বিশেষ বার্তাপরিবেশক।। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন উদ্যোগ, গণমাধ্যমের প্রচার-প্রচারণা এবং গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্পের নানাবিধ কার্যক্রমের ফলস্বরূপ ২০১৯ সালের জুলাই মাসে প্রকল্পাধীন চাঁদপুরের ৪৪টি গ্রাম আদালতে এ যাবৎ কালের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক মামলা দায়ের ও নিস্পত্তি হয়েছে। শুধু তাই নয়, নিস্পত্তিকৃত মামলার রায়ও সর্বোচ্চ সংখ্যক বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
২০১৭ সালের জানুয়ারিতে চাঁদপুরে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্পের কাজ শুরু করা হলেও মামলা গ্রহণ শুরু হয় জুলাই’১৭ মাস হতে। এই হিসেবে মোট ২৫ মাসের মামলা পরিসংখ্যান আমাদের হাতে রয়েছে। ২০১৭ সালের জুলাই হতে ২০১৯ সালের জুলাই পর্যন্ত মোট ৪,৭৪৬ টি মামলা দায়ের হয়েছে। এ তথ্য মতে প্রতি মাসে প্রতি ইউনিয়নে গড়ে ৪.৩ টি মামলা দায়ের হয়।
২০১৯ সালের জুলাই মাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক মোট ৪৪৭ টি মামলা দায়ের হয়েছে এবং নিস্পত্তি হয়েছে ৪৪৬ টি মামলা। এ হিসেবে প্রতি ইউনিয়নে গড়ে মামলা দায়ের হয় ১০.১৬ টি যা এ যাবৎ কালের মাসিক গড় মামলার প্রায় আড়াই গুণ বেশী। জুলাই মাসের দায়েরকৃত মামলার বিপরীতে যে সংখ্যক মামলা নিস্পত্তি হয়েছে তাতে মামলা নিস্পত্তির শতকরা হার দাঁড়ায় প্রায় ৯৯.৭৮ ভাগ।
গ্রাম আদালত আইন ২০০৬ (সংশোধন ২০১৩) অনুযায়ী এ মামলাগুলো নিস্পত্তি করার জন্য (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) গ্রাম আদালতে বিচারিক-প্যানেল গঠন করা হয়। জুলাই মাসে এই বিচারিক প্যানেলে সদস্য হিসেবে মোট ২৩৯ জন অংশগ্রহণ করেন যাদের মধ্যে ৩৪ জন নারীও ছিলেন। দিন দিন গ্রাম আদালতের বিচারিক-প্যানেলে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। এর ফলে এখানকার বিচারিক পরিবেশ নারী-বান্ধব হয়ে উঠছে। গ্রাম আদালতে নারী বিচার-প্রার্থীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০১৭ সালের জুলাই হতে ২০১৯ সালের জুলাই পর্যন্ত মোট ১,৯০,২৩,০৪২ (এক কোটি নব্বই লক্ষ তেইশ হাজার বিয়াল্লিশ) টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে আদায় হয়েছে যা আদালতের বিধান অনুযায়ী মামলার ক্ষতিগ্রস্থদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ হিসেবে প্রকল্পাধীন চাঁদপুরের ৪৪টি ইউনিয়নে প্রতি মাসে গড়ে আদায় হয়েছে ৭,৬০,৯২১ (সাত লক্ষ ষাট হাজার নয় শত একুশ) টাকা মাত্র। অথচ এই জুলাই’১৯ মাসেই আদায় হয়েছে মোট ২০,৯৮,১৫০ (বিশ লক্ষ আটানব্বই হাজার এক শত পঞ্চাশ) টাকা যা এ যাবৎ কালের মাসিক গড় আদায়ের প্রায় আড়াই গুণ বেশী।
প্রসঙ্গতঃ বাংলাদেশ সরকার, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন এবং ইউএনডিপি -এর সহায়তায় ও অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে স্থানীয় সরকার বিভাগ “বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (২য় পর্যায়) প্রকল্প” চাঁদপুর সহ দেশের মোট ২৭ জেলায় বাস্তবায়ন করছে। এ প্রকল্পের মূল ভিত্তি হল: গ্রাম আদালত আইন ২০০৬(সংশোধন ২০১৩) এবং গ্রাম আদালত বিধিমালা ২০১৬।