শ্রীমঙ্গলে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস
মৌলভীবাজারে শীতার্থদের তুলনায় শীতবস্ত্র বিতরণ কম
মৌলভীবাজার জেলার উপর দিয়ে আজও(বুধবার, ৪ জানুয়ারী) বইছে প্রচন্ড শৈত্যপ্রবাহ। গেল কয়েকদিন থেকে কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়ার কারণে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। বুধবার সকাল ৯টায় মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউই ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। দিনে ও রাতে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন শীতার্ত মানুষ।
বিকেল হলে শীতের তীব্রতা বেড়ে তা সকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকছে। শীতের কারণে সবচেয়ে বেশি ছিন্নমূল ও দিনমজুররা সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলস্থ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান জানান, কয়েকদিন ধরে শ্রীমঙ্গলের তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রীর মধ্যে ওঠা-নামা করছে। তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার শ্রীমঙ্গলের সর্বনিন্ম তাপমাত্রা ছিলো ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়ার্স। বুধবার ৪ জানুয়ারি সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
এটি দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। আগামী দু’একদিন তাপমাত্রা এ ধরনের থাকতে পারে। কুয়াশা কেটে গেলে তাপমাত্রা আরো নিচে নামবে। ফলে শীত আরো বেশি অনুভুত হবে। প্রতিদিনের ন্যায় শীতজনিত রোগে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে শিশু ও বয়স্কদের নিয়মিত ভর্তি অব্যাহত রয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যেগে শীতার্ত মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে। গরম কাপড়ের দোকানে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের ভির প্রতিদিন বাড়ছে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় খুব কম বিতরণ হচ্ছে এসব শীত সামগ্রী।
জেলা জুড়ে ঘুরেদেখা যায়, প্রয়োজনের তুলনায় সরকারি কিংবা দাতা সংস্থার তরফ থেকে শীতবস্ত্র খুব কম বিতরণ করা হচ্ছে। ঘনকুয়াশা ও ঠান্ডা বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় শীত অনুভুত হচ্ছে বেশি। তবে কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা করেই মানুষ নেমেছেন কাজে। এতে জনজীবনে এনে দিয়েছে অনেকটা স্থবিরতা। পাশাপাশি গবাদিপশু নিয়েও মানুষ পড়েছে বিপাকে। পশুর গায়ে ছেড়া বস্তা ও কাঁথা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে ঘন কুয়াশায় শীতকালীন সবজীরও বেশ ক্ষতি হচ্ছে বলে জানান কৃষকরা।
জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ সামছুদ্দিন আহমদ জানান, ঘন কুয়াশায় এখন পর্যন্ত বুরো ফসলের বীজতলার ক্ষতি হয়নি। তবে এ অবস্থা চলতে থাকলে চারার বৃদ্ধি কমে গিয়ে বীজতলায় বসে যেতে পারে। সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ জানান, অন্য সময়ের তুলনায় এখন ঠান্ডা জনিত রোগী হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা অনেক বেশি। বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশু।
এদিকে বুধবার সকালে জেলার রাজনগর ও সদর উপজেলা দিয়ে বয়ে যাওয়া কুশিয়ারা নদী তীরবর্তী অঞ্চলে গেলে দেখা যায়, নদী পাড়ে নিম্ন আয়ের মানুষেরা খড়কুটো দিয়ে শীত নিবারণের চেষ্ঠা চালাচ্ছেন। রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ও ফতেপুর ইউনিয়ের বকশিপুর, ছিক্কাগাও, কামালাপুর, আমনপুর, সুরিখাল, যুগিকানো, কেশরপাড়া, সুনামপুর, উমরপুর, কান্দিগাও, জোড়াপুর, রামপুর ও ফতেপুর ইউনিয়নের সাদাপুর, যাত্রাপুর, লামা বিলবাড়ি, হামিদপুর, বেড়কুড়ি, শাহাপুর, জাহিদপুর, আব্দুল্লাহপুর ও সদর উপজেলার আখাইলকুড়া ইউনিয়নের চানপুর, লামুয়াসহ প্রায় নদী পাড়ের ৩০ হাজার মানুষ শীতের কবলে পড়ে দিনপাত কাটাচ্ছেন।
|