মুক্তকথা সংবাদকক্ষ।। সারা বাংলাদেশে ৪৭০২টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন ৫২২৭জন ও আহত হন ৬৯৫৩ জন। রেলপথে ১৬২টি দুর্ঘটনায় নিহত ১৯৮ জন, আহত ৩৪৭ জন। নৌ পথে ৩০টি দুর্ঘটনায় নিহত ৬৪, আহত ১৫৭, নিখোঁজ ১১০। নিরাপদ সড়ক চাই- নিসচা ২০১৯ সালে সড়ক দুর্ঘটনার যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তা থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশে ২০১৯ সালে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা ও দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে। এমনটাই উঠে এসেছে সড়ক নিরাপত্তা অবস্থা নিয়ে তৈরী নিরাপদ সড়ক চাইয়ের বার্ষিক প্রতিবেদনে। ওই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯’এ সড়ক দুর্ঘটনায় ৭৮৮ জন বেশি প্রান হারিয়েছেন।
নিরাপদ সড়ক চাই’এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন এসব দুর্ঘটনার হার বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ অশিক্ষিত ও অদক্ষ চালক, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থা, জনগণের অসচেতনতা, অনিয়ন্ত্রিত গতি, রাস্তা নির্মাণে ত্রুটি, রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব, আইন ও তার যথারীতি প্রয়োগ না হওয়া ইত্যাদি। সংক্ষেপে কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারির অভাব। প্রতিবেদনে দেখা যায় দুর্ঘটনার বেশিরভাগই হচ্ছে মহাসড়কে। কাঞ্চন বলেন, অনেক নির্দেশনা, আইনই মানা হয় না এবং সেগুলো নজরদারির আওতায়ও থাকে না। মূল শহরের রাস্তায় বা মহাসড়কে কম গতির যানবাহনগুলো না চলার বিষয়ে যে নির্দেশনা ছিল, তা অনেকাংশেই মানা হয় না। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে দূর্ঘটনার কিছু তথ্য তুলে ধরে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, গত বছরে এই মহাসড়কে মৃত্যুর হার ছিল সবচেয়ে বেশি।
বাংলাদেশ হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি তানভির হায়দার চৌধুরী বিবিসি বাংলা’র সাথে আলাপকালে দাবি করেন কার্যপরিধি ও জনবল কম থাকার কারণে মহাসড়কের সব অংশে নজরদারি নিশ্চিত করতে পারে না পুলিশ। হাইওয়ে পুলিশের মোট ৭৬টি আউটপোস্ট আছে, কিন্তু সেগুলো সকল মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়ক কাভার করে না।
তিনি জানান তাদের কর্মীদের প্রশিক্ষণ প্রদানের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজও করছে তারা।
তবে পুলিশের জনবল কম থাকার অজুহাত অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেন ইলিয়াস কাঞ্চন। তার মতে প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং পুলিশের পাশাপাশি যানবাহন চালকদের যথাযথ প্রশিক্ষন দেয়ার মাধ্যমে দুর্ঘটনার হার অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। কাঞ্চনের কথা, প্রযুক্তির যুগে সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কাজে জনবলের অজুহাত দেয়া একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। আধুনিক প্রযুক্তি এবং প্রশিক্ষন দেয়ার জন্য বিনিয়োগ করে বর্তমান লোকবলের দক্ষতা বাড়ালেই অনেকাংশে দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব।
উলেখ্য যে, প্রকাশিত প্রতিবেদনে বিভাগ অনুযায়ী হিসেব করে দেখা গেছে, ২০১৯ সালে সিলেট বিভাগে মোট ২৪০টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৬১৮ ও আহত হয়েছেন ২৩৮ জন। তন্মধ্যে মৌলভীবাজার জেলায় ৫০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২২৬ জন নিহত ও ৪৮ জন আহত হয়েছেন।
নিসচা ২০১২ সাল থেকে প্রতি বছর প্রতিবেদন তৈরী করে আসছে। আজ শনিবার(৪ জানুয়ারি) ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাবে নিসচা কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন এক সংবাদ সম্মেলনে ২০১৯ সালের সারা বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। সূত্র: সংবাদ মাধ্যম