মুক্তকথা: সোমবার, ৮ই আগষ্ট ২০১৬।।
ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরো শহরে চলমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়াযজ্ঞ অলিম্পিকে বাংলাদেশের মেয়ে ঝিনাইদহের মেয়ে সাঁতারু সোনিয়া আক্তার।
ঝিনাইদহ শহরের হাটখোলা বাজারে এক সময় পান বিক্রি করতেন সোনিয়ার বাবা আনিসুর রহমান। সে সময় ছেলেমেয়েদের মুখে খাবার জোগাতে কী যে কষ্ট করেছেন তিনি। কিন্তু এখন দিন বদলেছে। সেই হাটখোলা বাজারেই এখন বড়সড় মুদি দোকান দিয়েছেন আনিসুর রহমান। বাড়িতে উঠেছে পাকা ঘর। আর এ সব সম্ভব হয়েছে মেয়ে সাঁতারু সোনিয়া আক্তারের সুবাদে।
মেয়ে সোনিয়াকে নিয়ে প্রায়ই প্রতিবেশীদের তিরস্কার শুনতে হতো বাবা আনিসুরকে। প্রতিবেশীরা বলতো, মেয়ে মানুষ, সাঁতার শিখিয়ে কী হবে। কিন্তু বাবা আনিসুর কখনই মেয়ে সোনিয়াকে বাঁধা দেননি। ফলে কাল পরিক্রমায় সোনিয়া ঝিনাইদহের নবগঙ্গা থেকে শুরু করে মাতিয়েছেন মিরপুরের জাতীয় সুইমিংপুল।
সোনিয়ার বাবা আনিসুর রহমান জানান, বড় ছেলে সাঁতার শিখতেন জাহিদ স্যারের কাছে। সোনিয়াও বায়না ধরেন সাঁতার শেখার। বায়নার কারণেই সোনিয়াকে কোচের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন তার বড় ভাই। ২০০৩ সালে যশোর শিক্ষা বোর্ড দলের হয়ে বয়সভিত্তিক সাঁতার দিয়ে সোনিয়ার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ শুরু। জাতীয় পর্যায়ে জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়ে ২০০৬ সালে জেতেন ১১টি সোনা, দুটি ব্রোঞ্জ। আর ২০১০ সালে ১১টি ইভেন্টে অংশ নিয়ে দশটিতেই জেতেন সোনা। এর মধ্যে ৯টিতে ছিল জাতীয় রেকর্ড। ঘরোয়া টুর্নামেন্টে এমন সাফল্যই তাকে আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী করে তোলে।
সোনিয়া আক্তার এবার অলিম্পিকে সাঁতারের ৫০ মিটার ফ্রি স্টাইলে অংশ নিয়েছেন। এবারই প্রথম তিনি অলিম্পিকে অংশ নিলেন।
সোনিয়া প্রথম আন্তর্জাতিক মিটে অংশ নেন সিঙ্গাপুরে ২০১০ যুব অলিম্পিক গেমসে, ২০১১-তে যুক্তরাজ্যের আইল অব ম্যানে অংশ নেন কমনওয়েলথ যুব গেমসে। এরপর সাঁতরেছেন ২০১৪ কাতার বিশ্ব সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপ ও ২০১৫ কাজান বিশ্ব সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপে।
সোনিয়ার বাড়ি ঝিনাইদহ শহরতলীর ভুটিয়ারগাতিতে। সোনিয়া ওই গ্রামের মাদরাসায় আলিম পড়ছেন। দীর্ঘদিন বাংলাদেশে আনসারের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পর এ বছর সোনিয়া স্থায়ী চাকরি পেয়েছেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে।(পরিবর্তন.কম থেকে সংগৃহীত)