আব্দুল ওয়াদুদ, মৌলভীবাজার।। আবহাওয়া অফিসের সর্বশেষ খবরে পাওয়া ঘুর্নিঝড় ফণি ভারতের ওরিশা তছনছ করে এখন বাংলাদেশে অবস্থান করে ঘন্টায় বাতাসের গতি ৫০-৬০ কিলোমিটার হয়ে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন এটি বাংলাদেশ হয়ে মেঘালয়ে প্রবেশ করবে। ফণির আঘাতে সারা দেশের সাথে পর্যটন জেলা ও হাওর অধ্যুষিত মৌলভীবাজারে শনিবার সকাল থেকে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিপাত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। পাহাড়ি ঢলে এ জেলার কুশিয়ারা, ধলাই ও মনু নদীতে পানি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে উজানের ভারত থেকে আসা ঢল ও বৃষ্টির পানি মিলে যেকোন সময় মনুনদী ফুঁসে উঠতে পারে। মৌলভীবাজার শহরে মনু প্রতিরক্ষা বাঁধ দুর্বল থাকায় বাঁধ ভেঙ্গে শহরে পানি ঢুকার সম্ভাবনা রয়েছে। স্থানীয় শহরের বাসিন্দারা বলছেন, মনু নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় বাড়তি জলের আঘাতে শহর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায়না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শহরের একজন বাসীন্দা জানান, শহরের পাশে মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ শক্তিশালী নয়। বিগত কয়েক বছর ধরে এ বাঁধে তেমন কোন মেরামত হয়নি। যা হয়েছে তা খুবই নিম্নমানের যা কোনভাবেই টেকসই নয়। তিনি আরো জানান, যদি মনু নদীর পানি বিপদসীমার উপরে চলে যায়, তাহলে সৈয়ারপুরের “মুছি বাড়ি” সংলগ্ন বাঁধ ভাঙ্গার সম্ভাবনা রয়েছে।
সম্প্রতি শুষ্ক মৌসুমে মনুনদী খনন(চড় অপসারণ) করতে প্রায় ২৩ কোটি টাকা সরকার বরাদ্দ দিলেও বৃষ্টি ও বৈরি আবহাওয়া দেখিয়ে খনন কার্যক্রম সম্ভব হচ্ছেনা বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। তারা বলেছেন আগামী শুষ্ক মৌসুমে এ নদীর চড়গুলো অপসারণ করা হবে। গেল বছর উজানের ঢলে মনুনদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে গভীর রাতে মৌলভীবাজার শহরের কাছে মনু বাঁধের বাড়ইকোনায় ভেঙ্গে এক আতঙ্ক নিয়ে বাসা বাড়িতে পানি ঢুকে। এছাড়াও বড়হাট, ধরকাপন ও মনুমুখ এলাকা প্লাবিত হয়ে সহস্রাধিক মানুষের গবাদি পশুসহ মূল্যবান মালামাল খুয়ে যায়। মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহি প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী শনিবার(৪ঠা মে) বলেন, মনু নদীতে এখনো পানি বাড়েনি বরং কমেছে। তিনি আরো বলেন, উজানের পাশ্ববর্তী ভারতের কৈলাশহরের খবর নিয়েছি। এখানে এখনো কোন বৃষ্টিপাত হয়নি। ফণির আঘাতে এ নদীর পানি বাড়ার তেমন কোন সম্ভাবনা নাই।