1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
নাবালিকা ধর্ষন, থানা পুলিশ অভিযোগ আমলে না নেয়ায় এক মা'য়ের সাংবাদিক সম্মেলন - মুক্তকথা
বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৬ পূর্বাহ্ন

নাবালিকা ধর্ষন, থানা পুলিশ অভিযোগ আমলে না নেয়ায় এক মা’য়ের সাংবাদিক সম্মেলন

শিল্পাঞ্চলীয় প্রতিনিধি
  • প্রকাশকাল : বৃহস্পতিবার, ৩০ জুন, ২০২২
  • ৮৮৪ পড়া হয়েছে

গত সোমবার, ২৭ জুন ২০২২ সকাল সাড়ে ১১টায় শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের সিক্কা গ্রামের স্বামী পরিত্যাক্তা কর্মজীবী ও দরিদ্র মহিলা ফাহিমা আক্তার(৩৩) তার নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষন, অর্থ ও স্বর্ণালংকার আত্মসাৎ, সন্ত্রাসী হামলা ও হত্যার হুমকির অভিযোগে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেন।

উক্ত সম্মেলনে তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০১৪ সালে স্বামী আলতাফ হোসেন নিজামের সাথে তালাক সম্পন্ন হয়। এরপর নিরুপায় হয়ে একমাত্র কন্যা সন্তান শিশু আলিফা আক্তারসহ গ্রামে অবস্থিত বড় ভাই আব্দুল করিমের বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে অনেকটা মানবেতর জীবন যাপনের পর ২০১৭ সালে একমাত্র কন্যার ভরণপোষন ও সংসার পরিচালনার জন্য পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া কন্যা আলিফাকে বড় ভাইয়ের জিম্মায় রেখে ঢাকাস্থ একটি গার্মেন্টস এ চাকুরীতে চলে যান। প্রতি মাসে কন্যার ভরণপোষন ও লেখাপড়ার খরচ বাবদ ভাইকে টাকা পাঠাতে থাকেন।

ঢাকা যাবার পর থেকে ভাইয়ের ছেলে চাঁন মিয়া(২২) উনার নাবালিকা মেয়েকে প্রায় প্রতিদিনই উত্ত্যক্ত করতে থাকে। ব্যাপারটি উনার মেয়ে মামাকে জানালেও তিনি বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দেননি। একপর্যায়ে অতিষ্ট হয়ে আলিফা বিষয়টি মোবাইল ফোনে মা’কে জানালে তিনি শ্রীমঙ্গলে এসে মেয়ে আলিফা আক্তারকে ঢাকায় নিয়ে যান এবং বোনের বাসায় রেখে তাকে স্কুলে ভর্তি করেন। এ অবস্থায় ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে জীবন ও জীবীকার তাগিদে তিনি চাকুরী নিয়ে ওমান চলে যান।

তিনি আরও বলেন, মেয়ে আলিফার ভবিষ্যৎ ও বিয়ের কথা চিন্তা করে চাকুরীতে যাওয়ার পূর্বেই উনার ব্যবহৃত এক ভড়ি স্বর্ণের নেকলেস (মূল্য অনুমান ৮০ হাজার টাকা), এক জোড়া কানের দুল (মূল্য অনুমান ৪০ হাজার, ২টি গরু (মূলা ৮০ হাজার টাকা) ভাইয়ের কাছে গচ্ছিত রেখে যান। এছাড়াও এক বছরের প্রবাসে কস্টার্জিত অর্থ ২ লক্ষ ৫৮ হাজার টাকা ভাই আব্দুল করিমের কাছে সরল বিশ্বাসে প্রেরণ করেন।

২০২১ সালের নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে আলিফা বেড়ানোর উদ্দেশ্যে শ্রীমঙ্গল আসে। গ্রামে আসার পর মামাতো ভাই চাঁন মিয়া তাকে প্রেম নিবেদন করে এবং বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। আলিফা তাকে বলে ‘তুমি আমার মামাতো ভাই, তোমার সাথে কোনদিন সম্পর্কে জড়াবো না।’ ওই সালের ২৪ নভেম্বর বিকেলে আব্দুল করিমের বাসার সকল সদস্য পাশের গ্রামে বেড়াতে যায়। এ সময় আলিফাকে ঘরে রেখে যান। চাঁন মিয়া পরিবারের সবাইকে পাশের গ্রামে রেখে রাত আনুমানিক ১০ ঘটিকায় বাড়িতে ফিরে আসে এবং আলিফা আক্তারকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। মোবাইল ফোনে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে চাঁন মিয়া আলিফাকে হুমকি দিয়ে বলে, এই ঘটনা কাউকে জানালে সে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবে। ঘটনার পরপরই লোকলজ্জার ভয়ে আলিফা কাউকে কিছু না বলে দ্রুত ঢাকায় চলে যায় এবং মোবাইল ফোনে মাকে ঘটনাটি জানায়। মা ফাহিমা ওমান থেকে ঘটনাটি বড় ভাই আব্দুল করিমকে জানিয়ে বিচার প্রার্থী হলে তিনি এ নিয়ে দুশ্চিন্তা না করতে বলেন। ভাই তাকে এও প্রতিশ্রুতি দেন যে, তার ছেলের সাথে সামাজিকভাবে মেয়ের বিয়ে দেবেন।

