১৯৫৭সালের ১৫এপ্রিল “দি ইণ্ডিয়াম্যান” নামে “গেরোফিশার” কোম্পানী প্রথম এ সড়ক যোগাযোগ শুরু করে। ২০,০০০ মাইলের এ ভ্রমাণযাত্রা শেষ করে ২আগষ্ট ১৯৫৭সাল তারিখে লণ্ডন ফিরে আসে। ১৫এপ্রিল ১৯৫৭সাল তারিখে যাত্রা শুরু করে কলকাতা পৌঁছেছিল ৫জুন ১৯৫৭ইং। এ যাত্রায় তারা ৯টি দেশ তথা বেলজিয়াম, তৎকালীন পশ্চিম জার্মানী, অষ্ট্রিয়া, যুগোস্লাভিয়া, বুলগেরিয়া, তুরস্ক, ইরাণ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান সহ ভারতের নয়াদিল্লী, আগ্রা, এল্লাহাবাদ ও বেনারস হয়ে কলকাতা পৌঁছায়। এসময় ভাড়া নেয়া হতো মাত্র £১৪৫(পাউণ্ড)।
এসময় লণ্ডন থেকে আরো ৩২টি ভ্রমণ কোম্পানী ভারত পর্যন্ত সড়ক যোগাযোগ পরিচালনা করতো। এদের মধ্যে একটি ছিল “আলবার্ট ট্রাভেল”। এই আলবার্ট ট্রাভেল তাদের ব্যবসা জীবনে লণ্ডন থেকে ভারতের কলকাতা পর্যন্ত ১৫দফা ভ্রমণযাত্রা সম্পন্ন করতে পেরেছিল। কয়েক বছর পর বাসটি একটি দূর্ঘটনায় পতিত হয়ে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে উঠে। তখন এই বাসটি ‘এন্ডি স্টিওয়ার্ট’ নামের একজন ভ্রমণ ব্যবসায়ী কিনে নেন এবং একটি দ্বিতল বাসে পুনঃমেরামত করে বাসটির নাম দেন “আলবার্ট”। পরবর্তীতে দ্বিতল বাস আলবার্ট অষ্ট্রেলিয়ার সিডনী থেকে যাত্রা শুরু করে ভারত হয়ে লণ্ডনে পৌঁছে ১৯৬৮সালের ৮অক্টোবর। মনোহারী সুদীর্ঘ এ যাত্রায় তাদের সময় লেগেছিল ১৩২দিন। এন্ডি স্টিওয়ার্ট-এর এই ‘আলবার্ট’বাস লণ্ডন থেকে ইরাণ হয়ে কলকাতা পৌঁছে সিঙ্গাপুরে যেতো ব্রহ্মদেশ(পুরানো বার্মা এখন মিয়ানমার), থাইল্যাণ্ড ও মালয়েশিয়া হয়ে। সিঙ্গাপুরে পৌঁছার পর বাসটিকে জাহাজে তোলা হতো অষ্ট্রেলিয়ার পার্থ-এ পৌছে দেয়ার জন্য। এভাবে ‘আলবার্ট’ তার লণ্ডন-সিডনী-কলকাতা সড়ক যোগাযোগ অব্যাহত রাখে।
মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ১৯৭৯সালের ইরাণী বিপ্লব ও সোভিয়েট-আফগান যুদ্ধ নিম্নবিত্ত মানুষের এমন মনোহারি বিশ্ব সড়ক যোগাযোগের পথটি বন্ধ করে দেয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এই ‘আলবার্ট’ কোম্পানীর দূর্ঘটনাকবলিত বাসখানাকে ২০০৯ সালে নতুন করে সাজানো-গোছানো হয় এবং ২০১২সালে লণ্ডন-অষ্ট্রেলিয়া একটি ফেরৎ যাত্রার সূচনা করা হয়।
|