মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে জায়গা জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় সংখ্যালঘু পরিবারের নারীসহ ৪ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় কমলগঞ্জ থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করা হয়েছে।
থানায় দায়েরকৃত লিখিত অভিযোগের সূত্রে জানা যায়,
উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের শ্রীসূর্য্য গ্রামের জিতেন্দ্র কুমার বৈদ্য ওরপে নিখিল মাষ্টারের সাথে পার্শ্ববর্তী মনসুরপুর গ্রামের মৃত জায়ফর আলীর ছেলে মিনার আহমদ এর দীর্ঘদিন যাবত জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। পূর্ব বিরোধের জের ধরে গত বুধবার(২ জুন) সকাল সাড়ে ৮টায় শ্রীসূর্য্য গ্রামের নিখিল মাষ্টারের বাড়ির কাছে তার নিজ জমিতে শ্রমিককে নিয়ে কাজ করার সময় মনসুরপুর গ্রামের মিনার আহমদ(৪০) ও তার ভাগিনা পলকির পার গ্রামের রেজাউল খাঁন(২২)সহ অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জন নিখিল মাষ্টারের বাড়ির সীমানার পিলার উপড়াইয়া ফেলিয়া কোদাল দিয়া সীমানার মাটি কাটিতে থাকে। এ সময় নিখিল মাষ্টার প্রতিবাদ করিলে মিনার আহমদ, রেজাউল খাঁন সহ অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জন লোক দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র সহকারে নিখিল মাষ্টারকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার চেষ্টা চালায়। এ সময় তিনি প্রাণ রক্ষার জন্য দৌড়ে নিজ বসত ঘরে আশ্রয় নেন। হামলাকারীরা বসত ঘরে জিতেন্দ্র কুমার বৈদ্য ওরপে নিখিল মাষ্টার(৭৫)কে হাত, পা বেঁধে জিম্মি করে হামলা চালায়। এ সময় তার চিৎকারে এগিয়ে আসলে স্ত্রী কৃষ্ণা রানী বৈদ্য(৫৫), প্রতিবেশি বিধান বৈদ্য(৩৮) ও সাবিত্রী রানী বৈদ্য(৫৮)এর উপর হামলা চালিয়ে আহত করা হয়। হামলাকারীরা নিখিল মাষ্টারের স্ত্রী কৃষ্ণা রানী বৈদ্য(৫৫) এর গলায় থাকা ৫৫ হাজার টাকা মূল্যের ১৪ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নিয়ে শ্লীলতাহানী করে। এছাড়া ষ্টীলের আলমারীর ড্রয়ার থেকে নগদ ৮৫,২০০/- টাকা নিয়ে যায়। হামলাকারীরা নিখিল মাষ্টারের বসত ঘরের দরজা, জানালা এবং আসবাবপত্র ভাংচুর করে আরো ৩৫,৫০০/- টাকার ক্ষতি সাধন করে। এ সময় তাদের চিৎকারে আশে পাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা ঘটনাস্থলে বীরদর্পে অস্ত্র উচাইয়া উল্লাস করে হুমকি দিয়া বলে যেকোন সময় নিখিল মাষ্টারের বসত বাড়ী লুটপাট, আগুন দিয়া পুড়ানোসহ প্রাণে হত্যা করিয়া লাশ গুম করিয়া ফেলবে। স্থানীয়রা আহত ৪ জনকে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করেন।
এ ঘটনায় বুধবার রাতেই নিখিল মাষ্টারের স্ত্রী কৃষ্ণা রানী বৈদ্য বাদী হয়ে মিনার আহমদ ও তার ভাগিনা রেজাউল খাঁন এর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জনকে আসামী করে কমলগঞ্জ থানায় একটি লিখিত এজাহার দাখিল করেন। জিতেন্দ্র বৈদ্য(নিখিল মাস্টার) জানান, মিনার আলী আমাদের জমিতে জোরপূর্ব্বক গর্ত করে রাখে। প্রতিবাদ করলে মিনার ও তার ভাগিনা গংরা আমাদের বসতবাড়িতে ঢুকে আমার উপর হামলা চালিয়ে লুটপাট করে। এ সময় নারীসহ আমাদের চারজন আহত হন। বেরিয়ে যাওয়ার সময় আমাদের বাড়ির কেচি গেইটে ধাক্কা লেগে মাথায় জখম হয়। এ ঘটনায় আমরা কমলগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মিনার আহমদ এর পরিবার সদস্যদের কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে মিনার আহমদ এর বাল্যবন্ধু মনসুরপুর গ্রামের শিক্ষক জমসেদ আলী জানান, জায়গা জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জের ধরে নিখিল মাষ্টার গংরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে মিনার আহমদকে জখম করে। গুরুতর আহত মিনার আহমদ বর্তমানে সিলেট এম, এ, জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি নিখিল মাষ্টারের স্ত্রীর অভিযোগটি সঠিক নয় বলে দাবী করেন।
কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ইয়ারদৌস হাসান বলেন, এ ঘটনায় তখন পর্যন্ত তার হাতে কোন লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্তক্রমে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি আরো জানান।
|