* এইত সেদিন যৌন নির্যাতন, ধর্ষন ও ধর্ষকের বিচারের দাবিতে সমগ্র দেশ ছিল মিছিলে মিছিলে, টক/ঝাল/মিষ্টি আলোচনায় উথাল পাতাল। দ্বিতীয়ত:
* দুর্নীতি ও দুর্নিতীর মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ এবং বিদেশে পাচারের বিরোদ্ধে প্রবাসীদের “দুর্নিতীবাজ রোখ দেশ বাঁচাও” আন্দোলনে দেশের গনমানুষের সম্পৃক্ততা দেশে বিদেশে দুর্নিতীবাজদের বিরোদ্ধে সামাজিক আন্দোলন জোরদার হচ্ছিল।
* তৃতীয়, সাম্প্রতি সরকারের দুর্নিতী বিরোধী জিরো টলারেন্স নিতীর কারনে আইন শৃংখলা বাহিনীর তৎপরতা গনমানুষের মধ্যে ঘুষ ও ঘুষখোরদের বিরুদ্ধে জনস্বচেতনা বৃদ্ধিপেয়েছে।
সার্বিক ভাবে ঘুষ, সন্ত্রাস, দুর্নিতীমুক্ত সমাজ ও আইনের শাসনের সোনার বাংলাদেশের আকাংখ্যা জার্গত হচ্ছিল।
বাংলাদেশ উন্নয়নের অর্গযাত্রায় সকল রেকর্ড ভংগকরে এগিয়ে যাচ্ছে অপ্রতিরোদ্ধ গতিতে। এসময়ে ওরা কারা ধর্মের নামে উন্মাদনা ছড়ানোর চেষ্টা করছে। ধর্মান্ধরা নিজ স্বার্থে, ব্যাক্তি বা গোষ্টির স্বার্থ রক্ষায় নিজেদের বিক্রি করে অনৈতিক ভাবে ধর্মভীরু সাধারন মানুষকে ধর্মীয় স্পর্শকাতর বিষয়ে বিক্রিত ব্যাখ্যা ও বক্তব্য দিয়ে উত্তেজিত করে সমাজ ও রাষ্ট্রে বিশৃংখলা সৃষ্টির চেষ্টা করে। এই সকল নিতীহীন ধর্মান্ধদের পিছনে ঘুষখোর, দুর্নিতীবাজ, ধর্ষক ও বলাৎকারদের সমর্থন ও আর্থিক সহযোগীতায় এক বির্বতকর পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে।
ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার – বর্ণ, জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে। কট্টোর, গোঁড়া, ধর্মান্ধ ধর্মের নামে অর্ধম করে ধর্মীয় রাজনিতীর মাধ্যমে ধর্মকে বিতর্কিত করে তোলে। ধর্মের নামে উগ্রবাদী সন্ত্রাসীদের নগ্ন হামলা এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের ঘৃন্য রাজনীতির আস্ফালন দিনে দিনে বেড়েই চলছে। স্বাধীন উত্তর বাংলাদেশে ধর্মীয় রাজনিতী নিষিদ্ধ ছিল। তাই ধর্মীয় রাজনিতী নিশিদ্ধ করা হউক এবং বাহাত্তর এর সংবিধান এ ফিরে যাওয়া হউক। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার এবং অসাম্প্রদায়ীক চেতনা জার্গত করার জন্য ঘৃনা ও বিদ্দেশ ছড়ানোর মত (ধর্মীয়) আলোচনা/সভা নিষিদ্ধ্ব করা হউক।
আওয়ামী লীগ বা হিতাকাঙ্খীরা বা প্রগতিশীলরা কি ভাবছেন? দেশ চলছে আমলাদের অধীনে, রাজনৈতিক দীনতার সুযোগে চারিদিকে লোটপাটে ব্যস্ত সবাই। একজন আমলাও কোন বিচারের মুখোমুখি হওয়ার উদাহরণ নাই। দেশের মাদ্রাসা, এতিমখানা/অনাথ আশ্রম সহ নিন্মআয়ের সকল শিশুর ৫বছর বয়স থেকে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত দ্বায়ীত্ব সরকারের, শিক্ষা/শিক্ষা ভাতা এবং তদারকীর দ্বায়ীত্ব সরকারকে নিতে হবে। পরিবার পরিকল্পনা কে উত্সাহিত করা। মাদ্রাসা/এতিমখানা/আশ্রম শিক্ষাকে জাতীয় শিক্ষার সাথে সংযোগ করা। এদেরকে আর গুটি হিসাবে ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া যাবে না।
ধর্মান্ধ নিতীহীন ধর্মব্যবসায়ীরা দুর্নিতীবাজদের স্বার্থ রক্ষা করছে। ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাব ব্যবহার করে ধর্মের অবমাননা করছে। সব ধর্মের কট্টোর, গোঁড়া, ধর্মান্ধরা ধর্মের নামে অর্ধম করে ধর্মীয় রাজনিতীর মাধ্যমে ধর্মকে বিতর্কিত করে তোলে। সম্প্রতি ধর্মান্ধরা ঘুষখোর, দুর্নিতীবাজ ও ধর্ষকদের রক্ষাকবজ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ধর্মান্ধরর ও দুর্নিতীবাজ এক জন আর একজনের মাসতুত ভাই।
বি: দ্র:- ধর্মান্ধতা, ঘুষ, দুর্নিতী নিয়ে লিখাটি এখানেই শেষ করার ইচ্ছা ছিল কিন্তু সম্প্রতি কালে বাংলাদেশে ভাষ্কর্য বনান মুর্তি নিয়ে যে বাদানুবাদ চলছে তা ইসলামে কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নহে। ইসলাম ধর্মে কোন মানুষের অবক্ষয়, চিত্র/ছবি প্রদর্শনের বিধান নাই, কারন যেহেতু পৃথিবীতে কিছুই স্থায়ী নহে এবং স্থান কাল পাত্র ভেদে ব্যাক্তি/সমাজ/রাষ্ট্রের মতবাদের পরিবর্তন ঘঠতে পারে তাই একজন মহামানব চিরদিন সার্বজনিন ভাবে সম্মানিত নাও হতে পারেন, মহামানবরা যাতে অসম্মানিত না হন সেই দৃষ্টকোন থেকে ইসলামে ছবিতোলার বিধান রহিত করা হয়েছে।
ইসলাম সাম্যের ধর্ম, শান্তির ধর্ম। এখানে জোর জবরদস্তির কোন স্থান নেই। ঐক্যে শক্তি, ভক্তিতে মুক্তি, আর বিচ্ছেদে বিনাশ। যে-কোন সমাজে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে একসঙ্গে কাজ করার মধ্যেই শান্তি নিহিত, যা সমাজ উন্নয়নের চাবিকাঠি।
ইসলামে শান্তির প্রথম সারির পতাকা বহন করেনআলেন ও সুফী সাধকরা, যারা এদেশে ইসলাম প্রচার করেছেন – কঠোর সাধনা, সংযম আর ধৈয্যের মাধ্যমে মানুষকে সহনশীলতা, নৈতিকতা শিক্ষা দিয়েছেন।
পাশ্চাতে সুফিবাদ একাডেমিক বিষয় হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠিত হচ্ছে, অসংখ্য অমুসলিম সুফি বিশেষজ্ঞের দ্বারা সুফিবাদের ওপর বিশ্বনন্দিত গ্রন্থ রচিত হচ্ছে। এর মূল কারণ সুফিদের জীবন সর্বদা অন্যের সেবায় নিয়োজিত ও পরমঙ্গলে নিবেদিত। ধর্মের নামে উগ্রবাদী সন্ত্রাসীদের নগ্ন হামলা এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের ঘৃন্য রাজনীতির মাধ্যমে ধর্মকে বির্তকিত করে।
ইসলাম, যেখানে একগালে চড় মারলে অন্য গাল পেতে দিতে বলতেন। যেখানে পথের কাঁটা সরিয়ে পথ চলতেন, আবার কাঁটা না দেখে কাঁটা-বিছানোকারী বুড়ির শারীরিক খোঁজ নিতেন। সাহাবা-কেরামরা কেউ শত্রুতা করলে তাহাজ্জুদের নামায পড়ে তার জন্য আল্লাহর কাছে দো’আ চাইতেন এবং চলার পথে শত্রুর সঙ্গে দেখা হলে পূর্বের চেয়ে বেশী পরিমানে সম্মান দেখাতেন। সেখানে আজ কিছু কট্টোর, গোঁড়া, ধর্মান্ধ ধর্মের নামে অর্ধম করে – অন্যের অন্ন হরণ করে, অন্যের অর্থ, জায়গা -জমি জবরদখল করে, সহায় সম্বল আত্মসাৎ করে।
একজন উত্তম মুসলমান হলো সেই ব্যক্তি যে তার জিহ্বা (কথায়) এবং হাত (কাজে) দ্বারা অন্য মুসলমানকে ক্ষতি করে না’। অথচ বর্তমানে মুসলমানরাই মুসলমানদের ক্ষতিসাধন করছে মৌলবাদের দোহাই দিয়ে। পাশ্চাত্যে অমুসলিমদের কন্ঠে ইসলাম সম্পর্কে হতাশার সুর থাকলেও আলেম ও সুফিসমাজের সহজ, সরল ও অনাড়ম্বর জীবন-প্রণালী, ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধের প্রতি অবিচল আস্থা, অন্যের ধর্ম-বিশ্বাসের প্রতি সহানুভূতি, ভ্রাতৃত্ব তথা ইসলামের মূল মর্মবাণী তাদের মনে ইসলাম সম্পর্কে অনেকটা ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে।
পাশ্চাত্যে মুসলিমদের দুর্নাম ঘুঁচাতে এবং ইসলামের প্রসারে আলেম ও সুফিদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। অথচ আমাদের দেশে ঢালাওভাবে দোষারোপ করার একটা মুদ্রারোগ আছে অনেকের মধ্যে। কতিপয় বিশেষ ও বিচ্ছিন্ন ঘটনা থেকে কোন বিষয়ের একটা সার্বিকী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা অযৌক্তিক।
প্রকৌশলী সৈয়দ আব্দুল গফ্ফার সাজু,
সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কানাডা।
সদস্য ও কাউন্সিল সদস্য, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, আই,ই,বি(৮৫-৯৯) আহব্বায়ক/সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, চট্টগ্রাম প্রকৌশল মহাবিদ্যালয় বর্তমান চুয়েট ( ১৯৭৭-৮২)
সদস্য, ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ (৭৪-৭৫)
সাংগঠনিক সম্পাদক, মৌলভীবাজার মহকুমা ছাত্রলীগ(৭২-৭৪)
[লিখাটি বেশ আগের। দেরীতে ছাপানোর জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি]
|