খুবই নীরবে চলে গেলেন আজীবন সমাজসেবী, নারী চেতনায় উদ্দীপ্ত, প্রতিভাময়ী কর্মযোগিনী সাইয়েদা হাফসা আলমগীর। হাফসা ছিলেন সাহিত্যপাগল নারী। স্কুল জীবন থেকেই ছোট খাটো গল্প প্রবন্ধ লেখা দিয়ে মৌলভীবাজারের সাহিত্যাঙ্গনে প্রবেশ করেন। মৌলভীবাজারের সাহিত্যাকাশের ষাট-সত্তুর দশকের দিকপাল অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুনির্মল কুমার দেব মীন, অবসরপ্রাপ্ত সচিব আব্দুল কাদির মাহমুদ, প্রয়াত এন আই আজিজুল হক ইকবাল, প্রবাসে প্রয়াত লেখক কাজী ফয়সলুজ্জামান ও তারই সহোদর আমেরিকা প্রবাসী কবি কাজী আতিকুজ্জামান, মৌলভীবাজার মহাবিদ্যালয়ের সেই সময়ের ছাত্র নন্দলাল দেব সহ আরো অনেকের সাথেই তার সাহিত্যসেবী হিসেবে এক অনাবিল সুমধুর সম্পর্ক ছিল। লেখক কাজী ফয়সলুজ্জামানকে প্রায়ই তার দাওয়ায় বসে লেখা-লেখি নিয়ে খোশগল্প করতে আমি দেখেছি এবং ম্যাগাজিন প্রকাশনা ও “কঁচি-কাঁচা” বিষয়ে দু’এক আলাপে নিজে শরিকও হয়েছি। সে এক মনভুলানো সময় ছিল।
হাফসাদের এক ভাগনেয় আমতৈল গ্রামের গনিউর রহমান খান আমার সহপাঠী ছিলেন। গনিউর তাদের বাসায় থেকেই মহাবিদ্যালয় অবদি লেখা-পড়া করেছেন এবং মৌলভীবাজার মহাবিদ্যালয় থেকে স্নাতক সনদ নিয়েছিলেন। হাফসা কিন্তু আমি ও তাদের ভাগনেয় গনিউরের ছোট ছিলেন। এই গনিউরের সাথে সখ্যতার কারণে আমার ছোট হলেও আমি সৈয়দা হাফসাকে খালা বলে সম্বোধন করতাম। একই সুবাদে প্রায়ই তাদের বাসায় যেতাম। সদা হাসি মাখা মুখের হাফসা বেগম অত্যন্ত মায়ার সুরে সুধাতেন-“কিতাবা বালানি, বও!” কোন দিনও কোনভাবে বড়ত্ব দেখাবার ভাব তার মাঝে লক্ষ্য করিনি। আমার কাছে খুবই সাদামনের এক নিকট আত্মীয়ের মত যুবতী ছিলেন সৈয়দা হাফসা ও তার ভাইবোনেরা।
আমাদের বাসা থেকে হাফসা খালাদের বাসা মাত্র দু’মিনিটের রাস্তা ছিল। কাছের বাসার প্রতিবেশী আর গনিউরের বন্ধুদের একজন হিসেবে পরিচয় গড়ে উঠে তারা চার ভাই-বোনের সাথে। তিন বোন একভাই। ফাতেমা, হাফসা, মতিউর ও রোকেয়া। সৈয়দা ফাতেমা তুজ জোহরা তাদের সকলের বড় বোন। তাকে আমি পেয়েছি ও দেখেছি এক অসাধারণ গুণবতী মহিলা হিসেবে। লেখা-পড়ার প্রতি তার একনিষ্ঠতা আমার স্মৃতি থেকে কখনও বিচ্যুত হবেনা। যখনই তাদের বাসায় যেতাম তখনই তাকে পড়ার ঘরে বসে লেখা-পড়ায় নিমগ্ন থাকতে দেখতাম। তিনি যোগ্যতার সাথে এম.এ. শেষ করে অবসরের আগ পর্যন্ত ঢাকার একটি মহাবিদ্যালয়ে অধ্যাপনায় মননশীল ব্যস্ত জীবন কাটিয়েছেন।
