লন্ডন: বৃহস্পতিবার, ১৯শে মাঘ ১৪২৩।। ফল খেয়ে মানু লিচু আর আখি দুই দেশের একই স্বাদের ভিন্ন দুই ফল। ভারত ও আমেরিকান বিজ্ঞানীগন বলেছেন এক অজ্ঞাত পীড়ায় উত্তর ভারতে প্রতি বছর শ’তাধিক শিশুর মৃত্যু ঘটে চলেছে। আর এ মৃত্যু ঘটছে খালি পেটে লিচু খাবার পর। প্রায় দু’দশক ধরে ভারতের বিহার রাজ্যে এ শিশুমৃত্যু ঘটেই চলেছে। খালি পেটে লিচু খাবার পর শিশুরা হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। আর ডাক্তারদের হতবুদ্ধি করে দিয়ে এদের প্রায় অর্ধেকই মারা গিয়েছে।
মেডিকেল জার্নাল “লেনচেট” এ নিয়ে গবেষণার ফলাফল প্রকাশ হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে ফলের বিষক্রিয়ায়ই এ মৃত্যু ঘটছে।
ওই জার্নালে বলা হয়েছে যে মৃত্যুর শিকার ওই শিশুরা মূলত ভারতের প্রধান লিচু উৎপাদনকারী এলাকার গরীব পরিবারের মানুষ। এরা লিচু বাগানের নিচে পরে থাকা নষ্ট হয়ে যাওয়া লিচু বা অন্যান্য ফলমূল খাওয়াই এই অপমৃত্যুর কারণ। জার্নালে ব্যাখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে যে, লিচুতে বিশেষ প্রকারের জৈব বিষ রয়েছে যা মানব শরীরে “গ্লুকোজ” উৎপাদনের ক্ষমতাকে দমিয়ে রাখে। এসব শিশুদের আত্মঘাতি ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়ায় এ জন্যে যে এরা রাতে খেতে পায় না, অভুক্ত শরীরে এমনিতেই এদের ‘ব্লাড সুগার’ কমে যায় আর এই সাথে যখন ‘গ্লুকোজ’ উৎপাদনে বাধাদানকারী ফল পেটে যায় তখন ‘ব্লাড সুগার’ শূন্য হয়ে তাদের মৃত্যু ঘটে।
“লেনচেট” জার্নালে আরো বিবরণ দিয়ে বলা হয়েছে যে ওইসব শিশুরা অভুক্ত থাকার কারণে রাতে কুঁকিয়ে উঠে ‘গ্লুকোজ’ অভাবে শরীরের মাংসপেশীর আলোড়নে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞানী ডাক্তারগন গবেষণায় কেরাবিয়ান শিশুদের মধ্যে অনুরূপ ব্যাধি লক্ষ্য করেছেন। সেখানে অবশ্য লিচু নয় “আখি” নামক একটি ফল এ জন্য দায়ী। ওই ফলেও লিচুর মত “হাইপোগ্লিসিন” (Hypoglycin) “টক্সিন” (Toxin) থাকে যা শরীরের “ব্লাড সুগার” কমিয়ে দেয়।
ডাক্তারগন মা-বাবাদের পরামর্শ দিয়েছেন শিশুদের রাতের খাবার নিশ্চিত করতে এবং অতিরিক্ত লিচু বা ওই জাতীয় ফল কম খাবার দিকে নজর রাখতে। [বিবিসি অবলম্বনে)