লন্ডন: মরণ থেকে বাঁচার কোন পথ নেই। সৌদির বাদশাহ থেকে বৃটেনের মহারাণী কিংবা আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প থেকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন কেউই মরণকে জয় করতে পারবেন না। মরণের হিম শীতল স্বাদ গ্রহন করতেই হবে। সৃষ্টির আদি থেকে আজ অবদি মরণের হাত থেকে কেউই রেহাই পায়নি।
জন্ম লভিলে মৃত্যু অবধারিত। মৃত্যু শাশ্বত! তাই মানুষ মরণকে সহজেই মেনে নিয়েছে। কিন্তু এর মাঝেও কিছু কিছু মৃত্যু আছে মেনে নেয়া যায় না। তেমনি এক অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে লন্ডনের হেকনি এলাকায়।
মরার এ ঘটনাটি অবশ্য বেশ পুরনো। গত বছরের ঘটনা। কিন্তু পুরনো হলে কি হবে, এ যে এক অস্বাভাবিক হৃদয়বিদারক মৃত্যু। সুস্থ মন আর বিবেক এরূপ মৃত্যু কাহিনী শুনার পর বিচলিত না হয়ে পারে না।
৪ বছর বয়সের ‘চাদরেক মুলো’ মা ‘এস্তার একেতি মুলো’র সাথে হেকনির একটি ফ্লাটবাড়ীতে বাস করতো। ২৪ বছর বয়সী এস্তার মূলতঃ কঙ্গো’র কিনসাসার মানুষ। ৪ বছর আগে পরিবারের সাথে থাকার জন্য এসেছিলেন লন্ডনে। কি কারণে বনিবনা হয়নি স্বামীর সাথে। তাই একাই ছেলেকে নিয়ে হেকনির একটি ফ্লাটবাড়ীতে থাকতেন। চাদরেক হেকনির ‘মর্নিংসাইড প্রাইমারী স্কুল’-এ পড়তো। মা ‘এস্তার একেতি’ মৃগীরোগী ছিলেন। গেল বার অক্টোবরের একসময় ছেলে ও মা ঘরে থাকা অবস্থায় মা এস্তারের মৃগীরোগ উঠে এবং তিনি ‘ফিট’ হয়ে মারা যান। অটিস্টিক রোগী ৪ বছরের চাদরেক জানেনা কি করবে। মা’কে সেই যে দু’হাতে জড়িয়ে ধরেছিল সে অবস্থায় অভুক্ত থেকে মারা যায়। সপ্তাহ দু’য়েক পর মরা মানুষের গন্ধ বেরুলে প্রতিবেশী পুলিশ ডাকেন। পুলিশ এসে মা ও ছেলের মৃতদেহ উদ্ধার করে ছুরতহালের জন্য হাসপাতালে পাঠান। ছুরতহালে বলা হয় মায়ের মৃত্যু হয়েছে মৃগীরোগ থেকে আর ছেলের মৃত্যু হয়েছে জলশূণ্যতা ও পুষ্ঠিহীনতা থেকে।
হৃদয় বিদারক এ অপমৃত্যুর ঘটনাটি তখনই জানাজানি হয় যখন একজন অপমৃত্যুর বিচারক (করনার) সরকারকে আহ্বান জানান এই বলে যে অপ্রত্যাশিতভাবে যে কোন শিশু-কিশোরের স্কুলে অনুপস্থিতির বিষয়ে ‘জাতীয়ভাবে একটি স্কুল সতর্কীকরণ পদ্ধতি’ নেয়া অতীব প্রয়োজন। ঘটনাটি নিয়ে বিলেতের শিক্ষা বিভাগে তোলপাড় চলছে।