1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
২৩ জুন গণভোট বৃটেনে - মুক্তকথা
বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৫৮ পূর্বাহ্ন

২৩ জুন গণভোট বৃটেনে

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : শুক্রবার, ২৭ মে, ২০১৬
  • ৪৯৬ পড়া হয়েছে

শুক্রবার: সময়: ৪টা ৩০মি:

হারুনূর রশীদ

বৃটেন ইউরোপীয়ান ইউনিয়নে থাকবে কি থাকবে না এ নিয়ে জাতীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে দেশটি আগামী ২৩শে জুন। এই তারিখে অনুষ্ঠিত হতে যা্চ্ছে গণভোট।

গণভোটের ফলাফল কি হবে স্থির নিশ্চিত করে বলা মুষ্কিল। তবে রাজনৈতিক মহলের ধারণা বৃটেন অবশেষে ইউরোপীয়ান ইউনিয়নেই থাকবে। এতে বৃটেনের লাভ বেশী। প্রথমত: সুদীর্ঘকাল ধরে একটি ইউনিয়নের ছত্রছায়ায় থাকার অনুশীলন করে ইউনিয়নভুক্ত সকল দেশই কম-বেশী উপকৃত হয়েছে। হঠাত করে এই অনুশীলন থেকে বের হয়ে আসার মধ্যে সমস্যা রয়েছে বেশী বলেই রাজনৈতিক মহলের ধারণা। বিশেষত: ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যাবার পর কি ধরনের সমস্যা হতে পারে এ বিষয়ে কোন দেশেরই কোন বাস্তব অভিজ্ঞতা নেই।

IMG_8255

ইউরোপীয়ান ইউনিয়নে থাকা নাথাকা প্রসঙ্গে শ্রমিক দল আয়োজিত ঘরোয়া সভা। সভায় বক্তব্য রাখেন এমপি ডেভিড ব্লাঙ্কেট। ছবি:মুক্তকথা

কারণ, ইউরোপীয়দের এই ইউনিয়নের সাথে আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্র পদ্ধতি কিংবা ভারতীয় ইউনিয়ন পদ্ধতির মিলের চেয়ে ভিন্নতাে বেশী। ইউরোপীয় ইউনিয়নের গঠন সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিকতা থেকে। মার্জিত, রুচিশীল গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ থেকেই তাদের এই একাত্ম হয়ে থাকার অনুশীলন চলে আসছে সুদীর্ঘকাল ধরে। তাই অধিকাংশ দেশ ও মানুষই চান ইউনিয়নে থাকতে।

গেল দফায় রক্ষণশীল দল নির্বাচনে জিতে যাবার কারণে তাদের নির্বাচনপূর্ব লিখিত নির্বাচনী কর্মঘোষণানুযায়ী(ইলেকশন মেনুফেস্ট)ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদে বৃটেনের থাকা নাথাকা নিয়ে এখন গণভোটে যেতে হচ্ছে দেশটিকে। রক্ষণশীল নেতা কেমেরুণ কখনই গণভোটের পক্ষপাতি ছিলেন না। প্রথমদিকে তিনি ইউরোপীয়ান ইউনিয়নে থাকারও তেমন পক্ষপাতি ছিলেন না। কারণ রক্ষণশীল পুঁজিপতিরা ইউনিয়নে থাকতে চায় না। তারা মনে করে, থাকাতে তাদের কোন লাভ নেই বরং ক্ষতিই বেশী। কিন্তু তাদের দলেরই পেছন সারির কিছু সংশয়বাদী নেতাকর্মীদের চাপ আর স্থানীয় কয়েকটি নির্বাচনে তাদের আসন হারানোর ফলে বেগতি হয়ে একপর্যায়ে এই গণভোটের প্রতিশ্রুতি দেন কেমেরুণ। এখন যখন বুঝেছেন গণভোটে বৃটেনের থাকাই জিতবে তখন নতুন কথা জুড়ে দিয়েছেন যে ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের নীতিমালায় কিছু সংস্কার হলে বৃটেন থাকতে পারবে এবং উঠেপরে লেগেছেন ইউনিয়নে বৃটেনের স্থান নিশ্চিতকরণে যা আগে থেকে হাটলে অবশ্যই আরো ভাল হত।

IMG_8259

বক্তব্য রাখছেন ডেভিড ব্লাঙ্কেট। ছবি: মুক্তকথা

এ লক্ষ্যে এই যে গেল শীতে, সারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাজধানীগুলিতে তিনি ঘোরেছেন তাদের চিন্তিত সংস্কৃত ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য। এক পর্যায়ে গত ফেব্রুয়ারীতে দেশে ফিরে খুব সফলতা অর্জন করেছেন জানিয়ে সাংবাদিক সন্মেলনও করেছিলেন।

এদিকে শ্রমিকদল সূচনা থেকেই ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকার পক্ষপাতি। তাদের নেতা জেরেমি করবিন সবসময়ই এর পক্ষে কথা বলে আসছেন। বৃটেনের ৯.৩মিলিয়ন মানুষের প্রতি, যারা গেল ভোটে শ্রমিকদলকে ভোট দিয়েছে, আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন অসংখ্য ব্রাইটনের জীবন জীবিকা ইউরোপের সাথে, তার ব্যবসার সাথে অতোপ্রোতভাবে জড়িত। ইউরোপীয়ান ইউনিয়নে থাকাই আমাদের শেষ কথা।

image

প্রচলিত নিয়মানুযায়ী সভাশেষে দলীয় সদস্য ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন এলান জনসন এমপি পাশে দাঁড়িয়ে ডেভিড।             ছবি: মুক্তকথা

নিচের বিষয়গুলো আগামী ২৩শে জুনের ভোটের সিদ্ধান্ত নিতে কিছুটা হলেও সহায়তা করবে বলে আমাদের ধারণা।

  • প্রায় ৩.৫ মিলিয়ন বৃটিশ চাকুরী ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের সদস্যপদের সাথে সরাসরি জড়িত।
  • ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন যুক্তরাজ্যের মোট রপ্তানীর ৫০ভাগ আমদানী করে(৫৪ভাগ দ্রব্যসামগ্রী আর ৪০ভাগ সেবা কার্যক্রম)। ৩০০,০০০হাজারের মত বৃটিশ কোম্পানী এবং ৭৪ ভাগ বৃটিশ রপ্তানীকারকগন ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের দেশগুলির বাজারে সবসময় সক্রীয় থাকে। এশিয়া ও আমেরিকার মালিকানাধীন ইউরোপীয় ইউনিয়নের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বৃটেনেই তাদের কারখানা নির্মাণ করিয়েছে যেহেতু বৃটেন এই ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত।
  • সারা দুনিয়ার সাথে ইউরোপীয়ান ইউনিয়নই ব্যবসা-বাণিজ্যের আদান-প্রদান নির্ণয় করে থাকে। বৃটেন ওখান থেকে সরে আসলে তাকে একাই এসব নির্ণয় করতে হবে যা অবশ্যই একটি কঠিণ কাজ হয়ে দাঁড়াবে। এ ছাড়াও যেহেতু, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন একটি বিশাল বাজার দুনিয়ার ব্যবসায়ীদের জন্য সেহেতু বৃটেন সদস্যপদ ছেড়ে দিলে বিশ্বব্যবসার লেনদেনের কাজে একক দেশবৃটেন কখনই বড় বাজার হিসাবে গুরুত্ব পাবে না।
  • ইউরোপীয়ান ইউনিয়নে থাকার কারণে বৃটিশ নাগরীকেরা মোবাইল ফোন রোমিং, ক্রেডিট কার্ড ফিস, স্বল্পখরচের বিমান যাতায়াত এবং যাত্রায় দেরী কিংবা স্থগিত হলে যুক্তিসংগত ক্ষতিপূরণ ইত্যাদি উপভোগ করে থাকেন। একক বৃটেন এ সুবিধা কখনই পাবে না।
  • ইউরোপীয়ান ইউনিয়নভুক্তদেশগুলির জন্য একটি সর্বজন গ্রাহ্য মানদন্ড থাকায় জাতীয় সরকারগুলোর মত বৃটেনও তার আকাশ, নদী এবং সমুদ্রসৈকতগুলোর উন্নয়ন করিতে পারিয়াছে। যা কোনদিনই একক দেশ বৃটেনের পক্ষে সম্ভব হতো না। বৃটেন ও বৃটীশ নাগরীকদের অবসর যাপন কিংবা বাহিরে থাকার ব্যাপারে ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত থাকাই সবচেয়ে উত্তম।

    প্রশ্ন উত্তর পর্বে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে দু’জনই উত্তরে শরিক হন।  ছবি: মুক্তকথা

