালে চাদে ফিরে আসেন।

চাদে ফিরে অল্পকিছুদিন সরকারী চাকুরী করার পর লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপলি সফরে গিয়ে “নেশনেল লিবারেশন ফ্রন্ট অব চাদ(ফ্রলিনাথ)” নামক বিপ্লবী দলে যোগদান করেন এবং দলের দ্বিতীয় ফ্রন্টের নেতা ‘গৌকনি ওয়েদেই’ এর সাথে দ্বৈত নেতৃত্বে নিয়োজিত হন। ১৯৭৪ এর ২১শে এপ্রিল, চাদের উত্তরাঞ্চলের টিবেস্টি এলাকার বারদাই শহর আক্রমণ ও মুক্তিপণের লক্ষ্যে ৩জন ইউরোপীয়ান নাগরীককে বন্দী করে নেয়ার ঘটনার মধ্য দিয়ে হাশেন আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টিতে আসেন। কারণ ঐ আক্রমণের সময়, পরবর্তীতে বন্দী, জনৈক জার্মান ডাক্তার ক্রিস্টপ স্টাওয়েন এর স্ত্রী এলফ্রিডে মারা যান। মুক্তিপণের বিনিময়ে ১৯৭৪ইং এর ১১জুন স্টাওয়েন মুক্তিপান। ফ্রান্স সরকারের হস্তক্ষেপের ফলে ভূবিজ্ঞানী ফ্রাঙ্কোজ ক্লস্ট্রে ১৯৭৭ইং সনে মুক্তিপান। ক্লস্ট্রে’র এই বন্দী ও মুক্তি ঘটনা আজও চাদের রাজনৈতিক মহলে “ক্লস্ট্রে এফেয়ার্স” নামে খ্যাত।

Coat_of_arms_of_Chad.svg

কোর্ট অব আর্মস অব চাদ

এইসব ঘটনাকে অনুসরণ করে ১৯৭৮সনে কর্ণেল ফেলিক্স মালুম এর সাথে জোটবদ্ধ হয়ে চাদের প্রধানমন্ত্রী হন হিশেন হেব্রে। অবশ্য এই নমুনার ক্ষমতার ভাগাভাগিতে হিশেন নিজেকে সন্তুষ্ট রাখতে পারেননি। ১৯৭৯ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে মালুম সৈনিকদের সাথে যুদ্ধ বাধান হিশেন হিব্রে ফলে এই বছরেরই নভেম্বর মাসে একটি নতুন জাতীয় সরকার গঠন করা হয় এবং তাকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নিযুক্ত করা হয়। কিন্তু তাতেও তিনি যুদ্ধ বন্ধ করেননি বরং চালাতে থাকেন। ১৯৮০ সালে হিশেন হেব্রে বাধ্য হয়ে প্রতিবেশী সুদানে নির্বাসিত হন কিন্তু তার সমর্থকেরা যুদ্ধ চালাতে থাকে। দীর্ঘ দু’বছর যুদ্ধের পর তার বিজয়মাল্য বরণের সময় আ্সে। ১৯৮২ সালের ৭ই জুন হিশেন হেব্রে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৯০ সালে পদচ্যুত হবার আগ পর্যন্ত তিনি ক্ষমতায় ছিলেন।
৯ বছরের এক দলীয় শাসনে তিনি ও তার সরকার বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী হিসেবে পরিচিত হন যদিও তিনি হাজার হাজার বিরুধী রাজনীতিকদের হত্যা ও নৃশংসতা মূলক কার্যকলাপের অভিযোগ অস্বীকার করেন। কিন্তু কোনকিছুতেই জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতকে সন্তুষ্ট করা যায়নি। শেষে ২০১২ সালে আন্তর্জাতিক আদালত তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাড় করাতে সেনেগাল সরকারকে নির্দেশ দেয় অথবা বিদেশে বিচারের লক্ষ্যে তাকে দেশ থেকে বহিস্কারের আদেশ দেয়।

Félix_Malloum

ফেলিক্স মাল্লোম

অবশেষে ১৯৯০ সাল ক্ষমতাচ্যুত হয়ে হেশেন হিব্রে সেনেগালে পালিয়ে যান। ২০০৫ সালে তাকে নজরবন্দী করা হয় এবং ২০১৩ সালে তাকে গ্রেপ্তার করে বিচারের কাঠগড়ায় দাড় করানো হয়। তার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ, নৃশংস নির্যাতন ও ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়। বলা হয়, তিনি ৪০হাজার বিরুধীদের হত্যা করেছেন এবং প্রায় ২ লক্ষ বিরুধীকর্মীকে শারিরীক নির্যাতন করেছেন। আন্তর্জাতিক সংস্থা “হিউমেন রাইটস ওয়াচ” তাকে আফ্রিকার পিনোচেট বলে আখ্যায়িত করে।
অনেক কাঠখড় পোড়ানোর পর অবশেষে ২০১২ সালের ডিসেম্বরে সেনেগালের সংসদ যুদ্ধাপরাধী হেশেন হেব্রে’র বিচারের জন্য একটি আন্তর্জাতিক আদালত গঠনের আইন পাশ করে। ঠিক করা হয়, বিচারক নিয়োগ দেবে আফ্রিকান ইউনিয়ন এবং আফ্রিকার যেকোন দেশ থেকে বিচারক নিয়োগ দেয়া যেতে পারবে। শেষ পর্যন্ত ২০১৩ সালের ৩০শে জুন সেনেগাল পুলিশ হেশেন হেব্রে’কে গ্রেপ্তার করে। ২০ জুলাই ২০১৫ সাল হেশেন হেব্রে আদালতে চিতকার করে গালিদেন-“আমেরিকার ভৃত্য, আফ্রিকার বেইমান, সাম্রাজ্যবাদীদের সামনে নতজানু হয়ে বিচার, পঁচে যাওয়া সেনেগালি রাজনীতিকদের বিচারের নামে প্রহসন ছাড়া আর কিছু নয়।” এর পর, হেব্রে’র আইনজীবীগন আদালতে অংশ গ্রহনে অস্বীকৃতি জানালে ২০১৫ সালের ২১শে জুলাই থেকে ৭ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হেব্রে’র বিচার স্থাগিত রাখা হয়।

এই গেল ৩০শে মে ২০১৬ সাল, “অসাধারণ আফ্রিকান চেম্বার”(extraordinary African Chambers) হেশেন হেব্রে’কে ৪০হাজার মানুষ হত্যার হুকুমদাতা, ধর্ষণ ও রমনদাসত্বের দোষে দোষী সাব্যস্ত করে আজীবন কারাবাসের রায় দেয়।
(হেশেন হেব্রে’র এই ইতিহাস তুলে ধরার পেছনে কিছু কথা পরে সংযুক্ত করা হবে।) উইকিপেডিয়া থেকে।

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT