এখানে নাখোশ হওয়ার কিছুই নেই। চাওয়া-পাওয়া মানুষের আদিম স্বভাবের একটি। না চাইলে উপযাচক হয়ে কেউ হাতে তুলে কিছু দেয় না। আর এই চাওয়ারই রাজনীতিকদের পরিভাষা ‘দাবী’। দাবী আদায়ের কথা বলা মানুষের মৌলিক অধিকারের একটি। দাবী চেয়ে আদায় করে নিতে হয়।
“চাইলাম মেডিক্যাল কলেজ, পাইলাম টেক্সটাইল কলেজ”? মৌলভীবাজারে একটি মেডিক্যাল কলেজের দাবী দীর্ঘ দিনের। মৌলভীবাজারের ২৫০ শয্যার আধুনিক হাসপাতালের সাথে মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা কেবল মাত্র সদিচ্ছার প্রয়োজন। জনগনের প্রানের দাবীকে উপেক্ষা করা সরকার ও রাজনিতীবিদের জন্য শোভনীয় নয়। সম্প্রতি মৌলভীবাজারে একটি টেক্সটাইল কলেজ নির্মাণের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। নিতান্তই খুশীর সংবাদ! তারচেয়ে কয়েক হাজার গুন, লক্ষ গুন খুশীর হতো যদি একটি মেডিকেল কলেজের নির্মানের সংবাদ আসতো। মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আপামোর জনসাধারণের স্বাস্থ সেবা ও শিক্ষা তথা ডাক্তার তৈরী সহ সামাজিক উন্নয়নের সহায়ক। প্রায় ২৫ লাখ জনঅধ্যুষিত মৌলভীবাজার জেলার সাধারণ মানুষকে জটিল রোগ নির্নয় ও চিকিৎসার জন্য দৌড়াতে হয় সিলেট অথবা ঢাকার বিভন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে। গরীব ও সাধারন জনগন রোগের চিকিৎসা পাচ্ছে না, কারন মৌলভীবাজার সদর ২৫০ শয্যার হাসপাতালে উপরেপরা ভীড় আর তার বিপরীতে রয়েছে অপ্রতুল চিকিৎসক ও রোগ নির্নয়ের যন্ত্রপাতি এবং টেকনিশিয়ান ও টেকনোলজিষ্ট।
মৌলভীবাজার জেলা আধুনিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত আজকের উন্নয়নের বাংলাদেশে। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের মহাসড়কের অংশীদার প্রবাসী রিমিট্যান্স যোদ্ধাদের সংখ্যা এ জেলায়ই বেশী। এ জেলায় হাজার হাজার চা-শ্রমিক, মৎস চাষী, পরিবহন শ্রমিক আর রয়েছেন এই প্রবাসী রিমিট্যান্স যোদ্ধা। স্বাস্থ্য সেবার অভাব জেলার প্রতিটি মানুষের অনুভুতিতে বিদ্যমান যাহা আওয়ামী লীগ সরকার ও রাজনীতিবিদদের জন্য সুখকর নয়। অপরদিকে কেন্দ্রের সাথে জেলার যোগোযোগের ব্যবস্থা ঘোড়পাকের মধ্যে বন্দী। আপাতত: দৃষ্টিতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক থেকে এই জেলাটি বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। জেলাবাসী এখানে সরকারের বিমাতাসুলভ আচরনের গন্ধ খুঁজে পাচ্ছেন। সাথে সাথে সরকার দলীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের ব্যর্থতাও এর জন্য দায়ী মনে করছেন। দুরোবস্তার প্রকটতা এমন যে মনে হয় এটি একটি পরিত্যাক্ত জেলা। এমন ভাবনা অবশ্যই অমূলক নয়।
টেক্সটাইল কলেজ মৌলভীবাজার জেলায় স্থাপনের ঘোষনায় জেলাবাসীকে তেমন উৎফুল্ল করেনি। সমগ্র জেলার কোথাও কোন টেক্সটাইল কারখানা আছে বলে সাধারনের জানা নাই। টেক্সটাইল কলেজের ছাত্রদের ইন্ডাষ্টিয়াল ট্রেনিংয়ের জন্য হবিগঞ্জ, সিলেট ও কুমিল্লা সহ বিভিন্ন জেলায় যেতে হবে। অপরদিকে সম্পুর্ণ অবকাঠামো শুন্য থেকে গড়ে তুলতে হবে। অথচ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শুরু করা যায় জেলার ২৫০ শয্যার আধুনিক হাসপাতাল থেকে। এই হাসপাতাল অঙ্গনটি মেডিকেল কলেজ শুরু করার জন্য খুবই উপযোগী। একটি মেডিকেল কলেজের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের বাড়ী ভাড়ার সম পরিমান ভাড়াতে থাকার ব্যবস্থা সহজলভ্য। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়/শিক্ষা মন্ত্রনালয় তথা সরকার অনেক অনেক মেডিকেল কলেজের সাথে মৌলভীবাজারে একটি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের ঘোষনা দিলে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পুর্ণাঙ্গ অবকাঠামো নির্মাণের পর্বে স্থানীয়ভাবে অবকাঠামোগত সুবিধা পাওয়া যাবে বলে আমার বিশ্বাস।
মৌলভীবাজার জেলার বৃহত্তর স্বার্থে তথা সাধারন জনগনের স্বার্থে তাদের স্বাস্থ্য সেবার চাহিদা প্রানের দাবী মৌলভীবাজার মেডিকেল কলেজ বাস্তবায়নে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সহযোগীতার জন্য জেলার সকল মহলের ব্যক্তিবর্গের এগিয়ে আসা জরুরী এবং সময়েরও দাবী বটে। এমন আহ্বান থাকলো সকলের প্রতি।
প্রকৌশলী সৈয়দ আব্দুল গফ্ফার সাজু, সহ-সভাপতি- কানাডা আওয়ামী লীগ, কানাডা। সদস্য ও কাউন্সিল সদস্য- বঙ্গবন্ধু পরিষদ, আই,ই,বি(৮৫-৯৯); সাবেক সভাপতি- বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, চট্টগ্রাম প্রকৌশল মহাবিদ্যালয় বর্তমান চুয়েট ( ১৯৭৭-৮২)”
|