1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
"ডেমোক্রেসি সাহিত্যের সার্থকতা বোঝে না, বোঝে শুধু অর্থের স্বার্থকতা" - মুক্তকথা
বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩২ পূর্বাহ্ন

“ডেমোক্রেসি সাহিত্যের সার্থকতা বোঝে না, বোঝে শুধু অর্থের স্বার্থকতা”

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : বৃহস্পতিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
  • ৩১০৪ পড়া হয়েছে

হারুনূর রশীদ।।

প্রমথ চৌধুরী ঠিকই বলেছিলেন, “আমাদের শিক্ষিত সমাজের লোলুপদৃষ্টি আজ অর্থের ওপরই পড়ে রয়েছে। সুতরাং সাহিত্যচর্চার সুফল সম্বন্ধে অনেকেই সন্দিহান। যারা হাজারখানা ল রিপোর্ট কেনেন, তারা একখানা কাব্যগ্রন্থও কিনতে প্রস্তুত নন, কেননা, তাতে ব্যবসার কোনো সুসার নেই। ডেমোক্রেসি সাহিত্যের সার্থকতা বোঝে না, বোঝে শুধু অর্থের সার্থকতা।” ফলে গণতন্ত্রের গুরুগন যেখানে চেয়েছিলেন সকলকে সমান করতে, তা না হয়ে শিষ্যরা তাদের কথা উল্টো বুঝে সকলে হতে চায় বড় মানুষ।
প্রমথ চৌধুরী সম্ভবতঃ দুঃখভরা হৃদয়েই বলেছিলেন, বইপড়া মানুষের শ্রেষ্ট শখ হলেও আমি কাউকে বই পড়ার পরামর্শ দিতে চাইনে। তিনি মনে করেছিলেন প্রথমতঃ এমন পরামর্শ কেউ গ্রহন করতে চাইবে না। শুধু তাই নয় অনেকে এ পরামর্শকে কুপরামর্শ মনে করবে বলেও তিনি ভেবেছিলেন।


প্রমথ চৌধুরী, বাংলাসাহিত্যে যার অবদান নতমস্তকে স্বীকার করে নিতে হবে। তার লেখনি সাহিত্যে নতুনত্ব এনে দিয়েছে। বাংলাসাহিত্যের গতিপথ ঘুরিয়ে দিয়েছে, তার রচনার বাকবৈদগ্ধতা, সুনিপুনতা, নির্মাণ কারিগরীতা, গভীর ভাব, যুক্তিনিষ্ঠতা সাহিত্যের ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছে। শুধু সাহিত্যের ক্ষেত্রেই নয়, প্রমথ চৌধুরী চলিত ভাষার ব্যবহার অথচ শিষ্ট গদ্যরীতির সফল শ্রষ্টা ছিলেন। সেই প্রমথ চৌধুরী খুবই শিষ্ট শব্দ চয়নে নিবন্ধ লিখেছিলেন বইপড়াকে সামনে রেখে। তিনি বলেছিলেন আমরা জাত হিসেবে শৌখিন নই। আর এই দুঃখ-দারিদ্রের দেশে সুন্দর জীবন ধারন করাই যেখানে মূল সমস্যা, সেখানে জীবনকে সুন্দর বা মহৎ করার প্রস্তাবনা নিরর্থক এবং নির্মম ঠেকবে।
তিনি আরো বলেছিলেন, “আমরা সাহিত্যের রস উপভোগ করতে প্রস্তুত নই; কিন্তু শিক্ষার ফললাভের জন্য আমরা সকলে উদ্বাহু। আমাদের বিশ্বাস শিক্ষা আমাদের গায়ের জ্বালা ও চোখের জল দু্ই-ই দূর করবে।” এমন আশাকে তিনি বলেছিলেন দুরাশা। কিন্তু এর পরও আমরা এ আশা ত্যাগ করতে পারিনে। “কেননা, আমাদের উদ্ধারের জন্য কোনো সদুপায় চোখের সুমুখে দেখতে পাইনে।”
কবে, কত আগে তিনি লিখেছিলেন, “আমাদের শিক্ষিত সমাজের লোলুপদৃষ্টি আজ অর্থের উপরই পড়ে রয়েছে।” অথচ আজকের এ সময়ে বহু অতীতের তার এই কথা কত যে সত্য ছিল বা এখনও সত্য তা আজকের সমাজের দিকে তাকালেই বুঝতে পারা যায়। তার কথায়, “জ্ঞানের ভান্ডার যে ধনের ভান্ডার নয় এ সত্য প্রত্যক্ষ। কিন্তু সমান প্রত্যক্ষ না হলেও সমান সত্য যে, এ যুগে যে জাতির জ্ঞানের ভান্ডার শূন্য সে জাতির ধনের ভাঁড়ারেও ভবানী।”
তিনি গোটা জাতিকে নিয়ে বলেছিলেন। সারা জাতিকে পর্যবেক্ষনের সুযোগ, জ্ঞান সবকিছু তার ছিল। আমাদের তেমন দুরদৃষ্টি নাই সত্য কিন্তু গোটা জাতিকে না দেখে আশ-পাশের ব্যক্তিকেতো প্রতি সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পর্যবেক্ষন করেই যাচ্ছি। তাতে কি দেখি? এই সত্যই কি চোখে পড়ে না যে, জ্ঞানের ক্ষেত্রে অশ্বডিম্ব হলেও ধনের ভাঁড়ারে তার ভবানী। মানে টিপসই হলেও বাড়ী-গাড়ীর দৌরাত্মে তাকে মনে হবে তিনি যুগশ্রষ্টা কেউ একজন। কথা-বার্তায় ওই যে আমাদের গ্রামীন প্রবাদ- চুরের মাউগের বড় গলা তেমনি আর কি।
প্রমথ চৌধুরী শিক্ষার মাহাত্ম্যে বিশ্বাস করতেন এবং সাহিত্য চর্চ্চাই যে শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ তা তিনিই বলেছিলেন। এ প্রসঙ্গে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যময় কথা তিনি বলেছিলেন যে আমাদের মানুষ তা সন্দেহ করে দেখে। কারণ এ শিক্ষার ফল হাতে হাতে পাওয়া যায় না। “অর্থাৎ তার কোনো নগদ বাজার দর নেই। আর এই কারণে ডেমোক্রেসি সাহিত্যের সার্থকতা বোঝে না, বোঝে শুধু অর্থের স্বার্থকতা।”

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT