মাত্র ২৪ বছর বয়সের সুমা। সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত তার ছবি দেখেই বুঝা যায় খুবই হাস্যোজ্জ্বল ভালবাসার মানুষ। মুখে ছিল তার সকল ভালবাসা উজার করে দেয়ার হাসি। চেহারার উজ্জ্বলতা আর শরীরের ভাব-ভঙ্গিতে ফুটে আছে মানুষকে ভালবাসার এক অনন্ত আকাঙ্খা। তালতো ভাইয়ের সাথে বিয়ে হয়ে সুমা আসেন লণ্ডনে। তাদের, আড়াই বছর ও ৪মাসের দু’টি সন্তানও রয়েছে। মায়াবী চেহারার সেই সুমার মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। হত্যার কারণ কিছুই এখনও জানা যায়নি।
সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা যায়, তাকে হত্যার পর সুটকেসে ভরে নদীতে ফেলে দেয়ার ১১ দিন পর মরদেহ উদ্ধার করেছে লণ্ডন পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার লন্ডনের টেমস নদী থেকে সুটকেসের ভেতরে রাখা সুমার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরাদেহ উদ্ধারের আগে সুমার স্বামী আমিনুর রহমানকে(৪৫) পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
সুমা বেগম সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামের মৃত ঠাকুর মিয়ার মেয়ে। লন্ডন পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানান, গত ৪ বছর আগে সুমা বেগমের তালতো ভাই ছাতক উপজেলার জাউয়া বাজার ইউনিয়নের ঘোড়াডুমবুর গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী আমিনুর রহমানের সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর স্বামীর সঙ্গে যুক্তরাজ্যে আসেন সুমা এবং পূর্ব লন্ডনে বসবাস শুরু করেন।
লন্ডন পুলিশ সংবাদ মাধ্যমকে জানায়, গত ৩০শে এপ্রিল সুমার স্বামী আমিনুর রহমানকে দুই শিশু সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় ঘুরাঘুরি করতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে জানায়। পুলিশ এসে আমিনুরকে জিজ্ঞাসা করলে, সে পুলিশকে বলে তার স্ত্রী সুমাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে আমিনুর পুলিশের খাতায় একটি সাধারণ নথিভুক্তি করান। এ থেকেই পুলিশ সুমাকে খুঁজতে শুরু করে।
এরমধ্যে সুমার স্বামী গা ঢাকা দিলে পুলিশের এতে সন্দেহ হয়। পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে আমিনুর পুলিশের কাছে তার স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করে জানায়, সুমার মরদেহ একটি সুটকেসে ভরে পূর্ব লন্ডনের রিভার লি নদীতে ফেলে দিয়েছে। টানা ১১দিন খোঁজার পর ফেলে দেয়া স্থান থেকে প্রায় ৬ মাইল দূরে টেমস নদী থেকে গত বৃহস্পতিবার সুটকেসের ভেতর রাখা সুমার মরা শরীর উদ্ধার করে পুলিশ। লন্ডন পুলিশ গণমাধ্যমকে জানান, বর্তমানে সুমার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে সুমার স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে বিচারকার্য শুরু হয়েছে।