শ্রীমঙ্গল উপজেলার তৃনমুল পর্যায়ের খেটে খাওয়া মানুষ, বিশেষ করে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জীবনযাপন মান উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও উন্নয়ন বাস্তবায়নের পাশাপাশি তাদের সুখদুঃখ ভাগাভাগি করে নিতে নিয়মিত পরিদর্শনে ব্যস্ত সময় কাটান শ্রীমঙ্গলের সুযোগ্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন।
এমনই মানবিক সদিচ্ছা সম্পন্ন মূল্যবোধের এই কর্মকর্তা রাজিব মাহমুদ মিঠুন আলাপ করতে গেলে বলেন- ‘মূলত, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা(এসডিজি), যেখানে সকলকে নিয়ে অংশীদারীত্বমূলক উন্নয়ন, মানে সকলকে একসাথে নিয়েই উন্নয়নের পদযাত্রায় বাংলাদেশ। এই সকলের মধ্যেতো আমাদের সকল মানুষ আছে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষকে নিয়ে যদি আমরা একসাথে না এগিয়ে যাই, তাহলেতো বাংলাদেশের উন্নয়ন হবেনা।’
ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন- ‘শ্রীমঙ্গলের উন্নয়নের একটা বড় অংশ, আমাদের নৃ-গোষ্ঠিরা। তাদের একটি বৈচিত্রময় ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি আছে। সেই ক্ষুদ নৃ-গোষ্ঠিদের শিশুদেরকে যদি আমরা সঠিকভাবে পরিচর্যা করতে পারি, তাহলেই আমরা তাদেরকে ২০৪১এর বাংলাদেশের সু-নাগরিক হিসাবে গড়ে তুলতে পারবো। তাহলে অবশ্যই তারা বাংলাদেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।’
|
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি আরো জানান, সরকারের এই মূহুর্তে নানা ধরনের উদ্যোগ বা উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে সরকার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি জনগনের মাঝে একক গৃহনির্মাণ অব্যাহত রেখেছে। তাদের শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য শিক্ষা বৃত্তি চালু হয়েছে। বিশেষ করে তাদের যে কন্যা সন্তান রয়েছে, নৃ-গোষ্ঠি জনগনের শিক্ষার্থীদের যাতায়াত সুবিধার জন্য বাই-সাইকেলও বিতরণ করা হচ্ছে। এগুলো বিতরণের পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আমাদের কাছে আরও তালিকা চাওয়া হয়েছে। আমরা পূনরায় তালিকা প্রেরণ করেছি। এগুলো আসলেই আমরা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ছাত্রীদের কাছে পৌছে দিব।
নান্দনিক জীববৈচিত্রের কথা এনে তিনি আরো বলেন- প্রকৃতির আশীর্ব্বাদ এই শ্রীমঙ্গল যেহেতু একটি বৈচিত্রময় উপজেলা, এ উপজেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠিদের পর্যটনেও বড় ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। আমি সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছি। আমি আমার চেষ্টা চালিয়ে যাবো, যতদিন আমি দায়িত্বে আছি।
নিয়মিত পরিদর্শনের অংশ হিসেবে গতকাল ২০ আগস্ট রোববার তিনি পরিদর্শনে যান শ্রীমঙ্গলের খাসি উপজাতি অধ্যুষিত পাহাড়ি এলাকা ৬নং হোসনাবাদ খাসিয়া পুঞ্জিতে। খাসি উপজাতি অধ্যুষিত পাহাড়ি এসব এলাকা একসময় ছিল জনপদ থেকে বিচ্ছিন্ন। দূর্গম এসব এলাকার পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জীবনমান যেমন ছিল নিম্নমুখী, তেমনী যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল দূর্ভোগে নিমজ্জিত। বিশেষ করে শিক্ষা ব্যবস্থায় খাসি জনগোষ্ঠী ছিল সব থেকে পিছিয়ে। বর্তমান সরকারের বিভিন্ন মাত্রার উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে এইসব জনপদে। ফলে উন্নয়নের এমন বৈচিত্রপূর্ণ মাত্রায় জীবনযাত্রা পাল্টে যাচ্ছে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর যা স্পষ্টতঃই দৃশ্যমান। আর এসব উন্নয়নে হাতে কলমে কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
এসব এলাকা পরিদর্শনে ব্যস্ত সময় কাটান এই নির্বাহী কর্মকর্তা। এদিন তিনি প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেওয়া দুটি ঘর পরিদর্শন করেন। তার সফর সঙ্গি ছিলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ ইউসুফ হোসেন খান।
এসময় তিনি ৬নং হোসনাবাদ খাসিয়া পুঞ্জির পুঞ্জি প্রধান ওয়েল সুরং এর হাতে তুলে দেন স্কুলের শিক্ষার্থীর জন্য অক্ষরবিন্যাস খেলার সামগ্রী ও পুঞ্জিতে বসবাসরত যুবদের জন্য ফুটবল এবং পুঞ্জির কোমলমতি শিশুদের জন্য উপহার সামগ্রী।