1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
কিশোর-কিশোরী ক্লাব : প্রকল্পের টাকা হরিলুট - মুক্তকথা
রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:২২ অপরাহ্ন

কিশোর-কিশোরী ক্লাব : প্রকল্পের টাকা হরিলুট

হোসাইন আহমদ
  • প্রকাশকাল : বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৩
  • ১২৪৩ পড়া হয়েছে

মৌলভীবাজারে প্রকল্পের টাকা হরিলুট

শিক্ষার্থীদের দেয়া হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর নাস্তা

মৌলভীবাজারে কিশোর-কিশোরী ক্লাব প্রকল্পের টাকা হরিলুট। নাস্তার অর্ধেকেরও বেশি টাকা আত্মসাৎ করছেন সংশ্লিষ্টরা। ক্লাব সদস্যদের নাস্তা হিসাবে দেয়া হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিহীন খাদ্য। শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক বিকাশ, বাল্যবিয়ে রোধ, গান-আবৃত্তি ও ক্যারাটে শেখানোর জন্য ২০১৮ সালে মহিলা অধিদপ্তর এই প্রকল্প গ্রহণ করে। জেলা ও উপজেলা মহিলা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা এবং ফিল্ড সুপারভাইজারদের অনিয়মে মৌলভীবাজারে ভেহেস্তে গেছে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভুক্ত এই মহতি প্রকল্প। যুগান্তরের ১ মাসের অনুসন্ধানে এমন চিত্র উঠে এসেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, কিশোর-কিশোরদের ক্লাব মুখি করার জন্য প্রতিদিন প্রত্যেক সদস্যের জন্য ৩০ টাকা মূল্যের স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিগুণাগুনসম্পন্ন নাস্তা বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু কিশোর-কিশোরদের নাস্তাতেই হরিলুট করছেন কর্মকর্তারা। স্বাস্থ্যসম্মত নাস্তার পরিবর্তে দেয়া হচ্ছে নি¤œমানের বিস্কুট, জুস ও ড্রাইকেক। ক্লাবে ৩৫ প্যাকেট নাস্তার পরিবর্তে দেয়া হচ্ছে ১৫/২০ প্যাকেট। যা খেয়ে কিশোর কিশোরীরা অসুস্থ্য হচ্ছে। বিভিন্ন জাতীয় দিবস, ক্রীড়া প্রতিযোগীতা ও ক্লাব ম্যানেজমেন্ট কমিটির বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু বরাদ্দের এক তৃতীয়াংশও ব্যয় করা হচ্ছে না। প্রতি মাসে এ প্রকল্প থেকেই কয়েক লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করছেন সংশ্লিষ্টরা। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কারণে প্রকল্পের সুফল পাচ্ছেন না জেলার কিশোর-কিশোরীরা। যার ফলে ক্লাবে কিশোর-কিশোরীদের উপস্থিতি কমেছে।

মৌলভীবাজার মহিলা অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার প্রতিটি পৌরসভা ও ইউনিয়নে একটি করে পুরো জেলায় ৭২টি ক্লাব চলমান। সপ্তাহে শুক্র-শনিবার ৩০ জন কিশোর কিশোরীকে এই ক্লাবে সাংস্কৃতিক নানা বিষয় শেখানোর কথা। প্রতিটি ক্লাবের জন্য একটি হারমোনিয়াম, তবলা, ক্যারাম, লুডু দাবাসহ পাঁচ হাজার টাকার বই ও সাময়িকী দেয়া হয়েছে। গান-আবৃত্তি শেখানোর জন্য আছেন দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক। জেলায় রয়েছেন ১২জন জেন্ডার প্রোমোটর এবং ২জন ফিল্ড সুপারভাইজার। ১জন সুপারভাইজারকে দেয়া হয়েছে মোটরসাইকেল। যার জ্বালানি খরচও দেয়া হয় এই প্রকল্প থেকে। কিন্তু ফিল্ড সুপারভাইজাররা ঘরে বসেই বেতন তুলছেন।

