মুক্তকথা প্রতিবেদন॥ এরিক গর্ডন। একটি নামই শুধু নয় একটি প্রতিষ্ঠান। কেমডেনের সকল মহলে বিশেষ করে সংবাদপত্র আঙ্গিনার সকলেই এই এক নামে তাকে চিনতো। মুলতঃ বাম রাজনীতির মানুষ। বৃটেনের শ্রমিক রাজনীতির ধারায় কিছুটা ধনবাদী মানসিকতা ঢুকে পড়ায় সরাসরি রাজনীতি থেকে সরে এসে সংবাদপত্র প্রকাশনার অঙ্গনে নিজেকে জড়িয়ে নেন প্রগতিশীল রাজনীতির ধারায় টিকে থাকার কল্যাণী মানসে। চলে গেলেন সেই মানুষটি উননব্বই বছর বয়সে। তার এই দীর্ঘ জীবনের পথ পরিক্রমায় পেয়েছেন নগন্য কিন্তু দিয়েছেন এবং রেখেগেছেন অমূল্য এক সম্পদ, একখানা সুপ্রতিষ্ঠিত সংবাদপত্র। যে নাম কেমডেনের সকল মানুষের মুখে মুখে। কেমডেনের সকল সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে সুপরিচিত, নন্দিত সংবাদপত্র “কেমডেন নিউ জার্ণাল”। তার সৃষ্টিশীল চিন্তাধারায় প্রতিষ্ঠিত “কেমডেন জার্ণাল”ই মৃত্যুর পর তাকে বলেছে “লেখা-লেখির কিংবদন্তী”! হ্যাঁ ঠিকই তিনি ছিলেন অত্রাঞ্চলে লেখা-লেখির বা কালির জগতের এক কিংবদন্তীর মানুষ। তারই সৃষ্টিশীল চিন্তার ফসল বিনা খরচে অর্থাৎ নিখরচায় কেমডেনের সকলেই পড়তে পারবেন সংবাদপত্র। আর সেই সংবাদপত্রই হলো “কেমডেন নিউ জার্ণাল” যার তিনিই ছিলেন ব্যতিক্রমী অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক। একটানা দীর্ঘ আটত্রিশ বছর তিনি সম্পাদনা করে গিয়েছেন নিজের শিশুপুত্রের আদরে এই পত্রিকাখানা। সম্পাদক এরিককে নিয়ে কেমডেন নিউ জার্ণালে যৌথভাবে লিখেছেন রিচার্ড ওসলি, টম ফুট ও ডন কেরিয়ার। তাদের সে লেখা থেকে যা জানা যায়, তা’হলো- সে ছিল ১৯৮০ সাল। পুরোনো কেমডেন জার্ণাল পত্রিকার ৯জন সাংবাদিককে ছাটাই করা হয়। সেই থেকে শুরু ছাটাই বিরুধী আন্দোলন। এরিক সক্রিয়ভাবে সে আন্দোলনে গতি সৃষ্টি করেন। ওখান থেকেই ১৯৮২ সালে পৌঁছে জন্ম নেয় ‘কেমডেন নিউ জার্ণাল’। এরিক হন তার প্রথম সম্পাদক। এরিকের চিন্তাজগতে কাজ করতো সাধারণ মানুষের জীবন ও জীবিকা। কেমডেন জার্ণাল নামের এই সংবাদপত্রটি নিয়ে এরিক ভাবতেন, তিনি চাইতেন কেমডেন জার্ণাল হবে গণমানুষের সংবাদপত্র। আরো স্পষ্ট কথায় বললে, কেমডেন জার্ণাল হবে পাঠকের সংবাদ পত্র। আর এই পত্রিকাও কাজ করবে মানুষের কল্যাণে তার পাঠকদের জন্য। মালিক পক্ষের জন্য কোন ধরনের লাভ বা মুনাফা অর্জনের তাগিদে নয়। পত্রিকার কাজে বা অফিসে তিনি ‘বস’ শব্দটি ব্যবহারে কখনই অনুরাগী ছিলেন না, বরং তিনি মনে করতেন পাঠকগনই সংবাদপত্রের মূল মালিক এবং সে বাণীকে সামনে রেখেই তিনি কাজ করে গেছেন আমৃত্যু। তার এই মত তাকে আমৃত্যু পথ দেখিয়ে নিয়ে গেছে। |
|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
কেমডেন জার্ণালে লেখা তার প্রথম ছেলে কিম-এর রচনা থেকে জানা যায় এরিক যেদিন মারা যান সে লগ্নটি ছিল ইয়াহুদীদের পালিত পবিত্র ‘ইস্টার মানডে’। এরিক, ধর্মে ইয়াহুদী সম্প্রদায়ের মানুষ ছিলেন। তিনি ব্যক্তি স্বাতন্ত্রে বিশ্বাসী মানুষ ছিলেন, ছিলেন একজন কম্যুনিস্ট। এরিকদের বাড়ী ছিল উত্তর মানচেষ্টারে। পারিবারিকভাবে এরিখরা অর্থনৈতিক দিক থেকে সংকটে ছিলেন কিন্তু সাংস্কৃতিক দিক থেকে ছিলেন খুবই সমৃদ্ধ একটি পরিবার। ঘরে থাকতো হরেক রকমের বাদ্যযন্ত্র। এরিকের বাবা শাম মিউজিক হলে এক্সজিলোফোন বাজাতে ভালবাসতেন। এরিক তার বড় ভাই জেফরি’র কথায় রাব্বি প্রশিক্ষণ পরিত্যাগ করে বেরিয়ে আসেন এবং কম্যুনিষ্ট চিন্তাধারায় উজ্জ্বীবিত হন। কারণ তার বড় ভাই ছিলেন একজন ত্যাগী কম্যুনিষ্ট। ১৮ বছর বয়সে এরিক মানচেষ্টারের ইয়ঙ্গ কম্যুনিষ্ট লিগে যোগ দিয়েছিলেন। এরিক বলেছিলেন তিনি এক ধর্ম বদলিয়ে আরেকটি নিয়েছেন। যুদাইজম-এর জন্য মার্ক্সিজম! |
|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||