1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
সব্জি 'করলা ও শ্রীমঙ্গলের পারের টং গ্রাম, অঢেল ফলন - মুক্তকথা
শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:১২ অপরাহ্ন

সব্জি ‘করলা ও শ্রীমঙ্গলের পারের টং গ্রাম, অঢেল ফলন

মোঃ কাওছার ইকবাল
  • প্রকাশকাল : মঙ্গলবার, ৪ এপ্রিল, ২০২৩
  • ২৯৬ পড়া হয়েছে

পারের টং গ্রামের বিশাল এলাকা জুড়ে শুধুই সবুজ আর সবুজ। সবুজের এমন সমারোহে যে কেউ বিমোহিত হয়ে যাবে। এই করলার চাষ করেই গ্রামের সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে।

মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশিদ্রোণ ইউনিয়নের সেই পারের টং গ্রামে প্রায় এক দশক পূর্বে একযোগে কয়েকজন কৃষক করলার চাষ শুরু করে। প্রতিবছরই ভালো ফলনের কারণে গ্রামের অধিকাংশ কৃষক বর্তমানে করলা চাষে ঝুকে পড়েছে।

গ্রামে প্রবেশ করলেই দৃষ্টি আটকে যাবে সবুজের বিছানায়। এলাকা জুড়ে দেখা যায় একের পর এক করলার মাচাং। সবুজ পাতায় ঢাকা মাচার নিচেই ঝুলতে দেখা যায় হাজারো করলার সারি। করলা চাষ করেই এলাকার অনেক কৃষক পরিবার স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। তেমনি এলাকার অনেক নারী পুরুষ দিন-মজুর হিসেবেও করোলা খেতে কাজ করে লাভবান হচ্ছেন। এলাকার কৃষক মোঃ নূর ইসলাম, হারুন মিয়া, শফিক মিয়া, মাসুক মিয়া, আমিরুল ইসলামসহ করলা চাষী সবাই অত্যন্ত খুশী এবারের বাম্পার ফলনে। তারা করলা চাষে খুবই আশাবাদী। বিশেষ করে চাহিদা সম্পন্ন সবজী হিসেবে মূল্যও পাচ্ছেন আশাতীত।

শ্রীমঙ্গল উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাসুক মিয়া জানান, এই গ্রামের প্রায় শতাধিক একর জায়গা জুড়ে করোলা চাষ। করলা চাষ করে কৃষকরা যেমন সাবলম্বী হয়েছেন তেমনি দৈনিক মজুরি হিসেবে করোলা খেতে কাজ করে স্থানীয় নারী পুরুষরা লাভবান হচ্ছেন। লালতীর সীডের টিয়া ও টিয়া সুপার জাতের করলা চাষ করেই কৃষকরা লাভবান হয়েছেন।

চাষীরা জানান, লাল তীর সীড এর টিয়া জাতের করলা বীজ এনে প্রথম পাড়ের টং গ্রামে বানিজ্যিকভাবে চাষ শুরু হয়। এতেই সফলতা চলে আসে। বাম্পার ফলন দেখে অনেকে করলা চাষ শুরু করেন। এখন গ্রামের প্রায় প্রতিটি ঘরেই করলা চাষী।

অনেকেই স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন শুধু করলা চাষ করেই। গ্রামের গৃহ বধূ আমেনা বেগম বলেন, আমার নিজের জমি নাই। আমি প্রতিদিন অন্যের খেতে কাজ করে ৩০০/৪০০ টাকা মজুরি পাই। এই করলাসহ অনান্য সবজি বিক্রয়ের জন্য পাড়ের টং এলাকায় খোলা হয়েছে কালেকশন পয়েন্ট বাজার।

যেখানে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন এলাকার অসংখ্য পাইকাররা করলা ক্রয় করতে এখানে এসে ভীড় করেন। পাড়ের টং কালেকশন পয়েন্ট বাজারের সাধারণ সম্পাদক মো. হামদুল হক বলেন, এখানে আমরা একটা দাম নির্ধারণ করে দেই। পাইকাররা এই দামেই কিনে নিয়ে যান। তিনি বলেন, প্রতিদিন আট/ দশ হাজার কেজি করোলা এই কালেকশন পয়েন্ট থেকে বিক্রি হয়। কৃষকরা ৭০ টাকা কেজি দরে করলা বিক্রি শুরু করেন। বর্তমানে গড় বিক্রয় ৫০ টাকা বলে জানা যায়।

লালতীর সীড লিমিটেড এর ডিভিশনাল ম্যানেজার তাপস চক্রবর্তী বলেন, এই গ্রামে আগে কৃষকরা ধান, কচু, লতাসহ অনান্য সবজী চাষ করতেন। এখন প্রায় প্রতিটি পরিবারই করলা চাষের সাথে জড়িত । আমরা এই গ্রামের মানুষের কাছে প্রথমে টিয়া, পরে টিয়া সুপার জাত চাষ করার পরামর্শ দেই। কৃষকেরা চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন। এমন ফলন হবে আমরাও ভাবি নাই।

তিনি বলেন, করোলার টিয়া ও টিয়া সুপার একটি দিবস নিরপেক্ষ হাইব্রিড জাত। উচ্চতা ও লবণাক্ততা সহিষ্ণু জাত। তীব্র শীত ব্যতীত সারা বছর এটি চাষ করা যায়। ফল আকর্ষণীয় সবুজ রঙের ও মধ্যম খাঁজযুক্ত। ফল খেতে মাঝারি তিক্ত নরম ও সুস্বাদু। ফল ২৮ থেকে ৩০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ওজন ২৫০-২৮০ গ্রাম। একর প্রতি এর ফলন হয় ১২-১৩ টন। রোপণের ৪২ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে ফসল সংগ্রহ শুরু করা যায়।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মহিউদ্দিন বলেন, করলা চাষ লাভজনক হওয়ার কারনে দিন দিন এর উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শ্রীমঙ্গল উপজেলায় এবছর ৩০ হেক্টরেরও অধিক জমিতে করোলা চাষ হয়েছে।যার ৯০ ভাগই পারের টং গ্রামে।

বিভিন্ন জাতের করলার চাষাবাদ হয়েছে। এ বছর করলার বাম্পার ফলন হয়েছে এবং কৃষকরা ভালো দামও পাচ্ছে। আমরা কৃষকদের মাঝে সার, বীজসহ বিভিন্ন ধরনের সহায়তা প্রদান করেছি।

করলা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা থাকায় এ বছর যতেষ্ট সাফল্য অর্জিত হচ্ছে এবং দূর- দূরান্তের পাইকাররা এসে সরাসরি প্রান্তিক কৃষক ও স্থানীয় ক্ষুদে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে করলা ক্রয় করায় এ অঞ্চলের চাষিদের ভাগ্যের চাকা ঘুরছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে করলা চাষিরা আরও লাভবান হবেন বলে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী।

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT