লন্ডন: শবেবরাত। মুসলিম সম্প্রদায়ের সৌভাগ্যের রজনী। ক্ষিন বিতর্ক থাকলেও দুনিয়ার বেশীর ভাগ মুসলমান এ রাতকে মহিমাময় সৌভাগ্যের রজনী বলে বিশ্বাস করেন। মুসলমানদের বিশ্বাস, মহিমাময় এই রাতে মহান স্রষ্টা মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ করে থাকেন। তারা আরো বিশ্বাস করেন, এ রাতে স্রষ্টা দুনিয়ার সকল মানুষের সারা বছরের প্রয়োজনীয় সবকিছুর চাহিদামত পরিমাণ ঠিক করে নেন। ফলে, রাতব্যাপী বন্ধনা, প্রার্থনা ও সুরদিয়ে স্রষ্টাকে ডাকা ছাড়াও এই পবিত্র রাতে মুসলমানগণ মৃত পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনসহ প্রিয়জনদের কবর দর্শন করে থাকেন। তাই এ রাতে কবরস্থান গুলোও মানুষের প্রার্থনায় কেমন জাগ্রত হয়ে উঠে। কেউ কেউ কবরের কোনায়, হারানো প্রিয়জনের প্রতি বেদনাবিধুর মনের আগেব মমতা আর মায়াময় হৃদয়ের ডাকে মনের আকুতি মিশানো প্রদীপ জ্বালিয়ে ক্ষনিকের জন্য হলেও অন্ধকার দূর করে দেয়ার অনুভুতি প্রকাশ করেন।
আজ রাতে সারা বৃটেনের মুসলমান সম্প্রদায় এ রাতকে ঘিরে মনের গভীর থেকে মসজিদে মসজিদে প্রার্থনানুষ্ঠানে যোগ দেবেন। অনেকেই গভীর রাত পর্যন্ত নিজেদের ঘরে নামাজের মধ্যদিয়ে রাত কাটাবে।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে উদযাপিত হবে বাংলাদেশসহ বিশ্বের আরো বহু দেশে। এ রাতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বহুদেশের কোটি কোটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা মহান স্রষ্টার দয়া, ক্ষমা ও নৈকট্য লাভের আশায় বাড়তি নামাজ পড়ে থাকেন। কোরআন পাঠ করা থেকে শুরু করে রাতব্যাপী বন্ধনা, প্রার্থনা ও সুরদিয়ে স্রষ্টাকে ডাকা ছাড়াও মিলাদ মাহফিলসহ বিভিন্ন নমুনায় প্রার্থনার মধ্য দিয়ে এই রাতটি অতিবাহিত করবেন। মুসলমানদের কাছে মহিমান্বিত এ রজনীতে দুনিয়ার মুসলমানের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশ্বের মুসলমানগণ বিশেষ প্রার্থনা করে করবেন।
সৌভাগ্যের এ রজনীতে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নারী-পুরুষ-শিশু-বৃদ্ধসহ সর্বস্তরের মুসলমানগণ কোরআন তেলাওয়াত, বাড়তি নামাজ ও বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে মহান সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য প্রার্থনা ও বন্ধনায় মশগুল থাকবেন। এ উপলক্ষে ধর্মপ্রাণ নারী-পুরুষরা বাড়তি রোজাও রাখবেন।
বাসসের খবরে জানা গেছে মহিমান্বিত এ রজনী ভাবগম্ভীর পরিবেশের মধ্য দিয়ে পালনের লক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে- ওয়াজ মাহফিল, কোরআন তেলাওয়াত, মিলাদ মাহফিল, হামদ্, না’ত, নফল ও তাহাজ্জুদের নামাজ এবং আখেরী মোনাজাত। পবিত্র এ রাতে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সকল মসজিদ সারা রাত খোলা থাকবে। এ রাতের বিশেষ অনুষঙ্গ কবর জিয়ারতের পাশাপাশি মুসল্লিদের ব্যাপক উপস্থিতিতে মসজিদে মসজিদে এশার নামাজের পর থেকেই দফায় দফায় ওয়াজ মাহফিল, জিকির ও মিলাদের পর ফজর শেষে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর জন্য আল্লাহর রহমত কামনায় মোনাজাতের মধ্য দিয়ে পবিত্র লাইলাতুল বরাতের সমাপ্তি হবে।