মুক্তকথা: শনিবার, ১৫ই অক্টোবর ২০১৬।। ভারতের গোয়াতে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন তথা বিমস্টেক আউটরিচে যোগ দিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার সকালে সেখানে যাচ্ছেন।
নরেন্দ্র মোদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ভারতে এটি শেখ হাসিনার প্রথম সরকারি সফরও বটে।
বিমস্টেকের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে এই আঞ্চলিক জোটকে ঘিরেও বাংলাদেশের আগ্রহ ও প্রত্যাশা বিপুল – কিন্তু গোয়ার আউটরিচ থেকে ঠিক কী কূটনৈতিক অর্জনের আশা করছে তারা? এ নিয়ে কথা হয় ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলির সঙ্গে ।
উনিশ বছরেরও বেশি আগে ব্যাঙ্ককে বিমস্টেক নামে যে জোটের জন্ম, সেই বিমস্টেকের ‘বি’ ছিল বাংলাদেশ। শুরুর সময়কার নেতাদের মধ্যে আই কে গুজরাল বেঁচে নেই, চন্দ্রিকা কুমারতুঙ্গা সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে – আছেন শুধু শেখ হাসিনা।
ফলে গোয়ার বিমস্টেক আউটরিচে তার যোগদান আলাদা তাৎপর্য বহন করে, বলছিলেন হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলি ।
“ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন হচ্ছে ১৫ তারিখ। আর পরের দিন ১৬ তারিখ এই ‘আউটরিচ ইভেন্ট’। এই ‘ইভেন্টে’ বিমসটেক নেতাদের সাথে ব্রিকস নেতাদের সাক্ষাতের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে – যাতে তাদের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা হবে” – বলছিলেন মি. আলি।
“গতবার ব্রিক সামিট হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকায়। সে সময় অন্য আফ্রিকান দেশগুলোর নেতাদের সাথে ব্রিক নেতাদের পরিচয় করানোর জন্য একটি আউটরিচ ইভেন্ট রাখা হয়েছিল। এবার নরেন্দ্র মোদি ঠিক একই ব্যবস্থা রেখেছেন।”
সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলির কথায়, “বিমসটেকের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে কানেক্টিভিটি বা দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আন্ত:সংযোগ , বাণিজ্য সুগম করা, বিনিয়োগ এবং দুই অঞ্চলের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা।”
“আমাদের আশা যত শীগগির সম্ভব বিমসটেকের একটা শীর্ষ সম্মেলন করা – যা হবে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে।”
সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলি বলছিলেন, গোয়ার সম্মেলনের ‘সাইডলাইনে’ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথেও শেখ হাসিনার আলাদা করে একটি বৈঠক হবে, এবং তাতে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের নানাদিক নিয়ে কথাবার্তা হবে।
এ ছাড়া মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচি-ও গোয়াতে এই সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন, এবং তার সাথেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংক্ষিপ্ত বৈঠকের সুযোগ আছে – বলছিলেন মি. আলি।
তার কথায়, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সমুদ্রসীমানা নিয়ে যে সমস্যা ছিল তা সালিশের মাধ্যমে মোটামুটি নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। আর আছে রোহিঙ্গা সমস্যা তবে মিয়ানমার আগে যেমন ক্লোজড কিংডমের মতো ছিল – সরকারে পরিবর্তনের পর তা এখন ধীরে ধীরে উন্মুক্ত হচ্ছে।
“এশিয়ান হাইওয়ে এর আগে বাংলাদেশ পর্যন্ত গিয়েই শেষ হয়ে যেতো, এ ক্ষেত্রেও আমরা আশা করছি মিয়ানমারের পলিসিতে ধীরে ধীরে একটা পরিবর্তন হবে” – বলেন ভারতে বাংলাদেশের হাই কমিশনার।
সোজা কথায়, দক্ষিণ এশিয়া আর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে নতুন সেতুবন্ধের কাজ করবে বিমস্টেক ।
আর সদস্যদের মধ্যে যে সব ছোটখাটো দ্বিপাক্ষিক সমস্যা আছে সেগুলোর নিরসনেও অগ্রগতি হবে, গোয়ার সমুদ্রতটে বাংলাদেশের মূল প্রত্যাশা সেটাই।(বিবিসি বাংলা থেকে সংগৃহীত)