চা শ্রমিকদের এ ধর্মঘট নিয়ে আমাদের প্রতিনিধি আব্দুল অদুদ মৌলবীবাজার থেকে জানান-
৩ দফা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে ফের ধর্মঘটের পর
মৌলভীবাজারের ৯২টি চা বাগানে কাজে ফিরেছেন চা শ্রমিকরা
দেশের চলমান চা শ্রমিকদের দীর্ঘ ১৯ দিন কর্মবিরতির পর রোববার(২৮ আগষ্ট) সকাল থেকে মিছিল সহকারে কাজে ফিরেছেন চা শ্রমিকরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তে খুশি হয়ে ঢাকাস্থ চা বাগান মালিকদের সাথে বৈঠকের পর পরই তারা আনন্দ মিছিল দিতে থাকে জেলার বিভিন্ন চা বাগানে। চা শ্রমিকরা গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে আমরা ভীষন খুশি। তাই আমরা কাজে ফিরেছি। রোববার জেলার বেশ কিছু বাগানে সাপ্তাহিক ছুটি থাকলেও চায়ের ক্ষতি পুষাতে বন্ধের দিনও বাগানে কাজের উদ্যেশ্যে ফিরেছেন তারা।
এদিকে জেলার কুলাউড়ায় উপজেলায় অবস্থিত এইচ আর সি গ্রুপের মালিকানাধীন ক্লিবডন চা বাগান ব্যবস্থাপক হাসীবুল ইসলাম রোববার বেলা সাড়ে ১০টায় জানান, তার বাগানের শ্রমিকরা কাজে যাবার জন্য বাগানের এক পাশে জড়ো হচ্ছেন।
রাজনগর উপজেলায় অবস্থিত উত্তরভাগ ও ইন্দানগর চা বাগান ব্যবস্থাপক মোঃ লোকমান চৌধুরী জানান, রোববার সাপ্তাহিক ছুটির দিন জেনেও শ্রমিকরা তার বাগানে কাজে ফিরেছেন। মনীপুর চা বাগান ব্যবস্থাপক জাফর ইকবাল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে খুশি হয়ে তার বাগানে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রিয় চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেল পাল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে মৌলভীবাজারের ৯২টি চা বাগানের শ্রমিকরা রোববার সকাল থেকে কাজে ফিরেছেন। তিনি বলেন, রোববার জেলার সিংহভাগ চা বাগানে শ্রমিকদের সাপ্তাহিক ছুটি থাকলেও চলমান কর্মবিরতির ক্ষয়ক্ষতি পুষাতে চাইছেন শ্রমিকেরা। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনার পর পর রাতে ফেইসবুকে শ্রমিকদের তরফ থেকে কিছু মানুষ বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এটায় আমরা কর্ণপাত করবো না।
উল্যেখ্য, দৈনিক ৩শ টাকা মজুরির দাবীতে গেল ৯ আগষ্ট থেকে ১২ আগষ্ট পর্যন্ত দিনে ২ঘন্টা ও ১৩ আগষ্ট থেকে ২৭ আগষ্ট পর্যন্ত পূর্ণদিবসসহ মোট ১৯ দিনের কর্মবিরতিতে সারা দেশের সাথে মৌলভীবাজার চা শিল্প বিশাল ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
চলতি ধর্মঘটে মৌলভীবাজার জেলায় চা ফ্যাক্টরীর দৈনিক ক্ষয়ক্ষতির একটা পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে। জেলার কয়েকটি চা বাগান ব্যবস্থাপকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চলমান কর্মবিরতিতে মৌলভীবাজারের ৯২টি চা বাগানে প্রতিদিন প্রায় ১৪ কোটি ৭২ লাখ টাকার লোকসান হয়েছে। এই হিসেবে জেলায় শুধু পুরো ১৫দিনের কর্মবিরতিতে ২২০ কোটি ৮০ লাখ টাকার লোকসান হয়েছে। এর আগে শ্রমিক নেতারা পর পর ৩ দফা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে ফের ধর্মঘটে যোগ দিলে চা শিল্পাঙ্গনে ধোয়াশা বিরাজ করে। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের সিদ্ধান্তকে তারা স্বাগত জানিয়ে রোববার কাজে ফিরে যায়। |