তোমার মেয়ের চরিত্র খারাপ

থানা পুলিশ অভিযোগ আমলে না নেয়া

চলতি বছরের ২ জানুয়ারি বাধ্য হয়ে চাকুরী ছেড়ে ওমান থেকে দেশে চলে আসেন ফাহিমা। এসে ভাইয়ের সাথে দেখা করে বিয়ের বিষয়ে তার প্রতিশ্রুতির কথা বললে ভাই তাকে বলেন, তোমার মেয়ের চরিত্র খারাপ, তার সাথে ছেলের বিয়ে দিবেন না। ফাহিমা বিষয়টি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানালে ভাই ও ভাইয়ের ছেলেরা তাদের ল উপর চরমভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এ বিষয়ে ফাহিমা শ্রীমঙ্গল থানায় হাজির হয়ে অভিযোগ দায়ের করলেও থানা পুলিশ অভিযোগ আমলে না নেয়ায় তিনি বাধ্য হয়ে মৌলভীবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পিটিশন দায়ের করেন। পিটিশন নং ৩০/২০২২। মাননীয় বিচারক মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডিতে ন্যস্ত করেন। ইতোমধ্যে গত ২৪ এপ্রিল মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ফাহিমার মেয়ের ভাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। ডিএনএ টেস্টের জন্য নমুনা ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। এরইমধ্যে মামলার প্রধান আসামী ভাইয়ের ছেলে চাঁন মিয়া পালিয়ে বিদেশে চলে গেছে। এ মামলার স্বাক্ষী করা হয়েছে মেয়ে আলিফা আক্তার (ভিকটিম), ভাই আব্দুস শুকুর, ভাইয়ের স্ত্রী জায়েদা খাতুন, শাকিল মিয়া, রাসেল মিয়া ও হারিস মিয়াকে।

এখানে উল্লেখ্য যে, ফাহিমা দেশে আসার পর প্রথমে তার মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার জন্য খরচ বাবদ বড় ভাইয়কে বিশ্বাস করে আরও ১ লক্ষ টাকা তার কাছে গচ্ছিত রাখেন। যা জ্ঞাত রয়েছেন মা হামিদা বেগম, সিক্কা গ্রামের আব্দুর রউফের স্ত্রী ডলি বেগম এবং ঢাকা সাভারের জাহাঙ্গীর হোসেন কন্টুর পুত্র কাওছার আহমদ। পরে বড় ভাই তার প্রতিজ্ঞা থেকে সরে এলে ফাহিমা নিরুপায় হয়ে চলতি বছরের ২৮ মার্চ ভাইয়ের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে রেখে যাওয়া স্বর্ণালংকার ও নগদ ৩ লক্ষ ৫৮ হাজার ৪৯ টাকা ফেরত নেবার কথা বললে ভাই উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। তিনি প্রকাশ্য হুমকি দেন যে, এ বিষয়ে আর কোন কথা বললে তিনি আমাকে ও আমার মেয়েকে খুন করে লাশ গুম করে ফেলবেন। এ অবস্থায় নিরুপায় হয়ে বড় ভাই আব্দুল করিমকে আসামী করে সিনিয়র জুডিসিয়্যাল মেজিস্ট্রেট, ২নং আমলি আদালতে পিটিশন দায়ের করি। এটিরও তদন্ত চলছে।

ফাহিমার বড়ভাই গংদের বিরুদ্ধে মাননীয় আদালতে একাধিক পিটিশন মামলা দায়ের করার কারনে আব্দুল করিম ক্ষিপ্ত হয়ে ফাহিমার পরিবার ও মামলার স্বাক্ষীদের প্রকাশ্যে হুমকি দিতে থাকেন।
এ অবস্থায় গত ১৫ জুন সকাল আনুমানিক সাড়ে ১১টায় বড় ভাই আব্দুল করিম পুত্রদেরসহ ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দায়েরকৃত নারী ও নিত নির্যাতন দমন আইনে মামলার স্বাক্ষী মো. শাকিল মিয়ার বাড়িতে প্রবেশ করে মারাত্মক হাড়ভাঙা জখম করে। এ সময় শাকিল মিয়ার স্ত্রী রুবিনা আক্তার সন্ত্রাসীদের হাত থেকে স্বামীকে বাঁচাতে আসলে সন্ত্রাসীরা তাকেও পিটিয়ে আহত করে এবং তার কোলে থাকা ৪৫ দিনের শিশুকে ছিনিয়ে নিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। এতে তিনজনই গুরুতর আহত হয়। আহতদের মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ব্যাপারে আহত শাকিল মিয়ার শ্বাশুড়ি রুজিনা বেগম বাদি হয়ে শ্রীমঙ্গল থানায় মামলা দায়ের করেন।

ফাহিমা আরও বলেন, ভাই আব্দুল করিম এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি। এমতাবস্থায়, আমি ও আমার কন্যা এবং মামলার স্বাক্ষীদের জীবন নাশের হুমকিতে আতংকিত রয়েছেন। তিনি মেয়েকে ধর্ষণ, টাকা ও স্বর্ণালংকার আত্মসাৎ, স্বাক্ষীর উপর সন্ত্রাসী হামলা করেই তিনি সন্ত্রাসীরা ক্ষান্ত হননি। এখন মামলাগুলো প্রত্যাহার করতে আমাকে অব্যাহতভাবে হুমকি ধামকি ও ভীতি প্রদর্শন করে চলেছেন। আসামী চক্রের এ ধরণের হুমকিতে স্বাক্ষীসহ আমি, আমার মেয়ে, নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিনানিপাত করছি।
তিনি সাংবাদিকদের লেখনির মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT