মুক্তকথা:
৩১শে মে: ১টা ৫২মি:
প্রায় শতবর্ষ আগের কথা। ছোটবেলায় শুনেছি পরে পড়তে গিয়েও পেয়েছি। বৃটেন, গণতন্ত্রের সূতিকাগার। সময়ের স্তরে স্তরে বৃটেনও তার সেই ঐতিহ্য আর গৌরবের ইতিকথা বিশ্ববাসীর কাছে জানান দিয়ে গেছে সময়ে সময়ে। আজও সেই ভাবধারা থেকে বৃটেন একপা’ও পেছুয়নি। সুদীর্ঘদিনের অনুশীলন আর পরিচর্যায় সমুদয় না হলেও একটি বিশাল অংশের মানুষকে ওরা সুশীল ভাবধারায় গড়ে তুলতে পেরেছে। সক্ষম হয়েছে মানুষের মনে ভিন্ন মানুষের প্রতি, ভিন্ন মতের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জাগাতে। আর সে কথারই স্বার্থক উচ্চারণ হল আর একবার।
চমক দেখালেন দুই নেতা। কেমেরোন ও সাদিক খান একই মঞ্চে কথা বললেন। বিভিন্ন চিন্তা থেকেই এরা দুই ভিন্ন মেরুর মানুষ। একজন প্রধানমন্ত্রী অন্যজন একটি নগর কমিটির প্রধান। একজন রক্ষণশীলদলীয় অপরজন শ্রমিক দলীয়। একজন খোদ বৃটিশ তো আরেকজন পাকিস্তানী বংশোদ্ভুত বৃটিশ। কিন্তু হলে কি হবে, হোক না দুই মেরুর বা দুই ভাষার কিংবা ভিন্ন ধর্মের। দেশীয় চিন্তায় স্বার্থ দু’জনেরই এক। জাতের চেয়ে দেশ বড়। দলের চেয়ে দেশ অনেক বড়।
তাই, ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) থাকার পক্ষে ভোট দিতে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড কেমেরোনের সঙ্গে প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খান। গতকাল সোমবার তারা লন্ডনে যৌথভাবে একটি শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন। রক্ষণশীল দলের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শ্রমিক দলীয় মেয়রের এই মিত্রতা বর্তমান ব্রিটেনের রাজনীতিতে খুবই স্বাভাবিক না হলেও বিরল ঘটনা নয়। যদিও, ইইউতে থাকার পক্ষে অবস্থান নিয়েও শ্রমিক দলের নেতা জেরেমি করবিন প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরনের সঙ্গে প্রচারণা চালাতে চাননি।
সাদেক খান অবশ্য খোলামেলাই বলেছেন যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রকাশ্যে প্রচারণার সিদ্ধান্তটি লন্ডনের স্বার্থেই নেয়া হয়েছে। তিনি বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকার এই বিতর্কটি ডেভিড কেমেরোন এবং আমার চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমাদের শহর এবং দেশের ভবিষ্যত নিয়ে বিষয়।
সব কথার শেষ কথা, এখানে যেমন প্রধানমন্ত্রী বা কেমেরোন কোন বিষয় নয় ঠিক তেমনি মেয়র বা শ্রমিকদলীয় নেতা কোন বিষয় নয়। এই হল বৃটিশ রাজনীতির ঐতিহ্য। বৃটেনের গণতন্ত্রের সৌন্দর্য্য।