1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
ধর্ম ও মানব সমাজ - মুক্তকথা
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৬ অপরাহ্ন

ধর্ম ও মানব সমাজ

হারুনূর রশীদ॥
  • প্রকাশকাল : রবিবার, ১৩ জুন, ২০২১
  • ১১২৩ পড়া হয়েছে

হারুনূর রশীদ

মুসলমান মুসলমান কথা নিয়ে বেশী মাতামাতি করে আরবের মানুষজন। কারণ এটি তাদের রক্ষাকবজ। এটি আসলেই তাদের প্রথা, নিয়মকানুন তথা সমাজ ও সংস্কৃতি। সুদীর্ঘ সোয়া সাতশত বছরের মত সময় তারা অর্ধেক বিশ্ব শাসন করেছে এবং এসকল নিয়মনীতি ব্যবহার করেছে আর এর প্রচার করেছে। তাদের দীর্ঘ কালের অধ্যবসায়ে তারা সারা বিশ্বব্যাপী ধর্মের বাহন হিসেবে আরবী ভাষা ও সংস্কৃতিকে অর্ধ বিশ্বের মানুষের মাঝে ছডিয়ে দিয়েছে। অনেকটা রক্তের সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। ইতিহাসের সুদীর্ঘকালের সেই ভাঙ্গাগড়ার ভেতর দিয়ে নির্মাণ হয়েছিল ‘ইসলাম’ নামের আন্তর্জাতিকতাবাদ যা আজও শক্তি যোগায় তাদের ধমনীতে। হিন্দু-মুসলমান শব্দ দু’টি তাদের কাছেও ভাগ করে রেখে শাসন করার মত।

ধর্ম তাকেই বলা যায় যা মানুষ জন্মের পর থেকেই করতে শুরু করে। যেমন- খাওয়া, প্রস্রাব-পায়খান, হাসি-কান্না, খাওয়ার জন্য চিৎকার, অন্বেষণ, মারামারি, নারী-পুরুষের মিলন। এ পর্যন্তই ধর্ম হতে পারে। জীবন ধারনের জন্য খাদ্য উৎপাদনকে অর্থাৎ চাষাবাদকে পর্যন্ত ধর্ম বলাযায় না। কাপড় পরিধানকে ধর্মের আওতায় আনা যায় না! ধর্ম তা-ই মানুষ যা ধারণ করতে পারে। আবার কেবলই ধারণ করা নয়, মানুষের প্রকৃতিগত প্রয়োজনও বটে। বাদবাকী সবইতো মানুষের শেখানো। মানুষের লেখা। এগুলো ধর্ম নয়। হতেও পারে না। নীতিবাক্য এক বিষয় আর ধর্ম সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। জগৎ সৃষ্টির আদি থেকে সকল সৃষ্টি ও তাদের আন্দোলনের মাঝেই লুক্কায়িত রয়েছে আদি ও আসল ধর্ম। মানুষের শেখানো, মানুষের লেখা নীতিবাক্য হতে পারে, সাহিত্য হতে পারে; হতে পারে সংস্কৃতি কিন্তু ধর্ম নয়।

ধর্ম কি? ব্যাকরণের ভাষায় ধর্ম হলো- ধৃ ধাতুর সাথে ত্তৃ প্রত্যয় যোগে ধর্ম শব্দের উৎপত্তি। ধৃ মানে ধারণ, রক্ষা ও পোষণ। একই রূপের ব্যাখ্যায় ব্যাকরণ আরো বলে ধূ ধাতুর সাথে ‘মন’ প্রত্যয় যোগ হয়ে ধর্ম শব্দের জন্ম হয়েছে। যা সকলকে ধারণ ও পোষণ করে তাই ধর্ম।

যুগে যুগে জ্ঞানীগুণীগন ধর্মের যে ব্যাখা দিয়ে গেছেন তারা সকলেই একই কথা বলেছেন। মনু সংহিতায় ঋষি মনু বলেছেন-“যা সকলকে ধারণ ও পোষণ করে তাই ধর্ম।” আবার কিছুটা ভিন্ন সুরে ব্যাসদেস বলেছেন-“মনুষ্য জীবনের রীতিনীতিগুলোর নাম ধর্ম।” মহা ঋষি পতঞ্জলি বলেছেন-“যে শক্তি কোন পদার্থের গুণ সকল ধরে রাখে সেই ধরে রাখার শক্তিকেই ধর্ম বলা যেতে পারে।” জ্ঞানীদের কথা থেকে আরো জানা যায়, মানুষের মাঝে অন্তর্নিহিত যে শক্তি আছে সে শক্তি তাকে অজানা অলৌকিক কোন বিশেষ শক্তিতে উত্তীর্ণ করতে পারে। যাকে আমরা সাধারণ মানুষ ‘আধ্যাত্মবাদ’ শব্দ দিয়ে প্রকাশ করে থাকি। বিশ্বের বহু দেশের অগুণতি জ্ঞানীগুণীজন নিজ নিজ ভাষায় ধর্মের যে ব্যাখ্যা দিয়ে গেছেন তাদের সকলের মূল সুর একই। বিভ্রাট ঘটে ভাষান্তর করতে গিয়ে এবং যুগে যুগে তাই ঘটেছে এখনও ঘটছে। ব্যক্তি ও সমষ্টি বিশেষের সুবিধায় ধর্মের ব্যাখ্যা নতুন কিছু নয়। অতীতেও হয়েছে এখনও সমানেই হয়ে চলেছে।

বাঙ্গালী মানুষজনের এই সকল ধর্ম নিয়ে বা ধর্মীয় মতাদ্দর্শ নিয়ে চিল্লা-চিল্লী বা এতো মাতমাতির কোন প্রয়োজন নেই। আমাদের সুপ্রতিষ্ঠিত ভাষা ও সংস্কৃতি রয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা আমাদের সংস্কৃতি ধর্মাশ্রিত নয়।
মূলত: আমরা বিশ্বের মানবতাবাদী জনগোষ্ঠীর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ। মানবতাবাদই আমাদের ধর্ম! তাই আমরা ধর্মনিরপক্ষ শব্দ দিয়ে আমাদের পরিচিতি তুলে ধরতে বেশী সাচ্ছন্দ্যবোধ করি। হিন্দু-মুসলিম শব্দ দু’টি তাদের জন্য প্রয়োজনীয় যারা আমাদের এই প্রকৃতি সমৃদ্ধ, প্রকৃতির আশীর্বাদ পুষ্ঠ পলল মাটিকে দখলে রেখে নিরবিচ্ছিন্নভাবে ভোগ করতে চায়।

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT