২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারী মাসের ঘটনা এটি। ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিলের বিরুদ্ধে করা আপিলে হেরে গেছেন সাবেক আইএস যোদ্ধা শামীমা বেগম। এ বছরেরই বিগত ২৩ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার, শামীমার আবেদন নাকচ করে দেন লন্ডনের আপিল আদালত। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই শামীমা। যিনি এখনও সিরিয়ার একটি কু্র্দিশ শরণার্থী তাবুতে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। শামীমার আইনজীবীরা পাঁচটি যুক্তি তুলে ধরেছিলেন। কিন্তু কোনো যুক্তিই আদালতে টিকেনি। বহু সংবাদ মাধ্যম এ খবর প্রকাশ করেছে। বৃটেনের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের একজন বিচারপতি জোনাথন সাম্পশন শামীমার পক্ষে আইনী লড়াইয়ে কাজ করছেন।
সব ছবি অন্তর্জাল থেকে সংগৃহীত |
রায় দেয়ার সময় বিচারক সু কা বলেন, এ যুক্তি দেয়া যেতে পারে যে, শামীমা বেগমের মামলায় দেয়া সিদ্ধান্তটি কঠোর ছিল, এটিও যুক্তি দেয়া যেতে পারে যে, শামীমা নিজেই নিজের দুর্ভাগ্যের জন্য দায়ী৷
জীবনের ৩পর্বে আইএস যোদ্ধা শামীমা। সব বায়ে উপরে তার স্বামী ইয়াগো রিয়েদিগস। ছবি অন্তর্জাল থেকে সংগৃহীত |
তিনি আরও বলেন, এ আদালতের কাজ উভয় দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে একমত হওয়া বা না হওয়া নয়, আমাদের একমাত্র কাজ হলো বঞ্চনার সিদ্ধান্তটি বেআইনি ছিল কিনা, তা মূল্যায়ন করা। আমরা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে, এটি(বেআইনি) ছিল না এবং আপিল যোগ্যতা নেই। তাই পুনর্বিচার বিবেচ্য নয়। শামীমা চাইলে এই রায়ের বিরুদ্ধে এখন সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করতে পারবেন।
শামীমার নেদারল্যান্ডি স্বামী ইয়াগো রিয়েদিগস। |
এর আগে, ২০১৯ সালে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সাজিদ জাভিদ ‘জনকল্যাণের স্বার্থের’ দাবি তুলে শামীমার নাগরিকত্ব বাতিল করেন। পরে গত বছরের অক্টোবরে যুক্তরাজ্যের স্পেশাল ইমিগ্রেশন আপিলস কমিশন সেই সিদ্ধান্ত বহাল রাখে। এরপর সেই সিদ্ধান্তের বিপরীতে আদালতে আপিল করেন শামীমা।
শামীমার পরিবার। |
অন্তর্জাল ও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম থেকে খোঁজ নিয়ে যতদূর জানা গেছে, শামীমাদের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের আশারকান্দি ইউনিয়নের দাওরাই গ্রামে। শামীমার পিতা আহমদ আলী পৈত্রিক সূত্রে যুক্তরাজ্যে যান। সেখান থেকে দেশে এসে একই গ্রামের আসমা বেগমকে বিয়ে করেন এবং বিলেত ফিরে যান। তার চার মেয়ের মধ্যে শামীমা বেগম সবার বড়। স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় ১৯৯০ সালে আহমদ আলী দেশে এসে আবার বিয়ে করেন। বর্তমানে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে তিনি গ্রামের বাড়িতেই থাকেন।