সৈয়দ মতিউর রহমান সানি, তারা তিন বোনের একমাত্র ভাই ছিলেন। তিনিও অনুপম এক ব্যক্তিত্ব ছিলেন। খুবই নিয়ামানুবর্তীতার মধ্য দিয়ে চলা-ফেরা করতে ভালবাসতেন। যেকোন সভা-বৈঠকে একেবারে সঠিক সময়ে তাকে পাওয়া যেতো। কোন দিন কোথায়ও তাকে একমিনিট দেরীতে উপস্থিত হতে দেখিনি। সময়জ্ঞানের বিষয়ে সে সময়ের মৌলভীবাজারে তিনিই ছিলেন একমাত্র ব্যক্তিত্ব যাকে একেবারে সঠিক সময়ে উপস্থিত পাওয়া যেতো। যা আজও বাঙ্গালী সমাজে খুবই বিরল। আমার জীবনে সময়জ্ঞানের পাঠ আমি তাকে দেখে শিখেছি। মনে আছে এবং আমৃত্যু থাকবে, আমরা যারাই তাদের বাসায় যেতাম, তাদের সকল ভাই-বোনই আমাদের সকলকেই খুবই আন্তরিক ও মায়ার চোখে দেখতেন।
সমাজ ও সাহিত্যসেবী হাফসা আলমগীরের জন্ম চট্টগ্রামে হলেও বাড়ী মৌলভীবাজারে। বাবা ছিলেন ইংরেজ আমলের পুলিশের কর্মকর্তা। পাকিস্তান জন্মের কিছুকাল পরই অবসর নিয়ে মৌলভীবাজারে স্থায়ীভাবে চলে আসেন। সেই সুবাদে বাবা চট্টগ্রামে চাকুরীতে থাকাকালীন সময়ে হাফসার জন্ম সেখানে। মা-বাবার দেয়া শৈশবের নাম সৈয়দা হাফসা বেগম। সংক্ষেপে ‘হাফসা’ নামেই তিনি ৬০-৭০ দশকের মৌলভীবাজারের মানুষ তথা সাহিত্যসেবীদের কাছে পরিচিত ছিলেন। বিয়ে হয়েছিল পাবনায়। বসবাস করতেন ঢাকায়। হাফসা বেগমদের বাসা এখনও দাড়িয়ে আছে শহরের শাহমোস্তফা সড়কে কালের সাক্ষী হয়ে। এখন আর ওখানে সাহিত্য চর্চ্চা করতে কেউ আসেনা। ষাট-সত্তুর দশকের এক সময় ছিল যখন মৌলভীবাজার শহরের বিশেষ করে কলেজপড়ুয়া সাহিত্যপাগল ছেলে-মেয়েরা ওবাসায় ভিড় জমাতো। তাদের বাড়ী আছে এখনও মৌলভীবাজারের কদমহাটা গ্রামে। অযত্নে অবহেলায় বাড়ীটি একেবারেই ক্ষয়িষ্ণু।
ইংরাজ আমলের পুলিশ কর্মকর্তা তার পিতা প্রয়াত সৈয়দ মকবুল আলী মৌলভীবাজারের কদমহাটা গ্রামের সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান ছিলেন। চাকরীতে থাকাকালীন অবস্থায়ই সৈয়দ মকবুল আলী মৌলভীবাজার শহরের শাহমোস্তাফা সড়কের কাজীরগাঁও রাস্তার সংযোগস্থলের নিকট নিজের বাসা নির্মাণ করেন এবং অবসর নেয়ার পর স্বপরিবারে ওই বাসায় এসে উঠেন। সেটি ষাট দশকের কাহিনী। ওই সময়ে এবং তৎপরবর্তী আশীর দশক পর্যন্ত তার ওই বাসা-ই মৌলভীবাজারের সবচেয়ে সুন্দর দালান ছিল। আসা-যাবার পথে বহু মানুষ দাড়িয়ে তাদের বাসা এক নজর দেখে নিতো।বাসার প্রবেশদ্বারের সামনে উজ্জ্বল শানবাঁধানো বসার সিড়ির পরই ছিল লোহার ফটক। সেই ফটক পেরিয়ে বাসার বহুরঙ্গা পাকা পাটাতনের বারোয়ারি দাওয়াখানা। দাওয়াখানার পর পাকাদালানের দু’ধারে ছোট্ট দু’টি পড়ার ঘর(রিডিংরুম)ছিল, যেখানে হাফসাদের ভাইবোন পড়াশুনা করতেন। ওই বাসায় থেকেই হাফসারা ৩বোন ও একভাই বড় হয়েছেন, লিখা-পড়া করেছেন। হাফসারা দু’বোন মৌলভীবাজার মহাবিদ্যালয়ে লেখা-পড়া করেছেন। তার বড় বোন সৈয়েদা ফাতেমা তুজ যোহরা অধ্যাপনা থেকে অবসর নিয়ে বর্তমানে ঢাকায়ই আছেন। সব ছোট বোন সাইয়েদা রোকেয়া সিলেটে বসবাস করছেন।
প্রয়াত হাফসার বড় ভাই প্রয়াত মতিউর রহমান সানি, কলকাতার কনভেন্টে পড়েছিলেন শুনেছিলাম। তিনি মৌলভীবাজার সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়েও কিছুদিন লেখা-পড়া করেছিলেন। অসাধারণ উচ্চারণে ইংরেজী বলতে পারতেন। আমাদের ছাত্রাবস্থায় তাকে স্কুলের বার্ষিক ক্রিকেট প্রতিযোগীতার ধারাবিবরণী অনর্গল ইংরেজীতে বলতে শুনেছি ও দেখেছি। খেলার আগে তাকে অনুরোধ করে আনা হতো ইংরাজীতে ধারা বিবরণীর জন্য। পুরো ইংরেজদের মত বিশুদ্ধ ইংরাজী উচ্চারণে কথা বলতেন। মধ্য বয়সে মতিউর রহমান সানি মৌলভীবাজারে থেকে মফঃস্বল সাংবাদিকতায়ও সময় দিয়েছেন অনেক। তার নামের শেষে ‘সানি’ শব্দ ব্যবহারের একটি ছোট্ট কাহিনী শুনেছিলাম এই হাফসা খালার কাছেই। তার আরেক ভাই ছিলেন যিনি মারা যান। তার নাম ছিল মতিউর রহমান। পরে তার জন্ম হলে, বাবা তার মৃত সন্তানের স্মরণে তারও নাম রাখেন মতিউর রহমান। এবং যেহেতু তিনি দ্বিতীয় সন্তান তাই নামের শেষে ‘সানি’ শব্দ বসান। সেই তার নাম হয়েছিল সৈয়দ মতিউর রহমান সানি। খুবই শহুরে পেশাজীবী চেতনায় উদ্বুদ্ধ মানুষ ছিলেন মতিউর রহমান।
১৯৬৩ সালের কথা। আমি তখন সরকারী স্কুলের ৮ম শ্রেণীর ছাত্র। জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন “কঁচিকাঁচা”র প্রয়াত দাদাভাই মৌলভীবাজারে আসবেন সংগঠনের কাজ নিয়ে। সেই সময়ে আমাদের বাসার সামনে মৌলভীবাজার “সাধারণ পাঠাগার”এর দক্ষিন পাশে একটি “কিন্ডার গার্টেন স্কুল” ছিল। অনুপমা অঙ্গ সৌষ্ঠবের কমলাদি এই স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। যতদূর মনে পড়ে, কমলাদি আমরা দু’ভাইকে দাদাভাইয়ের অনেক গল্প শোনালেন। এর আগেও ইত্তেফাক পত্রিকা পড়ে কঁচি-কাঁচা ও দাদাভাই বিষয়ে আমার একটু ধারনা ছিল। কমলাদি’র কাছ থেকে শুনে মনের মাঝে খুব উৎসাহ জাগলো কঁচি-কাঁচা বিষয়ে। তখন আমাদের আলীআমজদ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শিরিয়া খাতুন মৌলভীবাজারে কঁচি-কাঁচার শাখা গঠনের কাজ করছিলেন। ওই সময় আরেক জন উদ্যোমী যুবক ছিলেন তৎকালীন ‘ফুড কন্ট্রোলার’এর ছেলে ফিরোজ ভাই। তার ছোটভাই ফারুখ ও আলম আমার শিশুপার্কের