মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শ্যামেরকোনা বাজার সংলগ্ন মরহুম হাজী সুন্দর আলীর বসতবাড়ি ইতিমধ্যেই পাখি বাড়ি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। প্রতিদিন হাজারো পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয় বাড়িটি। গ্রাম্য সরদার থাকায় বিভিন্ন বিচার-সালিশ এবং জনহিতকর অনেক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থাকায় মরহুম সুন্দর আলীর নামটি একসময় নিজ এলাকা ছাড়িয়ে শহর অবধি পৌঁছে যায়। উদারনৈতিক ও মানবিক গুণাবলি সম্পন্ন সুন্দর আলীর হৃদয়ে ছিল পাখিদের প্রতি অকৃত্রিম মমত্ববোধ ও ভালবাসা।
পুরাতন বাড়ি বিক্রি করে নতুন বাড়িতে তিনি যখন গাছ-গাছালি লাগান, এর কয়েক বছর পর থেকেই বিভিন্ন প্রজাতির পাখি তাঁর বাড়িতে আসতে শুরু করে। সুন্দর আলীও তাঁর সুন্দর মনের পরিচয় দিয়ে পরম মমতায় পাখিগুলোকে আগলে রাখতেন। প্রথম দিকে পাখির সংখ্যা অল্প হলেও বছর বছর পাখির সংখ্যা বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখিদের আসা শুরু হলে কিছুটা বিড়ম্বনা দেখা দেয়। স্থায়ীভাবে বসবাসে পাখির বিষ্ঠার কারণে বাড়ির বিভিন্ন ফলজ বৃক্ষ এবং পুকুরের মাছের ক্ষতি হতে শুরু হয়। এমতাবস্থায় কিছুটা বিরক্তি আসলেও, ততদিনে তিনি পাখির মায়ায় পড়ে গেছেন। যার ফলে পাখির এই মায়ার কাছে সেই বিরক্তি ম্লান হয়ে যায়। এমন কি বাহিরের লোকজন পাখি শিকারের চেষ্টা করলে, তিনি তখন খুব রেগে যেতেন এবং বাধা দিতেন। এরপর থেকে আর কোন শিকারি বাড়ির আশপাশে আসার সাহস করেনি। তিনি বলতেন, এতো জায়গা থাকতে পাখিগুলো যখন আমার বাড়িটিকেই নিরাপদ ভেবে আশ্রয় নিয়েছে, তখন পাখিগুলোকে রক্ষা করা-ও আমার নৈতিক দায়িত্ব।
|