মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে তিন পরিবারের ১৬ সদস্যকে খাবারের সাথে চেতনানাশক দ্রব্য খাইয়ে গহনা টাকাসহ মালামাল নিয়ে গেছে দৃবৃত্তরা। বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারী) দিবাগত রাতে শহরের শ্যামলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
দৃবৃত্তরা বাসার লোকজনকে অচেতন করে জানালার গ্রীল ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে ৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ৫ লক্ষ টাকাসহ প্রায় ৯ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এঘটনায় ৩ পরিবারের ১৬ জনকে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ ফেসবুকের ষ্ট্যাটাস ও ৯৯৯ এ সংবাদ পেয়ে ভোরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে অচেতন অবস্থায় ওই ১৬ জনকে উদ্ধার করে। তারা হলেন পৌরসভার শ্যামলী আবাসিক এলাকায় বসবাসকারী সেল ফোন রিপিয়ার টেকনিশিয়ান এসোসিয়েশন সভাপতি ও মোবাইল ওয়ার্কশপের সত্ত্বাধিকারী খালেদ মিয়া (৩৫), তার স্ত্রী উম্মে জাহান উর্মি (২৬) মা শামসুন্নাহার (৫০), বোন সাকেরা বেগম (৩৪), ভাই জাহেদ মিয়া (২০) ও কাজিন রাশেদ আহমেদ (২০), পাশের ফ্লাটের বাসিন্দা টিউবওয়েল ঠিকাদার আব্দুল লতিফ (৫০), স্ত্রী রাহেলা বেগম (৪০), তার দুই কন্যা সীমা আক্তার (২৩) ও রীমা আক্তার (১৭), একই দালানের উপর তলার ফরিদ মিয়া (৫০) ও স্ত্রী ও ৪ ছেলে- এদের নাম জানা যায়নি। পরিবার ৩টি জনৈক মিলন মিয়ার এই বাসায় ভাড়া থাকতো।
খালেদ মিয়া’র ভগ্নিপতি বাকের মিয়া জানায়, রাত ১২ টার দিকে পরিবারের লোকজন ঘুমিয়ে পড়লে ভোর চারটার দিকে খালেদ মিয়া কিছুটা সুস্থ অবস্থায় জেগে উঠেন। এরপর পরিস্থিতি বুঝে তার ফেসবুকে বিষয়টি জানিয়ে একটি ষ্ট্যাটাস ও একইসাথে ৯৯৯ ফোন দেন। খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক শ্রীমঙ্গল থানার পুলিশ এসে খালেদ মিয়া ও তার পরিবারের ৫ সদস্যকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। বাকের মিয়া জানান রান্না ঘরের জানালার গ্রীল ভেঙ্গে ডাকাতরা ভেতরে প্রবেশ করে আলমিরা ভেঙ্গে ব্যবসার নগদ ৫ লক্ষ টাকা ও প্রায় ৫ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে গেছে। পুলিশের উদ্ধার কাজের সময় পাশের ও উপরের ফ্লাটের বাসিন্দারা জেগে চিৎকার করলে পরিবার দুটির আরো ১১ সদস্যকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠয়ে দেয় পুলিশ। এর মধ্যে আব্দুল লতিফের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এমএ কাইয়ূম নামে স্থানীয় এক প্রতিবেশী জানান খালেদ মিয়ার বাসা ছাড়া অপর দুই বাসার কোন কিছু খোয়া যায়নি।
শ্রীমঙ্গল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবির বলেন, সন্ধ্যার কোন এক সময় দুষ্কিৃতিকারীরা রান্নাঘরের জানালা দিয়ে খাবারে চেতনানাশক স্প্রে করে থাকতে পারে। রাতে এ খাবার খেয়ে এই তিনটি পরিবারের সদস্যা অচেতন হয়ে পড়ার সুযোগে জানালার গ্রীল ভেঙ্গে খালেদ মিয়ার বাসার আলমিরা থেকে নগদ টাকা ও স্বর্নালঙ্কার চুরির ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। এ নিয়ে পুলিশ সক্রিয়। অপরাধীদের আটকের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।
|