ক্ষুব্দ পরিবার ও এলাকাবাসী
প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করা হয়েছিল শিক্ষিকা রোজিনাকে
তিন সপ্তাহেও গ্রেফতার হয়নি প্রধান আসামী
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে স্কুল শিক্ষিকা, আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও উদ্যোক্তা রোজিনা বেগম খুনের তিন সপ্তাহেও গ্রেফতার হয়নি প্রধান আসামী রেজাউল আহমদ সাগর। এতে ক্ষুব্ধ নিহতের পরিবার, এলাকাবাসী ও শিক্ষকরা। তবে পুলিশ বলছে প্রধান আসামীসহ অন্য আসামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের ভাসানীগাঁও গ্রামের স্কুল শিক্ষিকা, সিলেট আইন মহা বিদ্যালয়ের বর্ষের শিক্ষার্থী রোজিনা বেগম খুনের ঘটনায় ৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের বড় ভাই। মামলার প্রধান আসামী একই গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে রেজাউল আহমদ সাগর। এ ঘটনায় গ্রামবাসীর সহায়তায় পুলিশ চার আসামীকে গ্রেফতার করেছে। তবে ঘটনার তিন সপ্তাহ পার হলেও মামলার প্রধান আসামী সাগরসহ আরো এক আসামী এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন নিহতের পরিবার সদস্য, এলাকাবাসী ও শিক্ষকরা।
মামলার বাদী নিহতের বড় ভাই শাহজাহান আহমদ বলেন, ঘটনার দিন পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করে। দু’দিন পর গ্রামবাসীর সহায়তায় পুলিশ আরো এক আসামীকে গ্রেফতার করে। অথচ ঘটনার তিন সপ্তাহ পার হলেও বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগেও প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না। সাগরের হুমকির বিষয়ে পূর্বেও থানায় জিডি রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ফজিরুন বেগম, তাসলিমা আক্তার, বিলকিস বেগম বলেন, তিন সপ্তাহেও মূল আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় আমরা হতাশ। ইতিপূর্বে আমরা মানববন্ধন করেছি। পুলিশ আমাদের আশ্বস্থ করেছিল দ্রুত আসামী গ্রেফতার করা হবে। তবে আজ পর্যন্ত মূল আসামীকে গ্রেফতার করা হয়নি।
এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু জাফর মো. মাহফুজুল কবির বলেন, ‘শিক্ষিকা খুনের প্রধান আসামীা রেজাউল আহমদ সাগরসহ অন্য আসামীকে দ্রুত গ্রেফতারে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। এরপরও কারো কাছে কোনো তথ্য থাকলে আমাদের সেই তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবেন।’
উল্লেখ্য, আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গত ২৬ মে সকাল ১০টায় ভাসানীগাঁও গ্রামে ভেকু মেশিন দিয়ে কৃষিজমির মাটি কাটাচ্ছিলেন স্থানীয় আব্দুর রহিম ও তার ছেলে রেজাউল করিম সাগর। খবর পেয়ে নিহত রোজিনার বোনজামাই জালাল মিয়া প্রতিপক্ষকে আপত্তিকৃত জমিতে মাটি কাটায় বাঁধা দিলে দা দিয়ে কূপিয়ে জালাল আহমেদকে গুরুতর জখম করে। জালাল আহমদকে রক্ষায় হারুন মিয়া, তার স্ত্রী নুরুন নাহার লুবনা ও ছোট বোন শিক্ষিকা রোজিনা বেগম দৌঁড়ে সেখানে গেলে দা ও বল্লম দিয়ে সবাইকে এলোপাতাড়ি কূপিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন। স্থানীয়রা আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোজিনা বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত রোজিনার ১০ বছর বয়সী একমাত্র শিশু সন্তান রয়েছে।