লন্ডন: বৃহস্পতিবার, ২৯শে অগ্রহায়ণ ১৪২৩।। পাকি হায়েনারা ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর সারা বাংলাদেশ জুড়ে কয়েকশো বুদ্ধিজীবী, লেখক, শিল্পীকে হত্যা করেছিল। সেই থেকে ১৪ই ডিসেম্বর প্রতি বছর বাংলাদেশ শহিদ-বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করে আসছে।
একই নমুনায় মৌলবাদী পাকি-সরকারের নির্যাতন, নিপিড়ন আর দমনমূলক অভিযান এখন চলছে দারীদ্রপীড়িত বেলুচিস্তানে। আজ থেকে ৪৫ বছর আগে ঠিক যেভাবে ওই পাকি হায়েনারা বাংলাদেশের নিরীহ মানুষের উপর তাদের পৈশাচিক বর্বরতা চালিয়েছিল। এখন শুরু করেছে বালুচদের হত্যা। আর তাই বেলুচিস্তান এখন ফুঁসছে।
এবারের শহিদ-বুদ্ধিজীবীদিবসে বালুচ নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সেই আমন্ত্রণেই তারা ঢাকায় এসে তাদের বক্তব্যে সহায়তার আহ্বান জানিয়ে গেলেন বাংলাদেশের কাছে। এমন খবর ছেপেছে আনন্দবাজার পত্রিকা।
আনন্দবাজার লিখেছে, এ বার স্বাধীন বালুচিস্তানের দাবি উঠল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বাংলাদেশ সরকার যাতে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বালুচদের স্বাধীনতার যুদ্ধে সমর্থন জানায় সে কথাও উঠল শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসে। দাবি তুললেন দুই বালুচ নেতা ‘কালাত-এর খান’ মির সুলেমান দাউদ জান আহমেদজাই এবং মুনির মেঙ্গল। যাঁরা ফ্রান্স এবং ব্রিটেন থেকে ঢাকা এসে গণহত্যা বিরোধী এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণহত্যা বিষয়ক চর্চা কেন্দ্রের আমন্ত্রণে তাঁরা বাংলাদেশে এসেছেন। বাংলাদেশের মাটিতে বালুচ আন্দোলন প্রসঙ্গ তোলার এটিই প্রথম ঘটনা।
প্রতি বছরই গণহত্যা-বিরোধী প্রচারের জন্য দেশ জুড়ে অনুষ্ঠান হয়। এ বার বালুচ নেতাদের আগমনে শহিদ-বুদ্ধিজীবী দিবসের অনুষ্ঠান ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আশফাক হোসেন এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক শেখ সামস মোরসালিনও সম্মেলনে বাংলাদেশ ও বালুচিস্তানের গণহত্যা প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখেন।
বালুচিস্তানের সবচেয়ে বড় প্রদেশ কালাতের অন্যতম নেতা আহমেদজাই এবং মুনির মেঙ্গল সম্মেলনে বলেন, ‘‘পাকিস্তানি সেনা বালুচিস্তানে ক্রমাগত গণহত্যা চালাচ্ছে। হাজার হাজার বালুচ গত কয়েক বছরে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন। বাংলাদেশে যে গণহত্যা চালিয়েছিল তারা সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে বালুচিস্তানে।’’ দুই নেতা বাংলাদেশ সরকারের কাছেও আন্তর্জাতিক মঞ্চে তাঁদের পক্ষে দাঁড়ানোর জন্যও আবেদন জানান। রাষ্ট্রসঙ্ঘে বালুচিস্তানের মানবাধিকার প্রসঙ্গ তোলা তাঁদের পক্ষে সম্ভব হয় না। তাই বাংলাদেশ যাতে বালুচিস্তানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রসঙ্গ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে সরব হয়, সেই অনুরোধও করেন তাঁরা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতিও নিজেদের কৃতজ্ঞতার কথা জানান আহমেদজাই এবং মুনির মেঙ্গল।
ভারতেও তারা বিভিন্ন শহরে গিয়ে পাক সেনার অত্যাচারের কাহিনি তুলে ধরেছেন। ঢাকা থেকেই দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলিতেও তা শুরু হল বলে মনে করা হচ্ছে।