মুক্তকথা প্রতিবেদন।। লক্ষ লক্ষ বছর বিষয়ে কোন তথ্য হাতের কাছে না থাকলেও শত শত বছর ধরে এখানে বনের পশু-পাখীই নির্ভাবনায় বসবাস করে আসছে এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যেতে পারে। লিখিতভাবে শত শত বছর ধরে বন্যপ্রানীর অভয়ারণ্য হিসেবে লিপিবদ্ধ যে এলাকা এখন এখানে সেই গভীর অরণ্য আর নেই। ব্রহ্মদেশ তথা বর্তমান মায়ানমার থেকে পাহাড়ী পথে বাংলাদেশের দক্ষিন-পূর্বাঞ্চলের এই পাহাড়ী উপত্যকার একদিকে বঙ্গোপসাগর এবং তার উল্টোদিকে বন্য প্রাণীর গভীর অভয়ারণ্য। একসময় বন্য জীবজন্তুর বিচরণে মুখর থাকতো এ তল্লাট। এখনও বন্যহাতীকূল বছরের সঠিক সময়ে দলবেঁধে এখানে আসে কিন্তু আগের মত নিরাপদে ফিরে যেতে পারে না। হয় তারা মানুষকে আক্রমণ করে অথবা মানুষ তাদের ধরে হত্যা করে।
![]() |
বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত হিসেবে কক্সবাজার সারা বিশ্বময় নন্দিত। সেই কক্সবাজার উপকূলের উপকন্ঠে ঘন বন পরিবেষ্টিত পাহাড়ী এলাকায় অগুনতি কাল ধরে নিরুপদ্রবে, নির্বিঘ্নে এসব বন্য হাতী তাদের প্রজনন ও খাদ্য চাহিদা পূরণ করে আসছিল। হাজার শত বছর আগে এখানেতো কোন মানুষ থাকার কথাও ছিল না। অতএব বনের হাতীদের রাজত্বই ছিল এখানকার সবচেয়ে প্রাচীন ইতিহাস। কিন্তু সবকিছু কেমন বিপরীত হয়ে দাঁড়ালো সারা দুনিয়া যখন ২০১৭সালে এসে পৌঁছালো। বন্য হাতীরা এখন বিপন্ন হয়ে পড়েছে। আগের মত তাদের প্রজনন ও খাদ্য চাহিদা পূরণের জন্য এ অঞ্চলে আসলেই মানুষের দৌড়ানি খেতে হয়। আর এর মূল কারণ রোহিঙ্গা শ্মরণার্থী।
![]() |
জাতিসংঘের হিসেবে সর্বপ্রথম ২০১৭সালে কক্সবাজারের এই বন্য এলাকায় ৬লাখ মায়ানমারের রোহিঙ্গা শ্মরণার্থী ধর্ষণ, হত্যা থেকে জীবন বাঁচাতে পালিয়ে এসে এখানে উঠে। পরে সে সংখ্যা বাড়তে বাড়তে বর্তমানে ১০লাখে দাঁড়িয়েছে। রোহিঙ্গাদের এই দেশান্তরকে জাতিসংঘ “পুস্তকে স্থান পাওয়ার মত সংখ্যালঘু নিধন” বলে অনেক আগে সে সতেরো সালের প্রথম প্রথমই বলেছিল। তারপর জাতিসংঘকে শুরু করতে হয় তথ্য সংগ্রহ। বিগত দু’বছরে নরহত্যা ও সংখ্যালঘু নিধনের ছবিসহ সকল বস্তুনিষ্ঠ তথ্য সংগ্রহ করে মায়ানমার সরকারের কাছে এর কৈফিয়ত তলব করে।
![]() |
গণমাধ্যম আর সংবাদমাধ্যম থেকে যতটুকু জানা যায় যে মিথ্যে জবাব দিয়েছে ব্রহ্মদেশ। তাদের নির্বিচার গণহত্যা ও মিথ্যা জবাবে বিস্মিত হয়ে অবশেষে আফ্রিকার দেশ জাম্বিয়া বর্তমানের গাম্বিয়া, বিশ্ব বিচার সভা “দি হেগ” এর আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে সংখ্যালঘু নিধনের মত এমন বর্বরতম নরহত্যার বিচারের নালিশ দাখিল করে। যে বিচার এখন চলছে। রোহিঙ্গা শ্মরণার্থীরা পালিয়ে এসে যেখানে অস্থায়ীভাবে আবাস তৈরী করেছে সে অঞ্চলটি হাজার হাজার বছর ধরে বন্যপ্রানী বিশেষ করে বন্য হাতীদের প্রজনন ও খাদ্যান্বষণের বিচরণ ভূমি হিসেবে সারা উপমহাদেশে সুপরিচিত। এলাকার প্রায় ৮টি স্থানে বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে বন্য হাতি এখানে আসে প্রজনন, মেলা-মেশা ও খাদ্যের খোঁজে। আন্তর্জাতিকভাবে এখানকার ৮টি স্থান “এলিফেন্ট মাইগ্রেশন করিডোর” হিসেবে সুপরিচিত। তথ্যসূত্র: গণমাধ্যম