শ্রীমঙ্গল থেকে সৈয়দ ছায়েদ আহমদ।।মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে প্রতিবন্ধিছেলেকে হত্যার অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। এতে লিখিত বক্তব্য রাখেন কালাপুর ইউনিয়নের হাজীপুর এলাকার আব্দুল খালেক এর পুত্র তোফায়েল আহমেদ উজ্জল। গতকাল রোববার দুপুরে স্থানীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে উপজেলার ৫ নং কালাপুর ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের এলাকাবাসী এ অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়- বিগত ২৪ জুন হাজীপুর গ্রামে বিরোধপূর্ণ একটি যৌথ পুকুরে বাসন ধোয়াকে কেন্দ্র করে একই বাড়ির ২ পক্ষের মহিলাদের মধ্যে বিবাদের সৃষ্টি হয়। পরে পুরুষ সদস্যেদের মধ্যে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। এসময় জনৈক আরবেশ আলীর পুত্র আরিফুল ইসলাম নামে ১৭ বছরের এক প্রতিবন্ধি কিশোরকে হত্যা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, একই গ্রামে বিগত প্রায় ৩ মাস পূর্বে সঞ্জব আলী নামে পঞ্চাশোর্ধ এক ব্যক্তি খুন হন। নিহত আরিফুলের পিতা আরবেশ আলী সেই খুনের মামলার ১৪ নং আসামী হিসাবে জেল হাজত থেকে সম্প্রতি জামিনে বেরিয়ে আসে। জামিনে আসার পর থেকে আরবেশ আলী ও তার পক্ষের লোকজন প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে নানা প্রকার চেষ্টা চালায়। এক পর্যায়ে গত ২৪ জুন বিকেলে বাড়ির একটি যৌথ পুকুরে থালা বাসন ধোয়াকে কেন্দ্র করে ও মহিলাদের বিবাদের মতো তুচ্ছ ঘটনাকে কাজে লাগিয়ে আরবেশ আলী ও তার ভাই ইয়াকুত আলী প্রতিবন্ধি আরিফুলকে হত্যা করে সঞ্জব হত্যা মামলার বাদী পক্ষের আত্মীয়-স্বজনদের নামে মিথ্যা হত্যা মামলা দায়ের করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জনৈকা শিল্পী বেগম পুলিশের কাছে আরিফুল ইসলামকে তার চাচা ইয়াকুত আলী কর্তৃক আঘাত করার কথা জানিয়ে দেয়ায় তাকে ও তার পরিবারকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় এবং তার স্বামী জহর আলী কে মামলার আসামী করা হয়। এছাড়া যৌথ বাড়ির বিবাদের ঘটনায় এ হত্যা মামলায় যাদের জড়িত করা হয়েছে তারা প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে বসবাস করেন। এরা নিহত সঞ্জব আলী হত্যা মামলার বাদী মিন্নত আলীর স্বজন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ঘটনার দিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনায় আরিফুল সহ আরো ৫/৬জন আহত হন। আহতরা রাত ৮টার দিকে মৌলভীবাজার হাসপাতালে চিসিকৎসা নিলেও নিহত আরিফুলকে রাত ১০টায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং পরে জানানো হয় আরিফুল মারা গেছে। সংবাদ সম্মেলনে আহত আরিফুল রাত ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এ সময় কোথায় ছিল- তা সাংবাদিকদের উদঘাটনের অনুরোধ জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবন্ধি আরিফুলের হত্যা রহস্য উন্মোচন সহ প্রকৃত হত্যাকারীদের বিচারেরও দাবী জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে হাজীপুর গ্রামের হাজী মছদ্দর আলী, হাজী মো. আরেফিন আলী, হাজী মোস্তাব উদ্দিন, হাজী বোরহান উদ্দিন, কালাপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী খোরশেদ আলীসহ এলাকার ১০/১৫ জন মুরব্বি, বয়োজোষ্ঠ ব্যক্তিগণ উপস্থিত ছিলেন। হাজীপুর গ্রামের মুরব্বী হাজী মোস্তাব উদ্দিন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমরা জানি আল্লাহ তুমি হক্কের মালিক, তারা তারার বাচ্চারে মাইরা আমরার মানুষরে মিছা মামলায় ফাঁসাইছে। আমরা আল্লাহর ওয়াস্তে মামলার সঠিক তদন্ত চাই’। একই কথা বলেন হাজী রোরহান উদ্দিন ও হাজী মছদ্দর আলী।