মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। রোববার(২ জানুয়ারী) রাত সাড়ে ১০টার দিকে কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সিবাজার এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
এ ঘটনায় সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ অক্ষত থাকলেও উভয় পক্ষের সংঘর্ষে এমপির গানম্যান, ব্যক্তিগত একান্ত সহকারী(এপিএস), গাড়িচালকসহ আনুমানিক ২০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ মোঃ আব্দুস শহীদ এমপি গাড়ি বহর নিয়ে মুন্সিবাজার এলাকায় নৌকা প্রার্থী ইফতেকার আহমদ বদরুল এর নির্বাচনী কার্যালয়ে পৌছান। এসময় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রহিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি জুনেল আহমদ তরফদার (ঘোড়া প্রতীক) এর সমর্থকরা মোবাইল ফোন দিয়ে ছবি উঠাতে থাকে। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হন। গুরুতর আহতরা মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল ও সিলেট এম.এ.জি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
রোববার রাত ১০টায় কমলগঞ্জ উপজেলার ১নং রহিমপুর ইউনিয়নের মুন্সীবাজারে এই ঘটনা ঘটে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নৌকার প্রধান নির্বাচনী কার্যালয় ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জুনেল আহমদ তরফদার ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে এলাকায় এখনও উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে জানা গেছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এ ঘটনায় রহিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ বদরুল বাদী হয়ে ৪০ জনকে আসামি করে কমলগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ এ ঘটনায় রহিমপুর ইউনিয়নের ছয়কুট গ্রামের রাসেল মিয়া (২২) ও প্রতাপী গ্রামের ওয়াহিদ মিয়াকে (২৬) আটক করেছে।
উল্লেখ্য, রহিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্থানীয় সংসদ সদস্য, সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদের ছোট ভাই বর্তমান চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ বদরুল নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। অপর চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও সদ্য বহিষ্কৃত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জুনেল আহমেদ তরফদার।
হামলায় আব্দুস শহীদ এমপি নিরাপদ থাকলেও তাঁর গানম্যান তরিকুল, গাড়িচালক স্বপন, ব্যক্তিগত একান্ত সহকারী ইমাম হোসেন সোহেল, শ্রীমঙ্গলে আওয়ামী লীগ নেতা খালেদ সাইফুলাহসহ সাতজন আহত হন। তাদের মধ্যে গানম্যান তরিকুল ও ব্যক্তিগত একান্ত সহকারী ইমাম হোসেন সোহেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। ঘটনার পর পুলিশ এসে আব্দুস শহীদ এমপিকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়।
কমলগঞ্জ থানার ওসি ইয়ারদৌস হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় কমলগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয়েছে। পুলিশ দুইজন আসামিকে আটক করেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) সোহেল রানা ঘটনার সত্যত্য স্বীকার করে জানান, হামলায় আহতদের মধ্যে রয়েছেন উপাধ্যক্ষ মোঃ আব্দুস শহীদ এমপির ব্যক্তিগত এপিএস সোহেল আহমদ ও গানম্যান তারেকুল ইসলাম।
এদিকে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত আটজন আহত হয়েছেন। গত শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) রাতে শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশ্রিদ্রোণ ইউনিয়নের ৫নং ওর্য়াডের শিববাড়ি বাজারে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।