সরেজমিন প্রকল্প কার্যক্রম দেখতে ১০ মার্চ মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার খলাগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩.১৫ মিনিটে কবিতা আবৃতি শিক্ষক সুদিপ্তা পালকে পাওয়া যায়নি। দেখা যায় কিশোর কিশোরীরা নিজেরাই গান করছে। ক্লাবের সদস্য জান্নাতুল বলেন, আমরা ২টায় এসেছি কিন্তু ম্যাম এখনও আসেননি। রাজনগর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ৩৬ জন কিশোর-কিশোরী উপস্থিত। এর মধ্যে নিয়মিত ৯জন। ২৭জন ভর্তি হওয়ার জন্য ওই দিন নতুন এসেছিলেন। ৩.৩০ মিনিটে মহলাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় ৬ জন ক্লাব সদস্য বসে গল্প করছে। তারা বলে আবৃত্তি শিক্ষক শিমুল ভট্টচার্য কিছু সময় থেকে চলে গেছেন। ওই দিন রাজনগর উপজেলার প্রতিটি ক্লাবে নাস্তা হিসেবে দেয়া হয়েছিল ৫ টাকা ধরের বিস্কুট ও ১০ টাকা ধরের জুস। ওই দিন কুলাউড়া উপজেলায় ৫ টাকা ধরের লেক্সাস বিস্কুট ও ১০ টাকা ধরের রুটি দেয়া হয়। ১৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম দিনেও ক্লাবে নাস্তা দেয়া হয়নি। কুলাউড়া উপজেলার সদপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রশিক্ষক নান্টু কুমার দাশ বলেন, ১৭ মার্চ নাস্তা দেয়া হয়নি। শিক্ষার্থীদের কেক দিয়েছি। কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংঙ্গিত শিক্ষক রিয়াজ উদ্দিন বলেন, “২০/২৫ প্যাকেট নাস্তা দেয়া হয়। অনেক সময় নাস্তা অর্ধেক করে শিক্ষার্থীদের দিতে হয়। ১৭ মার্চ নাস্তা দেয়া হয়নি। তিনি আরও বলেন, বর্তমান উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্ত যোগদানের পর থেকেই এমনটি হচ্ছে। সভায় কথা বলার পরেও ওই কর্মকর্তা আমলে নিচ্ছেন না।

নাম গোপন রাখার শর্তে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার একজন শিক্ষিকা বলেন, ২৪ ও ২৫ ফেব্রুয়ারী নাস্তা দেয়া হয়নি। এরকম প্রায় দিন ক্লাবে নাস্তা দেয়া হয়নি। ৩৫টি প্যাকেটের জায়গায় দেয়া হয় ১৫/২০টি। মাঝে মধ্যে প্যাকেট ভাগ করে শিক্ষার্থীদের দিতে হয়। অফিস উপকরণ চাওয়া হলে সময় মতো পাইনি। কয়েক দিন বলে না পাওয়ার পর আমরা নিজেদের টাকা দিয়ে কিনি।

১০ মার্চ ফিল্ড সুপারভাইজার (বড়লেখা, কুলাউড়া ও জুড়ী) ইসমা আক্তার পরিদর্শনে কোন সেন্টারে আছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আজ আমি কোথাও যাইনি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ছুটি নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সমস্যার কারণে ছুটি নিতে পারিনি। বড়লেখা, কুলাউড়া ও জুড়ী’র একাধিক জেন্টার প্রমোটার বলেন, ফিল্ড সুপারভাইজার ইসমা আক্তার যোগদানের পর থেকে মাত্র ১ দিন কুলাউড়া ও বড়লেখায় গিয়েছেন। বাড়িতে বসে ফোনে খোঁজ খবর নেন। একই দিন ফিল্ড সুপারভাইজার (শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জ, মৌলভীবাজার সদর, রাজনগর) দেবজিৎ দে কোথায় পরিদর্শনে আছেন জানতে চাইলে তিনি প্রথমে কেন্দ্রের নাম বলতে পারেননি। কিছু সময় পরে বলেন খাতা দেখে বলতে হবে। খাতা দেখে তিনি বলেন, কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর উচ্চ বিদ্যালয় ক্লাবে গিয়েছেন। অথচ কোনো মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন করা হয়নি। সবকটি ক্লাব প্রাইমারী বিদ্যালয়ে স্থাপন করা হয়েছে। এর আগের সপ্তাহে কোথায় গিয়েছিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই মুহুর্তে কেন্দ্রের নাম বলতে পারছি না।
বড়লেখা ও কুলাউড়ার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্ত সৌমিত্র কর্মকার বলেন, খোঁজ নিয়ে দেখব কোথাও কি হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে নিয়মীত বরাদ্দের নাস্তার প্যাকেট দেয়া হয়েছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোথাও কেক, বরই ও মিষ্টি ছিল।

জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শাহেদা আক্তার বলেন, প্যাকেট কম দেয়া হয় এটা ঠিক। কিন্তু আমি সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছি। নি¤œমানের নাস্তার বিষয়ে তিনি বলেন, কুলাউড়া ও বড়লেখায় একটু খারাপ নাস্তা দেয়া হচ্ছে শুনার পরপরই অফিসারকে সতর্ক করেছি। ফিল্ড সুপারভাইজাররা সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এদেরকে নিয়ে বসব।

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT