সৈয়দ বয়তুল আলী, মৌলভীবাজার।। এবছর বোরো মৌসুমে দীর্ঘ মেয়াদী খড়া ও পানি সেচের সুবিধা না থাকায় জেলার হাকালুকি, কাউয়াদীঘি ও হাইল হাওর সহ ছোট বড় হাওর গুলোতে কৃষকের রোপনকৃত ধানে ছিটা ধরেছে। আবার কোথায় কোথায় পুরো জমির ধানে ছিটা ধরায় কাটার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে বড় ধরনের লোকসানে পড়েছেন জেলার কয়েক হাজার প্রান্তিক কৃষক। এদিকে জেলা কৃষি বিভাগ বলছে লক্ষ মাত্রার চেয়ে বেশি ধান উৎপাদন হয়েছে। কিন্তু কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্যের সাথে বাস্তবতার অনেকটা অমিল। খাতা কলমে লক্ষ মাত্রার চেয়ে বেশি ধান উৎপাদন দেখালেও মাঠে দেখা যায় কৃষকের কান্না। কৃষকরা বলছেন, কৃষি অফিসের লোকেরা মাঠ পর্যায় পরিদর্শন না করে অফিসে বসেই তথ্য সংগ্রহ করে। তারা সব সময় লক্ষ মাত্রা বেশি দেখিয়ে দেন। যা কৃষকদের জন্য চরম ক্ষতিকর।
জানা যায়, জেলার হাকালুকি, কাউয়াদীঘি ও হাইল হাওর পারের কয়েক লক্ষ কৃষক হাওরের এক ফসলী বোরো চাষাবাদের উপর নির্ভরশীল। বোরো ধানের আয় দিয়েই তাদের পুরো বছরের সাংসারিক খরচ সহ ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ চলে। কিন্তু এবছর ধানে ছিটা থাকায় বড় ধরনের লোকসানে পড়েছেন তারা। স্বী, ছেলে-মেয়ে ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে আগামী বছর কিভাবে চলবেন এনিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন কৃষকরা।
হাওর কাউয়াদীঘির পূর্ব পারের পশ্চিম ভাগ গ্রামের জিল্লু মিয়া বলেন, এ বছর খরার কারণে পানির অভাবে আমার প্রায় ৫ বিঘা জমির ধানে ছিটা ধরে কাটার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এই হাওরের নানু মিয়া, সামছুল মিয়া সহ অনেকে বলেন, সময় মতো বৃষ্টি না হওয়াতে পানির অভাবে জমিতে ধানের উৎপাদন অর্ধেকে নেমেছে। গত বছর যে জমিতে বিগা প্রতি ১৫ মন ধান উৎপাদন হয়ে ছিল এ বছর একই জমিতে ৬ থেকে ৭ মন ধান উৎপাদন হয়েছে। হাকালুকি হাওর পারের ভুকশিমইল ইউনিয়নের কৃষক মোঃ এলাইছ মিয়া, গিয়াস মিয়া ও ইদই মিয়া বলেন, সময় মতো পানি দিতে না পারায় অর্ধেক ধানে ছিটা পড়েছে। অনেক ধান কাটার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বোরো চাষাবাদ করে এবার বড় ধরনের লোকসান গুনতে হচ্ছে। তারা আরও বলেন, আগামী দিনের সাংসারিক খরচ নিয়েও তারা দুশ্চিন্তায়।
এবিষয়ে মৌলভীবাজার কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারি বলেন, অভারল খারাপ হয়েছে এটা বলা যাবে না। তবে কিছু জমিতে ছিটা ধরেছে এটা আমাদের চোখে পড়েছে। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার ধানের দাম বেশি থাকায় কৃষকরা অনেকটা লাভবান হবেন। ২৯ এপ্রিল ২০২০ ইং