কমলগঞ্জ প্রতিনিধি।। ঘটনাটি বেশ কয়েক সপ্তাহ আগের। আগের হলেও এ নমুনার ঘটনার সামাজিক মূল্য সবসময়ই প্রনিধানযোগ্য। তাই দেরিতে হলেও ঘটনাটির বিবরণ তুলে ধরা গেল। একটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে কমলগঞ্জের এক মহিলা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। কমলগঞ্জ থেকে লিখেছেন প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ।
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও আদালতে মামলা করায় প্রতিপক্ষের লোকজন হুমকি দিচ্ছে দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ঈদগাহ টিলার জাহিদ মিয়ার স্ত্রী ফাতেমা বেগম। কমলগঞ্জ সাংবাদিক সমিতির শমশেরনগরস্থ অস্থায়ী কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। তবে অভিযুক্ত তাজ উদ্দিন বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ফাতেমা বেগম জানান, প্যারালাইসিস রোগী তার স্বামীকে নিয়ে ঈদগাহটিলাস্থ নিজ বাড়িতে বসবাস করে আসছেন অনেকদিন। মেয়েকে বাড়িতে এসে কোরআন শরীফ পড়ানোর জন্য ইদগাহটিলা জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা তাজ উদ্দিন(৩০)কে রাখা হয়। এভাবে মেয়েকে কোরআন শরীফ পড়ানোর সুবাদে মাওলানা সুযোগ নিয়ে আমার সাথে কথা বলার চেষ্টা ও কুদৃষ্টি
নিয়ে তাকাতে শুরু করে। এক পর্যায়ে গত ১৪ই জুন মেয়েকে কোরআন শরীফ পড়ানোর সময় তাজ উদ্দিন সুযোগ বুঝে আমাকে কুপ্রস্তাব দেয়ার সুযোগ খুঁজলে আমি তাকে ঘর থেকে চলে যেতে বলি।
পরদিন ১৫ই জুন সকাল ১১টায় ইমাম তাজ উদ্দীন এসে আবারও মেয়েকে পড়াতে বসিয়ে আমার সাথে কথাবার্তা বলতে থাকে। এ সময়ে ইমামের ভাবভঙ্গি দেখে আমি অন্য রুমে চলে যাই। সেখানে গিয়েও সে অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করে এবং আমার শ্লীলতাহানি ঘটায়।
এ ঘটনায় গ্রামের শোভা মিয়া(৩৮), জমসেদ মিয়া(৪০), নিজাম আলী(৩৪), মিটু মিয়া(২৬), রাসেল মিয়া(২৭)সহ অন্য আরও দু’একজনের কাছে বিচারপ্রার্থী হই। পরে ইমামের প্ররোচনায় এসব ব্যক্তিরাই ১৫ই জুন শনিবার রাত ১০টায় একযোগে আমার বসতগৃহের ভেতরে প্রবেশ করে। ভেতরে এসে শোভা মিয়া আমাকে ঝাপটে ধরে, অন্যরা কিল, ঘুষি মারে এবং লাঠি দিয়ে আঘাত করে জখম করে। স্বামী এগিয়ে আসলে তাকেও আঘাত করে। এ বিষয়ে মামলা না করতেও তারা হুমকি দেয়।
এই বিষয়ে গত ১৮ই জুন মৌলভীবাজার আদালতে ৬জনকে আসামী করে ১৯৮/২০১৯ ও তাজ উদ্দীনকে আসামী করে পৃথক ১৭৯/২০১৯ মামলা দায়ের করি। মামলা দায়েরের পর থেকে আমাকে নানাভাবে হুমকি প্রদান করায় নিরাপত্তা চেয়ে গত ১৯শে জুন কমলগঞ্জ থানায়ও একটি সাধারণ ডায়েরী করি।
আসামীরা প্রভাবশালী থাকায় এই ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত, ন্যায় বিচারের জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান ফাতেমা বেগম।
অভিযোগ বিষয়ে মসজিদের ইমাম মাওলানা তাজ উদ্দীন বলেন, ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি এ মহিলাকে চিনি না। এমন কি তার ঘরেও প্রাইভেট পড়াতেও যাইনি। রমজান মাসের এত্তেকাফের সূত্র ধরে মহিলার স্বামীর সাথে বিরোধ দেখা দেয়। এরপর রাস্তায় মহিলা আমাকে দাড় করিয়ে বিভিন্ন ভাষায় গালিগালাজ করে।
মসজিদ কমিটির সভাপতি জমসেদ আলী বলেন, মহিলা আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী। সে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। ইমাম সাহেব নতুন আসছেন। তিনি কি করে এ মহিলাকে চিনবেন। এ মহিলা যা করছে সম্পূর্ণ মিথ্যা। মহিলার স্বামী কারো কথা না শুনে মিথ্যা অজুহাত তৈরী করছেন।