কোটাবিরুধী ছাত্র আন্দোলন কি রূপ নিতে যাচ্ছে?
এ পর্যন্ত ১০৫জনের মৃত্যু
রাস্তায় ট্যাঙ্ক নিয়ে পাহাড়ায় সেনাবাহিনী
অবশেষে বাংলাদেশে নামানো হলো সামরিক বাহিনী। সরকার কার্ফু জারি করে সেনা নামিয়েছে রাস্তায়। ফলে শনিবার ঢাকার রাজপথে নেমে এসেছে ট্যাঙ্ক নিয়ে সেনাবাহিনী। এখন ঢাকা পাহাড়া দিচ্ছে সেনাবাহিনী। চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে জন্ম নেয়া সহিংসতায় এ অবধি ১০৫জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানাগেছে দেশি-বিদেশি সংবাদমাধ্যম থেকে৷
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও ঢাকায় যোগাযোগ করে এখন পর্যন্ত যা জানা গেছে তা’তে বুঝা যাচ্ছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে পুলিশ ও সরকার দলীয় সমর্থকদের সঙ্গে প্রতিবাদকারীদের তীব্র সহিংসতার মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে ইন্টারনেট, টেলিফোন এবং সংবাদ আদান-প্রদান সেবা প্রায় বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর ঢাকা থেকে প্রকাশিত কোন সংবাদমাধ্যমই নতুন কোনো তথ্য প্রকাশ করছে না৷
বিবিসি বাংলা এক প্রতিবেদনে লিখেছে যে, গত চারদিনের সহিংসতায় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে ঢাকা থেকে প্রকাশিত পত্রিকাগুলোর প্রিন্ট সংখ্যায় উল্লেখ করেছে। এ নিয়ে গত তিন দিনে নিহত হয়েছে ১০৩ জন৷
শুক্রবার অন্তত ৬৬ জনের মৃত্যুর খবর নিয়ে শিরোনাম করেছে ডেইলি স্টার উল্লেখ করে লিখেছে বিবিসি বাংলা৷
আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা এএফপি এবং রয়টার্স আলাদাভাবে গত কয়েকদিনে সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা অন্তত ১০৫ বলে লিখেছে৷
ডয়েচে ভেলে এ আন্দোলনকে “স্মরণকালের সবচেয়ে সহিংস আন্দোলন” আখ্যায়িত করে লিখেছে-“বাংলাদেশে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় এবং প্রচলিত টেলিফোন নেটওয়ার্কে বিদেশ থেকে সংযোগ পাওয়া দুরূহ হয়ে উঠেছে।
ঢাকা প্রতিনিধির বরাত দিয়ে ডয়েচে ভেলে আরো লিখেছে যে, গত কয়েকদিনে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এরকম পরিস্থিতি আগে দেখা যায়নি। ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগের লগি বৈঠার আন্দোলন, ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলামের শাপলা চত্বরের আন্দোলন, এসব আন্দোলন ছিল নির্দিষ্ট এলাকায়৷ কিন্তু এ আন্দোলনের বিস্তৃতি এবং সহিংসতা, এরকম পরিস্থিতি আগে কখনো দেখা যায়নি৷
গতমাসে হাইকোর্ট এক রায়ে কোটা বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল করে দিলে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা৷ ২০১৮ সালেও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর কোটা বাতিল হয়েছিল৷ এবার শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সরকারের তরফ থেকে কঠোর মনোভাব দেখানো হলে আন্দোলন সহিংস হয়ে ওঠে এবং দ্রুতই পরিস্থিতির অবনতি ঘটে৷”
“সুনসান ঢাকার রাস্তায় টহল দিচ্ছে সেনা, বন্ধ ইন্টারনেট, কেমন আছে বাংলাদেশ? কার্ফু চলবে আর কত দিন? “মেঘালয় সীমান্ত পেরিয়ে ফিরলেন ৪০০ পড়ুয়া” এবং “অশান্ত বাংলাদেশে আটকে রয়েছেন কত জন ভারতীয়” এমনটি লিখে বিরাট সংবাদ প্রকাশ করেছে আনন্দবাজার পত্রিকা।
উল্লেখ প্রয়োজন যে, এর আগে সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে দেয়া এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুপ্রিম কোর্টের এ সংক্রান্ত নির্দেশনার জন্য অপেক্ষা করতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান৷ তিনি সবক’টি হত্যাকাণ্ডের বিচার করা হবে বলেও বলেছিলেন৷ প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের পর কোটা আন্দোলনে সহিংসতার ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনও গঠন করা হয়েছে৷ এরপরও আন্দোলন আরো বিস্তৃতিলাভ করেছে।
পরিণতিতে আন্দোলনের রূপ কি হবে এমন জিজ্ঞাসা থেকে পরিচিত বেশ কিছু রাজনৈতিক নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব সঠিক কোন রূপ দেখাতে পারেননি।