মৌলভীবাজারে হঠাৎ করেই বাড়ছে চোখ ওঠা(চোখের প্রদাহ) রোগীর সংখ্যা। আক্রান্তদের বেশির ভাগই শিশু। তবে সব বয়সের মানুষকেই আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে। প্রত্যেকটি এলাকায় এই রোগে আক্রান্তদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই স্থানীয় কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে বেড়েছে এ রোগীর সংখ্যা। চিকিৎসকরা বলছেন, গরমে আর বর্ষায় চোখ ওঠার প্রকোপ বাড়ে। একে বলা হয় ‘কনজাংটিভাইটিস’ বা চোখের আবরণ প্রদাহ। সমস্যাটি চোখ ওঠা নামেই পরিচিত। রোগটি ছোঁয়াচে। ফলে দ্রুত অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। “কনজাংটিভাইটিস”এর লক্ষণ হলো চোখের নিচের অংশ লাল হয়ে যাওয়া, চোখে ব্যথা, খচখচ করা বা অস্বস্তি। প্রথমে এক চোখ আক্রান্ত হয়, তারপর অন্য চোখে ছড়িয়ে পড়ে। এ রোগে চোখ থেকে পানি পড়তে থাকে। চোখের নিচের অংশ ফুলে ওঠে এবং লাল হয়ে যায়। চোখ জ্বলে ও চুলকাতে থাকে। আলোয় চোখে আরও অস্বস্তি হয়। “কনজাংটিভাইটিস” রোগটি আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে ছড়ায়। রোগীর ব্যবহার্য রুমাল, তোয়ালে, বালিশ অন্যরা ব্যবহার করলে এতে আক্রান্ত হয়। এ ছাড়া কনজাংটিভাইটিসের জন্য দায়ী ভাইরাস বাতাসের মাধ্যমেও ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তির আশপাশে যারা থাকে, তারাও এ রোগে আক্রান্ত হয় বলে জানান চিকিৎসকরা। রায়পুর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী আয়শা জান্নাত বলেন, ‘চোখ ওঠার পর থেকেই চোখে কাটা কাটা লাগে এবং চুলকায়। আলোর দিকে থাকাতে পারি না। ঘুম থেকে উঠে দেখি দু’চোখ জট লেগে আছে।’ বড়কাপন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র সামির আহমদ জামি বলেন, ‘চার দিন আগে প্রথমে আমার চোখ ওঠে। দুই দিন পরে আমার আপুরও চোখ ওঠে। চোখ ওঠার পর পরিবারের পক্ষ থেকেই আমাদেরকে স্কুলে যেতে নিষেধ করা হয়।’ রায়পুর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার শিক্ষক মাও. আবু জাফর সাদেক খান বলেন, ‘প্রথমে আমি আক্রান্ত হই। এরপর পরিবারের অন্যরাও আক্রান্ত হন। যে সকল ছাত্রছাত্রীরা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদেরকে ক্লাসে না আসার জন্য বলা হচ্ছে।’ আজ(২২ সেপ্টেম্বর) বৃহস্পতিবার সিভিল সার্জন মৌলভীবাজার ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দীন মুর্শেদ বলেন, ‘চোখ ওঠা রোগকে আমরা ভাইরাল কনজাংটিভাইটিস বলে থাকি। এটা সিজনাল একটি রোগ। গরমে এই রোগ বেশী হয়। ঋতু পরিবর্তনের ফলে এই ভাইরাল ইনফেকশন হচ্ছে। আক্রান্ত রোগী ঘরে থাকাটাই ভালো আর বাহিরে গেলে কালো চশমা ব্যবহার করতে হবে। যারা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁরা সাপ্তাহ- দশ দিনেই সুস্থ হয়ে যাবেন। যাদের বেশি সমস্যা হচ্ছে, তাঁরা চক্ষু হাসপাতাল এবং কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাই সঠিক পরিসংখ্যানটা এখনই বলা যাচ্ছে না।’ |