  • বহুজাতিক মাইক্রোসপ্ট, সেমসাং, তোশিবাদের মত বহুজাতিক কোম্পানীগুলোকে একমাত্র ইউরোপীয়ান ইউনিয়নই সামলাতে পারে এককভাবে বৃটেন কোন সময়ই এদের সামলাতে পারবেনা।
  • ১.৪ মিলিয়ন বৃটীশ নাগরীক বৃটেনের বাহিরে ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের অন্যান্য দেশগুলোতে বসবাস করেন। ২০১২-১৩ সালের ইউনিয়নের ছাত্র-ছাত্রী বিনিময় কর্মসূচীতে ১৪,৫০০ জনেরও বেশী যুক্তরাজ্যের ছাত্র-ছাত্রী অংশ গ্রহন করেছিল। বৃটেনে দেয়া ড্রাইভিং লাইসেন্স ইউনিয়নভূক্ত সকল দেশে ব্যবহারযোগ্য। যা বৃটেন বের হয়ে আসলে সম্ভব নয়।
  • পশ্চিম ইউরোপীয় দেশগুলোতে স্থায়ী শান্তি স্থাপনে ইইউ যে সাহায্য সহায়তা করেছে তা অকল্পনীয়। স্পেন, পর্তুগাল, গ্রিস ও ভূতপূর্ব সোভিয়েত ইউনিয়নের ব্লকভুক্ত ইউরোপীয়ান দেশগুলোতে গণতন্ত্রকে সংহতকরণে,  বলকান যুদ্ধের পর বলকান দেশগুলোতে শান্তিরক্ষায় ইউনিয়ন অত্যন্ত সফল ভূমিকা রাখতে পেরেছে। জাতিসংঘের সাথে বিশ্বশান্তি রক্ষায়, দেশে-দেশে বিরোধিতা, দ্বন্দ্বসংঘাত ও যুদ্ধ নিরসনে এবং সর্বোপরি দেশে দেশে গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণে ইইউ অগ্রগন্য ভূমিকা পালন করতে পারছে।
  • নারী-পুরুষের সমান বেতন নিশ্চিত করণে, বয়স, জাতি লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণে নিশ্চয়তা আনতে পেরেছে এই ইইউ। ফলে ইইউ’তে বসবাসকারী বৃটীশগন সেই সুযোগ-সুবিধা উপভোগ করছেন।
  • ২৮টি গণতান্ত্রিক দেশ আর দুনিয়ার সবচেয়ে বড় বাজার হিসাবে ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন মাথা উঁচু করে পৃথিবীকে দেখাতে পারে যখন এক থেকে কাজ করবে। বহুজাতিক আন্তর্জাতিক সংস্থায় যৌথ প্রতিনিধিত্বে বৃটেন ভূমিকা রেখেছে। এতে করে বৃটেন ব্যাপক প্রভাব কাজে লাগাতে পারে যা একক বৃটেনের পক্ষে কোন সময়ই সম্ভব নয়। বিশ্ব ব্যবসা ও বাণিজ্য উন্নয়নে ও পরিবেশ উন্নয়নে ইইউ বড় ভূমিকা রেখেছে।
  • দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা একটি যৌথ ব্যবস্থাপনা ভাল, না ২৮ দেশের জন্য ২৮টি ভিন্ন ভিন্ন নিয়মকানুন ভাল, খুবই ভেবে দেখার বিষয়।
  • আগের বহিষ্কারাদেশের দীর্ঘসূত্রীতা বন্ধ হয়েছে ইউরোপীয়ান গ্রেপ্তার হুকুম কার্যকর করার মধ্যদিয়ে আর তা’সম্ভব হয়েছে ইউনিয়নে থাকার কারণে। ফলে বৃটেন বহু আইন অমান্যকারী, সন্ত্রাসী দূষ্কর্মকারীদের বহিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছে যারা অন্যান্য ইইউ দেশে “ওয়ানটেড” ছিল আবার বহু দূষ্কৃতিকারীকে শাস্তি দিতে সক্ষম হয়েছে যারা অন্যান্য ইইউ দেশে গুপ্ত ছিল। ইউনিয়ননীতি, যুক্তরাজ্যকে অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের সাথে কাজে খুবই সহায়তা দিয়ে থাকে আন্তর্জাতিক অবৈধ ব্যবসা, মানুষ পাচার কিংবা অর্থপাচার দমনে।
  • যুক্তরাজ্য, ইইউ গবেষণা তহবীলের দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যবহারকারী। ভবিষ্যতে বিশ্বের বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয় ও কোম্পানীগুলোর তহবীলের উতস হবে এই ইউরোপীয় গবেষণা তহবীল বলেই বৃটেন আশা করে।(তথ্য: প্রোইউরোপা.অর্গ.ইউকে)।
এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT