1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
প্রতি বছরই বন্যা! ক্ষয়ক্ষতি আর প্রানহানী!! এবার প্রয়োজন স্থায়ী সমাধান - মুক্তকথা
রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৪৫ পূর্বাহ্ন

প্রতি বছরই বন্যা! ক্ষয়ক্ষতি আর প্রানহানী!! এবার প্রয়োজন স্থায়ী সমাধান

ভ্রাম্যমান প্রতিবেদক॥
  • প্রকাশকাল : রবিবার, ২৩ জুন, ২০২৪
  • ২১৪ পড়া হয়েছে

 

সুনামগঞ্জ

 

প্রায় ৩০ হাজার মানুষ দুর্ভোগে আছে

 

সুনামগঞ্জে পানি মানে বিষাদ। যেদিন ঘরে পানি প্রবেশ করে সেদিন ছিল ঈদ। সকালে ঘুম থেকে উঠে আনন্দ করার কথা থাকলেও স্বামী-সন্তান নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ করতে হয়েছে। আমাদের কষ্ট না হয় আমরা মেনে নিলাম, কিন্তু মা হয়ে শিশুদের কষ্ট তো আর মানা যায় না। পেটে নেই পর্যাপ্ত খাবার। নেই সুপেয় পানির মজুত। এভাবে কি বাঁচা যায়। পানির অভাবে বাধ্য হয়ে বানের জলে তৃষ্ণা মেটাচ্ছি।’

কথাগুলা বলছিলেন সুনামগঞ্জ পৌর কলেজ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিত মেহেরজান বিবি। এমন অবস্থা শুধু মেহেরজানের নয়, সুনামগঞ্জের ৫৯৪টি আশ্রয়কেন্দ্রের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ দুর্ভোগে আছে।

সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ কেন্দ্রে আশ্রিত ষাটোর্ধ্ব আহাদ মিয়া এ প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের ঘরের ওপর দিয়ে গেছে প্রবল স্রোত। স্রোতের তোড়ে ভেঙে গেছে বসতঘর। বাড়ির পাশের রাস্তায় ছিলাম প্রথম দিন। যে হারে বৃষ্টি হয়েছে; যে রাস্তায় রাত কাটিয়েছি তা তলিয়ে গেছে। পরে উপায় না দেখে এখানে চলে আসি। এমন করে ২০২২ সালের বন্যায় সব নিঃস্ব হয়েছিল। বার বার এমন অবস্থা কি সহ্য করা যায়। আমাদের দিকে কেন সরকার দৃষ্টি দেয় না। কবে মিলবে এমন অবস্থা থেকে মুক্তি।

গত ১৫ মে থেকে ভারি বৃষ্টিপাত ও উজানের পাহাড়ি ঢলে বেড়েছে সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি। দুই দিনের ব্যবধানে সুনামগঞ্জের ২৬টি নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে সুনামগঞ্জের ৪টি পৌরসভাসহ ১২টি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। এতে ঘরবাড়ি হারিয়ে বাস্তুহারা হয়েছে অন্তত লক্ষাধিক মানুষ। পানিবন্দি হয়ে দুর্বিষহ জীবন পার করছে প্রায় ১০ লাখের বেশি মানুষ।

শহরের পাশেই ইসলামপুর গ্রাম। ঝাওয়ার হাওরের তীরবর্তী এই গ্রামে নেই কোনো আশ্রয়কেন্দ্র। তাই অনেকটা বাধ্য হয়ে বন্যা আক্রান্ত মানুষজন থাকছেন বাড়িতেই।

হাওর ঘুরে দেখা যায়, বন্যাক্রান্ত একজন সুলেমান মিয়া নিজ বসতঘরের কাদা পানির মাঝে বসেই খাচ্ছেন পান্তা ভাত। পান্তা ভাত খাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘরে চাল ছাড়া কিছু নেই। কিছু সবজি ছিল, যা দুদিন খেয়েছি। এখন আর কিছুই নেই। তাই পান্তা ভাতই টিকে থাকার একমাত্র অবলম্বন।

অপর একজন রুকেয়া বিবি। তিন ছেলে-মেয়ে নিয়ে ভোগান্তির যেন অন্ত নেই এই পরিবারের। তিনি বলেন, স্বামী ঢাকায় রিকশা চালান। বন্যার দ্বিতীয় দিনে চুলায় পানি ঢুকে। এরপর থেকে আজ ছয় দিন চুলা জ্বলেনি। বাচ্চারা খাবার খেতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ছোট ছেলেটার শরীর খারাপ। না পারছি বের হতে না পারছি ছেলেটাকে ডাক্তার দেখাতে। সুপেয় পানির অভাবে হাঁসফাঁস অবস্থা আমাদের।

সপ্তাহ ধরে চলা এই বন্যায় তলিয়ে গেছে গ্রামের অধিকাংশ টিউবওয়েল। রান্নাঘর ও রান্নার উপকরণ ভিজে যাওয়ায় চুলায় আগুন জ্বলেনি দীর্ঘদিন ধরে অনেকের ঘরে। এতে সুপেয় পানির অভাবে নাজুক অবস্থায় রয়েছেন এই গ্রামের শতাধিক পানিবন্দি পরিবার।

সুনামগঞ্জ জেলার জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, আনুমানিক ১২ হাজার নলকূপ আংশিক ও তিন হাজার নলকূপ সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই বন্যায়। এছাড়াও আনুমানিক ৫০ হাজার শৌচাগার আংশিক ও ১৫ হাজার শৌচাগার সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সুনামগঞ্জ জেলা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ খালেদুল ইসলাম জানান, তার কাছে ১৫ লাখ পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুত আছে। এর মধ্যে আনুমানিক তিন লাখ পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ইউএনও এবং পিআইওদের মাধ্যমে বানভাসিদের মাঝে বিতরণ করেছেন। এছাড়াও দুটি মোবাইল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট রয়েছে যা ঘণ্টায় ৬০০ লিটার বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের কাজ করবে। জেলা প্রশাসকের নির্দেশ মোতাবেক এটি মাঠে কাজ করছে।


 

মৌলবীবাজার

আঞ্চলিক মহাসড়ক 

মৌলভীবাজার-শমসেরনগর রাস্তায়
চলছে না কোন যানবাহন

 

 

মৌলভীবাজারে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়ে বিপৎসীমার ওপরে থাকা মনু ও কুশিয়ারা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে।

শুক্রবার (২১ জুন) বিকেলে মৌলভীবাজার জেলায় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে।

পাউবো সূত্রে জানা যায়, বিকেল ৩টার মনু নদীর রেলওয়ে ব্রিজের পানি বিপৎসীমার ২৭০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

মৌলভীবাজারে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়ে বিপৎসীমার ওপরে থাকা মনু ও কুশিয়ারা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। শুক্রবার (২১ জুন) বিকেলে মৌলভীবাজার জেলায় বৃষ্টিপাত না হওয়ায়ই বন্যা অবস্থার এমন উন্নতি হয়েছে।

পাউবো সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার বিকেল ৩টায় মনু নদীর পানি চাঁদনীঘাট সেতুতে বিপৎসীমার ২৯ সে.মি. নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ধলাই নদীর রেলসেতুর নিকট পানি বিপৎসীমার ২৭৯ সে.মি. নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর শেরপুর সেতুতে পানি বিপৎসীমার ১৯ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ধীরে ধীরে পানি কমতে শুরু করেছে। এদিকে জুড়ী উপজেলার জুড়ী নদীর ভবানীপুর সেতুর কাছে পানি বিপৎসীমার ২০৪ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ, উজানের পাহাড়ি ঢল ও নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সাত উপজেলার প্রায় ৪০টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বন্যা হয়েছে। একইসাথে ধলাই নদীর তিনটি পুরোনো ভাঙন দিয়ে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। গ্রামীণ রাস্তা ডুবে যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন পানিবন্দি প্রায় আড়াই লাখ মানুষ। অনেকে বাড়ি ঘর ছেড়ে পরিবার নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন।

এদিকে জেলা প্রশাসন থেকে জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২শ ৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। যেখানে অবস্থান করছে ১ হাজার ৫১৩টি পরিবার। তাদের দেওয়া হচ্ছে শুকনো খাবার, চাল, বিশুদ্ধ পানি ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট। গঠন করা হয়েছে ৭০টি মেডিকেল টিম। এ ছাড়া বিভিন্ন সংগঠন ও জনপ্রতিনিধিরা রান্না করা খাবার ও শুকনো খাবার নিয়ে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল বলেছেন, মৌলভীবাজারে গত দুই দিন ধরে বৃষ্টি কম হয়েছে। এ ছাড়া উজানে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় জেলার নদনদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে নদীর ঝুঁকিপূর্ণ স্পটগুলোতে বালু ভর্তি বস্তা ও মাটি দিয়ে ঝুঁকিমুক্ত রাখার কাজ চলমান রয়েছে।

জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম জানান, পানিবন্দি এলাকার মানুষের সাহায্যে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। যাদের বাড়িতে বেশি পানি এমন প্রায় ১৫শ পরিবার আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছেন। শুকনো খাবার ও চাল দেওয়া হচ্ছে তাদের। এ ছাড়াও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়ে বন্ধ হয়ে গেছে মৌলভীবাজার-শমসেরনগর আঞ্চলিক মহাসড়কে যান চলাচল।


 

 

হবিগঞ্জ

যখন ১ হাজার হেক্টর জমির আউশ ধান ও শাকসবজি বিনষ্ট,
তখন ৪০০ খামারের মাছ ভেসে গেছে

 

বন্যায় জেলার প্রায় ১ হাজার হেক্টর জমির আউশ ধান ও শাকসবজি বিনষ্ট হয়েছে। অপরদিকে ৪০০ খামারের মাছ ভেসে গেছে।

জেলা কৃষি পুনর্বাসন অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জেলার ৯টি উপজেলার মোট ৭৮৪ হেক্টর আউশ ও ১৬৬ হেক্টর শাকসবজিখেত বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বানিয়াচং, নবীগঞ্জ ও চুনারুঘাট উপজেলায়।

বানিয়াচং উপজেলায় ২৬০ হেক্টর, চুনারুঘাটে ২১০ ও নবীগঞ্জে ১৩০ হেক্টর আউশ ধান বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।

এদিকে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওয়াহিদুল রহমান মজুমদার জানান, ৩০০-৪০০ খামারের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। ক্ষতির তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এখনো সঠিক হিসেব নির্ণয় করা হয়নি।

জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অফিস সূত্র জানায়, বন্যার পানি ক্রমান্বয়ে কমছে। কুশিয়ারা নদীর শেরপুর ও বানিয়াচং পয়েন্টে কয়েক সেন্টিমিটার কমেছে। তবে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কালনী কুশিয়ারা অপরিবর্তিত রয়েছে। এপর্যন্ত জেলায় ৫১০ টন চাউল ২৩০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সূত্র: বন্যা সংক্রান্ত খবর সতর্কতার সাথে অন্তর্জাল থেকে সংগৃহীত।

 

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT