ঢাকা সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিক আন্দোলনের ফলে শ্রীমঙ্গল উপজেলার সাতগাঁও ইউনিয়নের লছনা এলাকার মহাসড়কে দীর্ঘ যানযটের সৃষ্টি হয়। আজ ২৪ আগষ্ট বুধবার দুপুর ২টা থেকে বালিসিরা ভ্যালির প্রায় ১৪ টি বাগানের নারী-পুরুষ চা শ্রমিকরা ঢাকা সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ আন্দোলন চালিয়ে যায়। পরবর্তীতে প্রশাসনের অনুরোধে প্রায় তিন ঘন্টা পর বিকাল ৫টায় শ্রমিকরা মহাসড়ক থেকে অবরোধ সরিয়ে নেন।
মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলনের অনঢ় অবস্থান থেকে আন্দোলনকারীরা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আকুল আবেদন, তিনি যেন আমাদের ৩০০ টাকার মজুরির দাবীটি মেনে নেন।
দীর্ঘ যানজটের খবর পেয়ে জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় আন্দোলনস্থলে উপস্থিত হন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন। সাথে ছিলেন শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামীম অর রশীদ, চা-শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ও অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তা।
|
অবরোধ চলাকালীন সময়ে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে নেতারা চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের দালাল আক্ষায়িত করে বলেন, তারা আমাদের সাথে বেইমানি করেছে। আমাদের সাথে কোন ধরনের আলাপ আলোচনা না করে একেক সময় একেক ধরনের মজুরি ধার্য করছেন। আজ ১৬ দিন যাবৎ আমাদের আন্দোলন চলছে, দাবী আদায়ের লক্ষ্যে ধর্মঘট, অবরোধ কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে প্রতিটি দিন অতিবাহিত হচ্ছে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোন সিদ্ধান্ত নিয়ে এখন পর্যন্ত কেউ আমাদের কাছে আসে নাই।
‘শেখ হাসিনা সরকার, তিন শ’ টাকা দরকার’ এই শ্লোগানে তারা এলাকা মুখরিত করে রাখেন। জেলার সবকটি ভ্যালির বিভিন্ন চা-শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ, বাগানে বাগানে মিছিল সমাবেশ করেন বলে জানা যায়। সমাবেশে থেকে নেতারা আরও বলেন, চা-শ্রমিক ইউনিয়নের কিছু নেতা মনগড়া বৈঠকে অংশগ্রহণ করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
|
এদিকে মহাসড়ক অবরোধ না করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে আন্দোলনস্থলে বক্তব্য রাখেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন। তিনি আন্দোলনরত শ্রমিকদের কাছে আবেদন রেখে বলেন, শুধু মজুরি নয়, আপনাদের অন্যান্য সকল দাবী লিপিবদ্ধ করে জেলা প্রশাসন গত রাতেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন। আশা করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাদের দাবী দাওয়ার নিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দ্রুততম সময়ে আলোচনায় বসবেন।
তিনি আন্দোলনরত চা-শ্রমিকদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, পরিবহনের যাত্রীদের মানবিক বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আপনারা শুধু রাজপথ অবরোধ তুলে দিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যান। এরপর পরই চা-শ্রমিকরা প্রায় তিন ঘন্টা অবরোধ করে রাখা মহাসড়ক থেকে বিকাল ৩টায় তাদের অবরোধ তুলে নেন।
|