রহস্যময় সৃষ্টি জগতের সবচেয়ে রহস্যময় প্রাণী মানুষ। এই মানুষ পারে না বা জানে না এমন কোন কাজই এ বিশ্বে নেই যা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। এ মহাবিশ্বে যা কিছুই হচ্ছে কিংবা ঘটছে তার সবকিছুই মানুষ করছে। মানুষ শুধু পারেনি এখনও জীবের প্রান সৃষ্টি করতে আর প্রকৃতির গতি-প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণ করতে। এ দু’টো বিষয় ছাড়া আর যা কিছুই এ পৃথিবীতে ঘটছে তার সবটুকুই মানুষ করছে। অবশ্য এসব কিছুই মানুষেরই করার কথা কারণ মানুষ যে আমাদের জানা বিশ্বের সর্বোত্তম শ্রেষ্ঠ প্রাণী। মানুষের এই শ্রেষ্ঠত্ব যেমন তার দায়ীত্বকে অপরিসীম করে তোলে তেমনি কেবল মানুষই পারে এ সৃষ্টি জগতকে টিকিয়ে রাখার হাল ধরতে। বহু কাল যাবৎ মানুষ খুঁজছে এ মহাসৃষ্টি জগতের কোথায়ও মানুষের মত আর কোন বুদ্ধিমান প্রাণী আছে কি-না। আজও এরকম কিছু পাওয়া যায় নি। বিপরীত দিকে মানুষের এই বিরামহীন কাজ সৃষ্টিজগৎকে সংকটময় করে তুলেছে; ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আর ধ্বংস থেকে সৃষ্টি জগতকে বিশেষ করে আমাদের পৃথিবীকে রক্ষার উদ্দেশ্যে ১৯৯১ সালে লেস ইউ নাইট নামের এক আমেরিকান সমাজকর্মী গঠন করেন “ভলান্টারী হিউমেন এক্সটিংশন মুভমেন্ট” নামের একটি এনজিও। তিনি ১৯৭০ সালের ‘আমেরিকান পরিবেশ আন্দোলন’-এ যোগ দিয়েছিলেন এবং অদ্যাবদি কাজ করে যাচ্ছেন। ১৯৭০ থেকে ১৯৯১ এ দীর্ঘ সময়ে তার অভিজ্ঞতা থেকে তিনি অনুধাবন করেন যে একমাত্র অধিকহারে মানুষ বেড়ে যাবার কারণে এ বিশ্ব ধ্বংসের মুখোমুখি হয়ে পড়েছে। এ থেকে উদ্ধারের একমাত্র পথ তিনি মনে করেন যে মানুষের অতিরিক্ত প্রজননই শুধু নয় মানুষের প্রজনন স্বেচ্ছাসেবার ভিত্তিতে পুরোপুরিভাবে বন্ধ রাখতে হবে। এতে করে মানুষ হয়তো একসময় বিশ্ব থেকে মুছে যেতে পারে তবে বিশ্ব বেঁচে যাবে। এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য তিনি ১৯৯১ সালে গঠন করেন “ভলান্টারী হিউমেন এক্সটিংশন মুভমেন্ট”(ভিএইচইএমটি) নামের সংগঠনটি যা এখনও কাজ করে যাচ্ছে। তার আহ্বান- আমরা নিজেরা নিজেদের ইচ্ছা থেকে সন্তান জন্মদান থেকে যেনো বিরত থাকি। এতে করে মানুষের সংখ্যা কমে গিয়ে বিশ্ব প্রকৃতির কাছে সহনীয় হয়ে উঠবে। এর ফলে শুধু এ বিশ্ব যে বাঁচবে তা নয় অত্যাধিক মানুষের কারণে সৃষ্ট নানামুখি দুর্দশা থেকে মানবজাতি রক্ষা পাবে। অবশ্য ‘ইউ নাইট’-এর এ চিন্তা ও কাজের বিরুদ্ধেও কথা রয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞ মহল মনে করেন যে নিজের ইচ্ছায় প্রজনন থেকে বিরত থাকার কারণে দেখা যাবে যে মানুষই একদিন ডাইনোসারের মত এ বিশ্ব থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আর মানুষই যদি বিলুপ্ত হয়ে যায় তা’হলে এ বিশ্ব সৃষ্টি জগৎ থাকা না থাকার কোনই অর্থ থাকে না। |