সহযাত্রী ছিল। সেই সুবাদে ফিরোজ ভাইয়ের সাথে পরিচিত হই। এই ফিরোজভাই আমাকে কঁচিকাঁচায় যোগদিতে উৎসাহ যুগিয়েছিলেন। পরবর্তীতে ১৯৬৫ সালে মহাবিদ্যালয়ে অধ্যয়ন শুরু করে ছাত্রলীগে যোগ দেই। বর্তমান আওয়ামী লীগ নেতা ফিরোজ আহমদ প্রয়াত গাজী গোলাম সরওয়ারকে সাথে নিয়ে আমাদের বাসায় আসেন আমার এক প্রয়াত খালা রাবেয়া খানমকে ছাত্রলীগে যোগ দেয়ার আলাপ করতে। ছাত্রলীগে যোগ দেয়ার অনেক পরে বিভিন্ন আলাপে আসে কঁচি-কাঁচার কথা। আমার মনোজগতে উজ্জ্বল হয়ে ভেসে উঠে স্কুল জীবন আর কমলাদি’র কঁচি-কাঁচার পাঠ। ছেলে-মেয়েদের সমন্বয়ে এই কঁচি-কাঁচার সংগঠন দাড় করাতে গিয়ে সেই সময় যাদের আন্তরিক সহযোগীতা পেয়েছিলাম তাদের একজন ছিলেন আমার কলেজ সহপাঠী নূরজাহান সুয়ারা আরেকজন এই সৈয়দা হাফসা বেগম। আমি, সুয়ারা, হাফসা, ফয়সলুজ্জামান, আমার ভাই প্রয়াত কয়ছর রশীদ, প্রয়াত গাজী গোলাম সরওয়ার, আতিকুর রেজা অনু ও তদীয় বোন মিনা(বড়লেখার প্রয়াত আজির উদদীন মোক্তার সাহেবের ছেলে ও মেয়ে) ও বর্তমান আওয়ামী লীগ নেতা ফিরোজ আহমদ সহ আরো কয়েকজনকে নিয়ে একটি সাংগঠনিক কমিটি মনোনীত করে আমাকে আহ্বায়কের দায়ীত্ব দেয়া হয়েছিল। আজ মনে হয়, সেদিন এই হাফসা বেগম আর সুয়ারা বেগমের আন্তরিক সহযোগীতা না থাকলে কঁচি-কাঁচা গঠন কঠিন হতো। হাফসা ও সহপাঠী সোয়ারা বেগম ও মিনা বেগন তারা তিনজনই সে সময় ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। সে সময় আমরাই ছিলাম মৌলভীবাজার মহাবিদ্যালয়ের সর্বপ্রথম শক্তিশালী ছাত্রলীগ দল।
হাফসা চলে গেছেন। আর কখনও আসবেন না সাহিত্যের ডালি সাঁজিয়ে আমাদের বিরক্ত করতে। সেই হাসি-মমতামাখা মুখ আমরা আর কোনদিন দেখবো না। ঘটা করেতো নয়ই, সামান্য ফুলের ডালি সাঁজিয়েও মৌলভীবাজারের কোথায়ও কেউ তার স্মরণে কোন অনুষ্ঠান করেছেন তা শুনিনি। যদিও বিয়ের পর সৈয়দা হাফসা মৌলভীবাজারের লেখক, সাহিত্যানুরাগীদের সাথে সম্পর্ক রাখতে পারেননি খুবই স্বাভাবিক কারণে। বরের কাছে ঢাকাতেই স্থায়ী বসবাস গড়ে তোলেছিলেন। তবে চাকুরীর ভেতর দিয়ে সাহিত্য সাধনা আর লেখালেখি থেকে দূরে সরে যাননি। মৌলভীবাজারের মানুষ তাকে স্মরণে না রাখলেও সময় তাকে সঠিক স্থানেই বসিয়েছিল। তিনি ঢাকায় শিশু একাডেমীতে শেষ পর্যন্ত পরিচালক(ডাইরেক্টর) পদে কাজ শেষ করে অবসরে গিয়েছিলেন। ওই সময় তিনি “শিলাকুড়ি” নামে একটি মাসিক সাহিত্য সাময়িকী প্রকাশ করে গেছেন। তার সাহিত্যাকাশ আমাদের কাছে ধূসর হলেও দেশের অন্যত্র বা ঢাকায় তিনি ছিলেন শিশুপাঠ্যের শিশুপাল। আর এই “শিলাকুড়ি”র প্রকাশনা তিনি মৌলভীবাজার থেকেই শুরু করেছিলেন।
