মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের মৃর্ত্তিঙ্গি চা বাগানে উরাং জাতীয় আঞ্চলিক মহাসম্মেলন-২০২৩ গত রোববার সন্ধ্যায় সম্পন্ন হয়েছে। এতে সারাদেশের প্রায় দুই সহস্রাধিক উরাং জনগোষ্ঠীর লোকজন অংশগ্রহণ করেন।
উরাং ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষা কমিটি, মৌলভীবাজার এর আয়োজনে গত শুক্রবার দুপুরে সম্মেলনে রহিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ বদরুলের সভাপতিত্বে ও পুরণ উরাং এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রামভজন কৈরী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিলকিস বেগম, ইউপি সদস্য ধনা বাউরী, মৃর্ত্তিঙ্গা চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি মন্টু অলমিক, সাধারণ সম্পাদক অনন্ত উরাং(মনুলাল)।
সম্মেলনের ২য় দিন শনিবার পুরণ উরাং এর সভাপতিত্বে ও পুরণ কুজুরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনসংযোগ বিশেষজ্ঞ, ভাষাবিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ ড. সেলু বাসিত। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লেখক-গবেষক আহমদ সিরাজ, অধ্যাপক-কবি শাহজান মানিক, প্রভাষক দীপংকর শীল, মণিপুরি ললিতকলা একাডেমির গবেষণা কর্মকর্তা প্রভাস সিংহ, চা শ্রমিক নেতা সীতারাম বীন, স্বপন রেজা, হরেন্দ্র উরাং, কপিল উরাং, সত্যবান উরাং, শংকর উরাং, সাতলাল উরাং।
সম্মেলনের ৩য় দিন রোববার দয়াল উরাং এর সভাপডিতত্বে ও মিঠুন উরাং এর সঞ্চালনায় মনোজ্ঞ নাচ-গানের মধ্য দিয়ে সম্মেলন আয়োজনের সমাপনী ঘোষিত হয়।
প্রতিদিন অনুষ্ঠান শেষে উরাংদের ঐতিহ্যবাহী নাচ, গান পরিবেশিত হয়। উরাং জাতীয় মহাসম্মেলন উপলক্ষে উরাং জনগোষ্ঠীর কুরুখ ভাষা ও অভিধান এর একটি বুকস্টল ছিল। এতে অর্ধশতাধিক কপি বিক্রয় হয়। তিনদিনব্যাপী এ মহাসম্মেলনে উরাং জনগোষ্ঠী নিয়ে গবেষণামূলক কাজ করায় তাদের মধ্যে আত্মজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। সম্মেলন থেকে অবিলম্বে উরাং জনগোষ্ঠীর জন্য সরকারিভাবে একটি কালচারাল একাডেমি স্থাপনের দাবী জানানো হয়।
উল্লেখ্য, ভাষা বিজ্ঞানী ড. সেলু বাসিতের নির্দেশনায় ও কমলগঞ্জ সরকারি গণ মহাবিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রভাষক দীপংকর শীলের রচনায় ‘কুরুখ ভাষা শেখার প্রথম পাঠ’ বইকে কেন্দ্র করে প্রতিষ্ঠিত “কুরুখ ভাষা শিক্ষা কেন্দ্র” গত শনিবার সরেজিমন পরিদর্শন করেন ভাষা বিজ্ঞানী ড. সেলু বাসিত, আহমদ সিরাজ ও দীপংকর শীল। বামনটিলায় ৩০জন উরাং শিশু-কিশোর তাদের মাতৃভাষায় পাঠ শোনায়। বাংলাদেশে সম্ভবত তাদের মৌখিক ভাষায় এই প্রথম “কুরুখ ভাষা শিক্ষা কেন্দ্র” চালু হলো।