শহরের ব্যস্ততম এলাকায় দেড় কোটি টাকার জমি দখলে আদালতে মামলা চলছে জেনেও ১১মাস আগে অপসারণের নোটিশ দেয়া হয় মামলার কারণে অনেকেই ভূমি দখলে রাখার সুযোগ নিচ্ছেন |
মৌলভীবাজার শহরের আদালত সড়কের জজ আদালতের বিপরীতে দীর্ঘদিন যাবৎ বেদখলে থাকা জেলা প্রশাসনের ভূমি থেকে নিজেদের স্থাপনা অপসারণ করার নোটিশের ১১ মাস অতিবাহিত হলেও মামলার কারণ দেখিয়ে ভূমি থেকে সরছেন না দখলদারেরা। এদিকে কোন এক অজ্ঞাত কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও উদ্ধারকাজে এগিয়ে আসছেন না। ভূমি উদ্ধার না হওয়াতে আদালত এলাকাসহ মৌলভীবাজার শহরের মানুষ নানা কথা বলতে শুরু করেছেন। জেলা প্রশাসন অফিস থেকে দেয়া গেল বছরের ১৫ মে তারিখে সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) মোঃ আব্দুল হক’র স্বাক্ষরিত একটি স্মারকে দেওয়া নোটিশ অমান্য করে এখনো আধাপাঁকা স্থাপনায় ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন দখলদারেরা। কোন জোরে তারা জমি ছাড়ছেন না এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সকল মহলে। এদিকে শহরের সবচেয়ে ব্যস্থতম সড়কের ওই জায়গা কয়েক যুগ যাবৎ বেদখলে থাকায় প্রতিনিয়ত যানঝট লেগেই আছে। এতে দায়সাড়া কাজ করছেন সংশ্লিষ্টরা। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলা ভূমি অফিসের দুটি স্মারকের মুলে প্রেরিত প্রতিবেদন অনুযায়ী মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক নিশ্চিত হয়েছেন যে, মৌলভীবাজার সদর উপজেলাধীন ১০৫ নং জেএলস্থিত মৌলভীবাজার মিউনিসিপ্যালিটি মৌজার ৭৮২৩, ৭৮২৪, ৬৮২৫, ৭৮২৬, ৭৮২৭, ৭৮২৮, ৭৮২৯, ৭৮৩০, ৭৮৩১, ৭৮৩২, ৭৮৩৩, ৭৮৩৪, ৭৮৩৫, ৭৮৩৬ এই ১৪টি দাগের ৯.৮৪ শতক ভূমি দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করেছেন ১৮ ব্যক্তি। সংশ্লিষ্ট কার্যালয় সূত্র আরও জানায়, সরকার ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের ভুমি ও ইমারত(দখল ও পুনরুদ্ধার) অধ্যাদেশ, ১৯৭০ এর ৫ (১) ধারা এবং তৎসহ পিও ৮৫/৭২ অনুযায়ী নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে এই তফসিল বর্ণিত ভূমি হতে স্থাপনা অপসারণপূর্বক অবৈধ দখল ত্যাগ করার জন্য অবৈধ দখলদারদের অনুরোধ করা হয়।
গেল ১৫ মে সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) মোঃ আব্দুল হক স্বাক্ষরিত একটি স্মারকে তিনি উল্যেখ করেন, স্মারক নোটিশের ৩০দিনের মধ্যে বর্ণিত ভূমির অবৈধ দখল ত্যাগ এবং স্থাপনা অপসারণ করতে সক্ষম না হলে জেলা প্রশাসক, মৌলভীবাজার কর্তৃক নিয়োজিত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট’র উপস্থিতিতে ভূমি হতে বেদখলকারীদের উচ্ছেদক্রমে তা সরকারের খাস দখলে আনা হবে বলে সতর্ক করা হয়। অবৈধ দখল অপসারণের নোটিশ প্রাপ্তরা হলেন-তোফাজ্জল হোসেন মনির, আলাল মিয়া, মফিজ মিয়া, মুজিবুল হক, মো ইসমাইল হোসেন, চন্দন মালাকার, রাজু মালাকার, মো ময়নুল ইসলাম, রহমান আহমদ, রকিব হোসেন, দুলন বৈদ্য, সৈয়দ ফারুক আহমদ, আরিফুর রহমান তুহিন, আজম রহমান, হাবিবুর রহমান, মানিক মিয়া, মো জিতু মিয়া, শিবু চন্দ। এদিকে স্থানীয় অনেকেই জানিয়েছেন, শহরের সবচেয়ে ব্যস্ততম এলাকার এ জমির মূল্য আকাশসম। তারা জানিয়েছেন, প্রতি শতক জমি সর্বনিম্ন ১৫ লাখ টাকা ধরা হলে ৯.৮৪ শতকের দাম পড়ে ১ কোটি ৪৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা। পক্ষান্তরে দখল ছেড়ে কেন যাচ্ছেন না এমনটা জানতে চাইলে অত্র দাগের রাকিব স্টোর’র সত্বাধীকারী মোঃ ইসমাইল হোসেন বলেন, “এই ভূমি আমার অনেক আগের কাগজ করা। বহু আগে বিনিময়ের মাধ্যমে পেয়েছি। তিনি বলেন, এখানকার ৫টি কক্ষের ভুমি নিয়ে আদালতে মামলা রয়েছে”। অপর দখলদার সমুজ আলীর ছেলে মোঃ ময়নুল ইসলাম বলেন, “জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে অপসারণের নোটিশ পাবার পর আদালতে আমরা মামলা দায়ের করেছি”। মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোসা. শাহীনা আক্তার বলেন, শুনেছি জমি নিয়ে একটি মামলা রয়েছে। সহকারি কমিশনার(ভূমি) সদরের সাথে কথা বলে বিষয়টি দেখছি। |