অবসরপ্রাপ্ত সাইয়েদা হাফসা আলমগীর এম এ, আবু জার গিফারী কলেজে প্রভাষক হিসেবে ৯মাস কাজ করেন। এর পর বাংলাদেশ শিশু একাডেমীতে যোগ দেন এবং ২৭ বছর কাজ করেন। তিনি পরিচালক হিসেবে পদোন্নতি পান এবং সাংস্কৃতিক বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করেন। এ সময় ১৯৮৯-৯০সালে তিনি কাজের ভেতরে ব্যবহারের জন্য একটি ‘ইনার হুইল ক্লাব’ গঠন করেন এবং তিনি চার্টার সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। এ সময় তিনি ক্লাবের বিভিন্ন পদে কাজ করেন এবং ১৯৯১-৯২ ও ১৯৯৬-৯৭ এ দু’পর্বে সভাপতি হিসেবে দায়ীত্বপালন করেন। ১৯৯৮-৯৯সনে তিনি ক্লাবের জেলা মানের পদবিতে প্রবেশ করেন এবং পরবর্তীতে ২০০৩-০৪ সালে জেলা-৩২৮ এর সভাপতি নির্বাচিত হন।
২০০৬-০৭ সালে তিনি ক্লাবের ‘আন্তর্জাতিক ইনার হুইল’ হিসেবে দায়ীত্ব গ্রহন করেন।
বর্ণাঢ্য জীবনে তিনি ‘ঢাকা(ইস্কাটন) লেডিস ক্লাব’, গুলসান লেডিস ক্লাব, ‘উইমেনস ভলানটিয়ার্স এসোসিয়েশন’, রোটারী ক্লাব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলুমনি সহ আরো অন্যান্য সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন।
তিনি এক কন্যা সন্তান রেখে গেছেন। তার কন্যা মাইশা ফেয়ারুজ লুবাবা সৃষ্টিশীল কারিগরী বিশ্ববিদ্যালয়(শান্ত-মারিয়াম ইউনিভারসিটি অব ক্রিয়েটীভ টেকনোলজি) বি.এ. সম্মানের ছাত্রী এবং একই সাথে বাংলাদেশের কেনাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ অধ্যয়ন করছেন।
প্রয়াত হাফসা স্বামী সন্তানসহ ১৯৯১ এবং ১৯৯৬ সালে পবিত্র হজ্জ্বব্রত পালন করেছিলেন।
তার মৃত্যুর দিন ও সময়ে তিনি রোটারী ক্লাবের পক্ষ থেকে দিনাজপুরের বন্যাদূর্গত কিছু গরীব মানুষের হাতে ১১টি টিনের তৈরী ঘর হস্তান্তর করে ঢাকার বনানীতে তার বাসায় ফিরছিলেন। আসার পথে রাস্তায়ই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং মৃত্যুমুখে পতিত হন।
তার বিয়ে হয়েছিল পাবনায় এবং তার বর একজন হিসাব কুশীলব(চার্টার্ড একাউন্টেন্ট)। শিলাকুড়ি নামে একটি মাসিক পত্রিকা তিনি সম্পাদনা করতেন।
[তার ঘনিষ্ট সম্পর্কিত এক বড়বোন মৌলভীবাজারের নূরজাহান সুয়ারা জানিয়েছেন দিনাজপুর থেকে ফিরে আসার পথে তার কিডনী কাজ করছিলনা। তিনি অনেকদিন থেকে কিডনী সমস্যায় ভুগছিলেন। তাকে ঢাকার বনানী গোরস্তানে দাফন করা হয়েছে।]
লন্ডন: সোমবার,
২৭ নভেম্বর ২০১৭সাল