শ্রীমঙ্গলে পাক বাহিনীর গণহত্যায় শহীদ এক মুক্তিযোদ্ধার জাতীয় স্বীকৃতির দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে তাঁর পরিবার। সোমবার দুপুরে শহরের একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে এই দাবী জানান, উপজেলার রাজঘাট চা বাগানের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পবন কুমার তাঁতীর ছেলে তপন কুমার তাঁতী।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে তার পিতা শহীদ পবন কুমার তাঁতী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এম এ অধ্যয়নকালীন মুক্তিযুদ্ধের ডাকে সারা দিয়ে এলাকায় এসে স্থানীয়দের সংগঠিত করেন এবং প্রশিক্ষণের জন্য ভারত চলে যান। ভারত থেকে ফেরত এসে তিনি পাক বাহিনীর অবস্থান ও কার্যক্রম সম্পর্কে খোঁজ খবর নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়মিত তথ্য সরবরাহ করতেন।
তার দেয়া তথ্যে মুক্তিযোদ্ধারা পাক বাহিনীর অনেক দূর্গ ধ্বংস করে। এক সময় রাজাকারদের মাধ্যমে পাক বাহিনী তার পিতাকে ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান ও অন্যান্য তথ্য আদায়ের জন্য পাক বাহিনী পবন কুমার তাঁতিকে এক সপ্তাহ ধরে অমানুষিক নির্যাতন করে। তথ্য প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করায় পাক বাহিনী ১৯৭১ সালের ৫ ডিসেম্বর শ্রীমঙ্গল ওয়াপদা ক্যাম্পে পবন তাঁতিকে হত্যা করে বালুর স্তুপে পুতে রাখে। পরে তারা অনেক খোঁজাখুঁজির পর লাশ উদ্ধার করে রাজঘাট চা বাগানে সমাহিত করে। পরবর্তীতে এখানেই স্মৃতি স্তম্ভ স্থাপন করা হয়।
তাঁর ছেলে আরো বলেন, ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু তার মা পূরবী তাঁতীকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী হিসেবে এক হাজার টাকার একটি চেক প্রদান করেন। তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর ধরে আমার মা তার স্বামীকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতির জন্য অফিসে অফিসে ধরনা দিয়ে প্রয়াত হয়েছেন কিন্তু স্বীকৃতি আদায় করতে পারেননি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে তার পিতার ন্যায্য অধিকার ও মর্যদা দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী ও স্থানীয় এমপিসহ প্রশাসনের সকলের নিকট জোর দাবী জানান।
এসময় পরিবারের দাবীর স্বপক্ষে বক্তব্য রাখেন, শহীদ পবন কুমার তাঁতীর সহযোগী বীরমুক্তিযোদ্ধা রাম নারায়ন পাল, বড় ভাই নিরঞ্জন কুমার তাঁতী, দৌহিত্র সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পল্লব কুমার তাঁতী, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মিনা রবি দাশ, সমাজকর্মী বিশ্বজিৎ তাঁতী, শিক্ষক ধনঞ্জয় গোয়ালা।