বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড(বাপাউবো) মৌলভীবাজারের ৩টি উপজেলায় ৯শ ৯৬ কোটি ২৮ লাখ টাকার ৬০ টি প্যাকেজ দরপত্র আহবান করলেও অনেক যায়গায় এখনো অসম্পুর্ণ রয়েছে এসব কাজগুলো। নদী থেকে মানব বসতি ও কৃষি জমি রক্ষা ও আবাদে কৃষি ক্ষেত চালু করতে এসব কার্যক্রম গেল ২০২০ সালের জুলাই মাসে শুরু হয়। এটি শেষ হবার কথা রয়েছে আগামী ২০২৩ সালের জুন মাসে। রোববার এ প্রতিবেদককে পাউবো জানায়, ৬০টি প্যাকেজের মধ্যে ৬টি এখনো খোলা হয়নি। এটি টেন্ডার লাইভে রয়েছে। এগুলোর মধ্যে আরো ৫টি প্যাকেজের মূল্যায়ন চলছে। ঠিকাদাররা মুভ করছেন আরো ৯টি প্যাকেজের। বর্তমানে ৪০টি প্যাকেজের কাজ এক যোগে চলছে সদর, রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলায়।
কিভাবে চলছে এসব কাজ কিংবা কাজের ধরণ কেমন এমন প্রশ্নের জবাবে পাউবো কর্তৃপক্ষ জানায়, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মমরাছপুর, ঢেউপাশা, সম্পাসী, নোয়ারাই, পাগুরীয়া ও মীরপুর ও রাজনগর উপজেলার মনু নদী তীরবর্তী কামারচাক বাজার, শ্বাসমহল, তারাপাশা, একামধু, প্রেমনগর ও খাস প্রেমনগরসহ আরো বেশ কয়েকটি জায়গায় ভূমি অধিগ্রহণের প্রস্তাবনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড দাখিল করেছে। জমি অধিগ্রহণের জন্য ইতিমধ্যে রাজনগর উপজেলায় নদীর তীরবর্তী এলাকায় ৪ ধারা নোটিশ প্রেরণ করা হয়েছে।
পাউবো আরো জানায়, মনু নদী’র দুটি বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ রয়েছে। এদের মধ্যে একটি প্রাথমিক আরেকটি দ্বিতীয় পর্বের। প্রাইমারি বাঁধ নদী’র পাড় থেকে অনেক দূরে রাখা হয়েছে। আর সেকেন্ডারি বাঁধ নদী’র পাড় ঘেঁষে বসানো হয়েছে। এছাড়াও কুলাউড়া উপজেলায় চর অপসারণ, নদী তীর সংরক্ষণ ও বাঁধ পূণঃনির্মাণের কাজ চলছে। সব মিলিয়ে চলমান কাজের মধ্যে রয়েছে চর কাটা, বড় প্রতিরক্ষা বাঁধ, ‘জিও ব্যাগ’, ব্লক ও বন্যা দেয়াল। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মনু নদী পাড়ের একাধিক ব্যক্তি জানান, চর কাটা, ‘জিও ব্যাগ’ ও পাথর-সিমেন্টের চাকতি বানানোর কাজ নদী থেকে বসতি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু ঠিকাদারগণ সুষ্ক মৌসুমে কাজে ফাঁকি দিয়ে বর্ষা মৌসুমে কাজ করতে মনোযোগী হন। এতে কাজের ব্যাপক ঘাটতি দেখা দেয়। এছাড়াও অনেক যায়গায় দেখা গেছে, জিও ব্যাগের কাজ শেষ হবার এক সপ্তাহের মাথায় পাড় ভেঙ্গে নদীতে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সদর উপজেলার দ্বায়িত্বরত এক কর্মকর্তা জানান, এই উপজেলায় ৮টি প্যাকেজে ৪ জন ঠিকাদার প্রায় ৬ কোটি টাকার কাজ করছেন। কাজের ধরণ গুলো সঠিক ভাবে সম্পন্ন হচ্ছে কি না কিংবা ঠিকাদারের কাছ থেকে কিভাবে নদী রক্ষার এসব কাজ বুঝিয়ে নিচ্ছে পাউবো এমন প্রশ্নে মৌলভীবাজার পাউবোর নির্বাহি প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান বলেন, চর কাটিং, জিও ব্যাগ, ব্লক ও বাঁধ তৈরির কাজে প্রতিনিয়ত মনিটরিং করা হচ্ছে। এখানে কাজে ফাঁকি দেবার কোন সুযোগ নেই। ২০২০ সালে শুরু হওয়া প্যাকেজগুলো আশা রাখছি ২০২৩ সালে সমাপ্তি হবে।