 
																
								
                                    
									
                                 
							
							 
                    ৩৭ বছর যাবত নার্স পেশায় সম্পৃক্ত জয়ন্তী রানী দেব। ৮মাস পরেই তিনি অবসরে যাবেন। জয়ন্তী নার্স পেশাকে সৌখিন সেবা থেকে পেশায় পরিণত করেছেন। নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে বর্তমানে তিনি মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজারের দায়িত্ব পালন করছেন। ইতিমধ্যে তিনি ২ বার স্ট্রোক করেছেন। তার পরেও পেশার প্রতি তার দরদ কমেনি। নির্ধারিত সময়ের বাহিরেও হাসপাতালে সময় দিচ্ছেন জয়ন্তী।
জয়ন্তী রানী দেব ১৯৭৯ সালে জেলার রাজনগর উপজেলার হাজী ছালামত স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। চাকুরিরত অবস্থায় ২০১৭ সালে বিএসসি এবং ২০১৯ সালে এমপিএইচ ডিগ্রী অর্জন করেন তিনি।
জয়ন্তীর সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, ছোট বেলা থেকেই মানুষকে চিকিৎসা দেয়া তার শখ ছিল। পরিবারের কিংবা প্রতিবেশী কেউ অসুস্থ্য হলে তিনি ঔষধ খাওয়াতেন। তাদের সেবা দিতেন। নার্সদের সাদা পোশাককে তিনি ভালোবাসতেন। পোশাকের ভালোবাসায় তিনি এ পেশায় যুক্ত হয়েছেন।
করোনাকালীন সময়ে স্টাফদের মধ্যে অনেকেই অসুস্থ্য ছিল। তিনি নার্সিং সুপারভাইজারের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ওয়ার্ডে কাজ করেছেন। কোনো সমস্যায় রাতদিন যখনই হাসপাতাল থেকে ফোন যেত নিজে এসে সমাধান করার চেষ্টা করতেন।
জয়ন্তী রানীর জীবনের স্মরণিয় ঘটনার মধ্যে ১৯৯৮ সালের দিকে ১ মাসের একটি বাচ্চা মারা গেছে বলে তার অভিভাবককে জানানো হয়। কিন্তু বাচ্চার গায়ে হাত দিয়ে এ সিদ্ধান্ত মেনে নেননি জয়ন্তী। পরবর্তীতে বাচ্চার চিকিৎসা শুরু করেন জয়ন্তী। কিছু সময় পর বাচ্চা নড়াচড়া করতে শুরু করল। পরবর্তীতে ওই বাচ্চা সুস্থ্য হয়ে বাড়িতেও যায়। এ ঘটনায় প্রশংসা কুড়ান জয়ন্তী।
জয়ন্তী বলেন, আমার অসুস্থ্যতার কারণে পরিবার ও আত্মীয় স্বজনরা চাকুরি ছেড়ে দিতে চাপ দিচ্ছেন। কিন্তু এ পেশায় কাজ করলে আমি শান্তি পাই। এজন্য ছাড়তে ইচ্ছে করছে না। অসুস্থ্যতা নিয়েও নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছি।
জেষ্ঠ্য সেবিকা কর্মী(সিনিয়র স্টাফ নার্স) রুমা মৃধা বলেন, নার্সিং সুপারভাইজার জয়ন্তী রানী দেব নার্সদের মধ্যে অনুকরণীয়। তিনি নির্ধারিতা সময়ের বাহিরেও রোগীদের কল্যাণে সময় দেন।